Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
broker

দালাল-চক্রের তদন্তে নয়া সূত্র 

ভয়েস ক্লিপে শোনা গিয়েছে, জয়িতা টাকা দিতে রাজি হননি বলে ফোনে দাবি করছেন ওই পরিচিত।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৩
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র-কাণ্ডে সামনে এল দু’টি ‘ভয়েস ক্লিপ’। কী ভাবে সরকারি হাসপাতালে কড়ি ফেলে কাজ হয়, সেখানে তা সরাসরি বলা হচ্ছে। লেনদেনের জন্য হোয়াটস‌অ্যাপে পাঠানো হচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর। ভিতরের লোক জড়িত না থাকলে এই চক্র যে চালানো সম্ভব নয়, তা-ও ওই দু’টি ভয়েস ক্লিপের কথোপকথন থেকে স্পষ্ট। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এমন চক্রকে হৃষ্টপুষ্ট করতেই কি রোগীকে পরিষেবার দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ঠেলা হয়? সরকারি হাসপাতালে রোগী-চাপের যে কথা বলা হয়, তার কি ভিত্তি নেই?

কেষ্টপুরের বাসিন্দা জয়িতা বিশ্বাসের ছেলে দেবজ্যোতি বিশ্বাস কাঁধে চোট পাওয়ায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আর জি করের অস্থি বিভাগের বহির্বিভাগে দেখাতে যান। দেবজ্যোতিকে এম‌আর‌আই করানোর পরামর্শ দেন বিভাগীয় চিকিৎসক।‌ তা করতে গিয়ে হাসপাতালে দালাল চক্রের সক্রিয়তা সামনে এসেছে বলে সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন জয়িতা। তাঁর দাবি, এক পরিচিতের মাধ্যমে জামশেদ আলম ওরফে ভাসানির সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছিল। ভাসানি আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন অরিন্দম দাস নামে এক ওয়ার্ড সুপারভাইজারের সঙ্গে। অরিন্দম ৮ ফেব্রুয়ারি দেবজ্যোতির এম‌আর‌আই করানোর ব্যবস্থা করিয়ে দেন। সে জন্য ২৭০০ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয় জয়িতাকে।

ভয়েস ক্লিপে শোনা গিয়েছে, জয়িতা টাকা দিতে রাজি হননি বলে ফোনে দাবি করছেন ওই পরিচিত। তাই জয়িতার পরিচিতকে চাপে পড়তে হয়েছে। কথোপকথনের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি ফোনে জয়িতাকে বলতে থাকেন, ‘সরকারি হাসপাতাল মানে লাইন, এক-দু’মাসের প্রতীক্ষা। বিনামূল্যে সরকারি হাসপাতালে ভিআইপি ট্রিটমেন্ট মিলবে না। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে। এটাই সিস্টেম! নিখরচায় পরিষেবা পাওয়ার আইন রয়েছে ঠিক‌ই। তাতে এক-দু’মাস দেরি হবে। তাড়াতাড়ি চাইলে বাড়তি খরচ দিতে হবে!’ অডিয়োয় শোনা গিয়েছে, অভিযুক্ত নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জয়িতাকে টাকা পাঠাতে বলছে। তাঁকে জামশেদ এ-ও বলছে, ‘ফ্রি ট্রিটমেন্ট করালে দেড় মাসের আগে হত না। ভিতরে আমাদের লোক আছে, তাদেরও তো খরচ দিতে হবে!’

ভিতরের লোক কারা? কাদের খরচ দিতে হয়? তদন্তে এগুলোই এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বৃহস্পতিবার টাকা দেওয়ার টোপ দিয়ে জামশেদকে আর জি কর ফাঁড়ির পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন জয়িতা। পুলিশের দাবি, জয়িতা প্রথমে ফাঁড়িতে অভিযোগ জানাতে চাননি। বিকেলে সুপারের অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। তার সূত্র ধরে রাতে টালা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। প্রথমেই অভিযোগকারী সহযোগিতা করলে তদন্তে সুবিধা হত বলে দাবি তাদের। জয়িতার বক্তব্য, ‘‘প্রথম বার এমন অভিজ্ঞতায় আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশও আশ্বস্ত করেনি।’’

হাসপাতালের সুপার মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তের বক্তব্য শুনেছি। অভিযোগ পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীরা যা জানাবেন, তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Hospital Brokers Investigations
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy