Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Higher Secondary Exam

পুলিশের কোলে চেপে পরীক্ষা কক্ষে

এ দিন উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা দিতে এক পরিচিতের বাইকে চেপে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে রওনা হয় সনৎ রায়চৌধুরী ইনস্টিটিউশনের ওই ছাত্র।

সহায়তা: পরীক্ষা কেন্দ্রের দুই কনস্টেবল এ ভাবেই সাহিলকে পরীক্ষা কক্ষে পৌঁছে দেন। শনিবার, বেনিয়াপুকুরে। নিজস্ব চিত্র

সহায়তা: পরীক্ষা কেন্দ্রের দুই কনস্টেবল এ ভাবেই সাহিলকে পরীক্ষা কক্ষে পৌঁছে দেন। শনিবার, বেনিয়াপুকুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০২:১৪
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিকে ইংরেজির পরীক্ষা যে শেষ পর্যন্ত সে দিতে পারবে তা বোধহয় নিজেও ভাবতে পারেনি ট্যাংরা রোডের বাসিন্দা সাহিল সরকার। পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছনোর পথে দুর্ঘটনা। জখম হয়ে রাস্তা থেকে হাসপাতালে যাওয়া। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশের গাড়িতে চেপে পরীক্ষা শুরুর আগের মুহূর্তে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কোলে চেপে পরীক্ষার হলে গিয়ে বসা। শনিবার সকাল থেকে এত কিছু ঝক্কি পোহাতে হয়েছে তাকে। তবে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা সম্পূর্ণ করে পুলিশের গাড়িতেই বাড়ি ফিরেছে সে।

এ দিন উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা দিতে এক পরিচিতের বাইকে চেপে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে রওনা হয় সনৎ রায়চৌধুরী ইনস্টিটিউশনের ওই ছাত্র। বেনিয়াপুকুরের ইসলামিয়া হায়ার সেকেন্ডারি মাল্টিপারপাস স্কুলেই ছিল তার পরীক্ষাকেন্দ্র। সকাল সাড়ে ন’টায় রাস্তার ভিড় ঠেলে তাই তাড়াতাড়ি পৌঁছতে পরীক্ষা কেন্দ্রের কিছুটা আগেই মোটরবাইক থেকে নেমে পড়ে সাহিল। ভিড় রাস্তায় ঠিক সেই সময়ে বেনিয়াপুকুর রোডে উল্টো দিক থেকে আসা একটি রিকশার সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। সাহিলের ডান পায়ের চেটোয় আঘাত লেগে রক্ত বেরোতে শুরু করে।

জখম পরীক্ষার্থীকে দেখে প্রথমে স্থানীয় লোকজনই তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে যান। সাহিলকে প্রায় চ্যাংদোলা করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। খবর পেয়ে পরীক্ষার্থীকে দেখভাল করার জন্য বেনিয়াপুকুর থানার ওসি অলোক সরকার হাসপাতালে পাঠান অতিরিক্ত ওসি লোপসান ভুটিয়া ও সার্জেন্ট রাজু হালদারকে।

পুলিশ জানায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও নার্সেরা সাহিলের প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। তার ডান পায়ের ক্ষতস্থানে ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়। পরীক্ষা শুরু হতে তখন আর সামান্য সময় বাকি ছিল। চিকিৎসার পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো সম্ভব নয় বুঝতে পেরে পুলিশের ওই দুই অফিসার সাহিলকে থানার গাড়িতে চাপিয়ে সরাসরি ইসলামিয়া হাইস্কুলে নিয়ে যান।

কিন্তু স্কুলে ঢুকে সাহিল বুঝতে পারে তিনতলার পরীক্ষা কেন্দ্রে তার পক্ষে সিঁড়ি ভেঙে ওঠা সম্ভব নয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেনিয়াপুকুর থানার দুই কনস্টেবল সাহিলকে কার্যত কোলে করে তিনতলায় উঠিয়ে পরীক্ষার ঘরে বসিয়ে দিয়ে আসেন। তার আগে অবশ্য পুলিশ সাহিলের কাছ থেকে তার ঠিকানা এবং বাবার নাম জেনে নিয়েছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে বেনিয়াপুকুর থানার ওই অফিসারেরা সাহিলের বাবা সঞ্জীব সরকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তাঁর ছেলে যে সুস্থ ভাবে পরীক্ষা দিতে বসেছে তা-ও পুলিশ সঞ্জীববাবুকে জানিয়ে দেয়। তাঁকে আশ্বস্ত করতে পুলিশ জানায়, পরীক্ষার পরে সাহিলকে তারাই বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করবে।

এ দিন সকালে ইসলামিয়া হাইস্কুলে গিয়ে দেখা যায় সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা ঘনঘন খোঁজ নিচ্ছেন সাহিলের। স্কুল কর্তৃপক্ষও খোঁজ নিচ্ছেন তার। এক পুলিশকর্মী জানান, সাহিলের পরীক্ষা দিতে কোনও অসুবিধা হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Higher Secondary Exam Police Constable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy