—প্রতীকী চিত্র।
পিছন থেকে ‘খারাপ স্পর্শে’ শিউরে উঠেছিলেন কলেজছাত্রীটি। প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়ে থাপ্পড় কষিয়েছিলেন অভিযুক্ত তরুণকে। তার পরে ওই ছাত্রী এবং তাঁর স্কুলপড়ুয়া বোনকে প্রকাশ্য রাস্তায় দীর্ঘ সময় ধরে মারধর করে অভিযুক্ত। ভিড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেই ঘটনা দেখলেন অনেকেই। চিৎকার করেও সাহায্য মিলল না। ঘটনাস্থল, ঘোলা থানার রাজেন্দ্রনগর।
শেষ পর্যন্ত এক যুবক এগিয়ে এসে তাঁদের পাশে দাঁড়ান। তিনি অভিযুক্তকে প্রত্যাঘাত করলে পিছু হটে সে। নিগৃহীতা ছাত্রীটি সোমবার রাতেই ঘোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও অভিযুক্তের নাগাল পায়নি পুলিশ। ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। ভর সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে এমন ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দা বহু কিশোরী-তরুণী। এত লোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখেও দুই বোনের সাহায্যে এগিয়ে না আসায় হতাশ এলাকার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশই।
কী ঘটেছিল? কলেজপড়ুয়া ওই ছাত্রী জানান, সোমবার রাতে তিনি বোনকে নিয়ে দু’টি সাইকেলে করে পোশাক কিনতে বেরিয়েছিলেন। ফেরার পথে রাজেন্দ্রনগরের গলি থেকে বড় রাস্তায় আসার পরেই তাঁরা এক তরুণকে রাস্তায় সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। অভিযোগ, সে ফোনে কথা বলতে বলতেই দুই বোনের পিছু নেয়। কলেজছাত্রীর কথায়, “কিছু ক্ষণ পরেই ছেলেটি পিছন থেকে বাজে ভাবে স্পর্শ করে। আমি সাইকেল থামিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলি, কেন আমার গায়ে হাত দিলি? তাতে সে বিচ্ছিরি ভাবে হাসে। সঙ্গে সঙ্গে ওকে চড় মারি। তার পরেই ও আমাকে ঘুষি মারে। বোন আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ওর চুল টেনে ছিঁড়ে দেয়। আমরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করি। অনেকেই দেখছিল। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। তখন ভয় করছিল।”
অভিযোগকারিণীর বোনের কথায়, “দিদি চড় মারার পর থেকে ওই ছেলেটা আমাদের নাগাড়ে মেরে যাচ্ছিল। এলোপাথাড়ি লাথি মারছিল। চুলের মুঠি ধরে রাস্তার এ দিক থেকে ও দিকে নিয়ে গিয়ে ফেলছিল আমাদের। রাস্তায় এবং আশপাশের বাড়ি থেকে অনেকেই দেখছিলেন। আমরা বারবার সাহায্য চাইলাম। ওঁরা হাসাহাসি করছিলেন। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি।”
কলেজছাত্রী জানান, অভিযুক্ত যুবক মত্ত অবস্থায় ছিল। তাঁদের চিৎকার শুনে এক যুবক এগিয়ে এসে রুখে দাঁড়ান। অভিযুক্ত তাঁকেও মারার চেষ্টা করে। ওই যুবক পাল্টা অভিযুক্তকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করলে সে পিছু হটে। মার খেয়ে সে দুই বোনের কাছে ক্ষমা চেয়ে সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।
বাড়ি ফিরে আত্মীয়দের ওই ঘটনার কথা জানান তাঁরা। তার পরেই বাড়ির লোকেদের নিয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় কোনও সিসি ক্যামেরা নেই বলে ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তবে সোমবার রাতেই বেশ কয়েক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। অভিযোগকারিণীর সঙ্গে কথা বলে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় পানিহাটি কলেজের প্রিন্সিপাল মুক্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ভর সন্ধ্যায় এক কলেজছাত্রীকে প্রকাশ্যে যৌন হেনস্থা করা হচ্ছে! পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করলে তবেই এ সব বন্ধ হবে। তার থেকেও যেটা উদ্বেগের, অনেকে এটা দেখেও চুপ করে রইলেন। কেউ এগিয়ে এলেন না ওদের বাঁচাতে। আগেও দেখেছি, প্রতিবাদের বদলে অনেকে মোবাইলে ছবি তুলে রাখেন। এই সামাজিক ব্যাধি কী ভাবে সারবে জানি না!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy