প্রতীকী ছবি।
ছিঁচকে চোর ভেবে দুই ভাই সাহসের সঙ্গে ধরেছিলেন এক জনকে। তাকে গ্রেফতারের পরে পুলিশ দেখল, ধৃত ব্যক্তি ডাকাতচক্রের পান্ডা। যদিও চোররূপী ডাকাতকে হাতেনাতে ধরতে গিয়ে তার ছুরির ঘায়ে ভাল রকম জখম হলেন দুই ভাই। যার জেরে দাদার পিঠে ৬০টি এবং ভাইয়ের বুকে পড়ল আটটি সেলাই। রবিবার মাঝরাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার শিবধাম মোড়ে এইচ এল সরকার রোডে।
বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ জানাচ্ছে, দুই ভাই যাকে ধরেছেন সেই জাহির শেখ ওরফে খোঁড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক বড়সড় ডাকাত। তার বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় মামলা রয়েছে। ডায়মন্ড হারবার এলাকাতেও খোঁড়া আগে ডাকাতির মামলায় জড়িত ছিল বলে দাবি পুলিশের।
শিবধাম মোড় সংলগ্ন এইচ এল সরকার রোডের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত ছ’মাস ধরে এলাকায় চুরি হচ্ছিল। থানায় অভিযোগ করা সত্ত্বেও কেউ ধরা পড়েনি। ফলে তাঁরা ঠিক করেন নিজেরাই রাতে সতর্ক থেকে চোর ধরবেন।
শিবধাম মোড়ের কাছেই নস্কর পরিবারের বাড়ি। রাতে সজাগ ছিলেন নস্কর বাড়ির দুই ছেলে সুদীপ ও তাঁর ছোট ভাই শুভঙ্কর। রাত আড়াইটে নাগাদ বাড়ির পিছনের গলিতে পড়ে থাকা একটি টিনের সঙ্গে কিছুর ধাক্কা লাগার আওয়াজ পান তাঁরা। ঘরের জানলা দিয়ে তাঁরা দেখেন, অন্ধকারে বাড়ির পিছনের পাঁচিল ধরে কেউ হাঁটছে। তা দেখেই দুই ভাই ছাদে উঠে যান। তাঁরা দেখেন ওই ব্যক্তি সামনের একটি বাড়ির গ্রিলের গেট টপকে সেখানে ঢুকছে।
এর পরে দুই ভাই টর্চ জ্বেলে বাইরে বেরোন। বিষয়টি বুঝতে পেরে চোরও একটার পর একটা বাড়ির পাঁচিল টপকে পালানো শুরু করে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বাড়ির বাসিন্দারা ‘চোর-চোর’ বলে চিৎকার শুরু করে দেন। তবে সুযোগ বুঝে চোরও লুকিয়ে পড়ে। তবে ততক্ষণে তাকে ঘিরে ফেলেন পাড়ার লোকজন। ওই দুষ্কৃতীকে ধরতে এগিয়ে যান সুদীপ ও শুভঙ্কর। অভিযোগ, তাঁরা দু’জনে সরু গলিতে যখন চোরকে ধরে ফেলেছেন, আচমকাই অভিযুক্ত জাহির শেখ একটি ছুরি বার করে এলোপাথাড়ি চালাতে শুরু করে। ছুরির আঘাতে ফালাফালা হয়ে যায় সুদীপের পিঠ। দাদাকে বাঁচাতে গেলে শুভঙ্করের বুক লক্ষ্য করে ছুরি চালায় অভিযুক্ত। তা দেখে ছুটে আসেন নস্করদের প্রতিবেশীরা। কিন্তু তত ক্ষণে ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছেন সুদীপ ও শুভঙ্কর। এর খানিক পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ চোরকে ধরে ফেলে। যদিও সোমবারই পুলিশ জানতে পারে, ধৃত জাহির শেখ ওরফে খোঁড়া কুলপি-ডায়মন্ড হারবারের ডাকাত। তার কাছ থেকে মিলেছে একাধিক চুরির মোবাইল এবং মানিব্যাগ।
সোমবার বিকেলে এলাকায় যেতেই পাড়ার লোকজন জানান, গত কয়েক মাস ধরে বাড়ির দরজা-জানলা ভিতর থেকে বন্ধ রাখার পরেও চুরি আটকানো যাচ্ছিল না। তবে চোর দুই ভাইকে ছুরি মারায় তা নিয়ে আতঙ্কিত এলাকার লোকজন। সোমবার বিকেলে নস্করদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, সুদীপ উপুড় হয়ে বিছানায় শুয়ে। পিঠ জুড়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা। শুভঙ্করের বুকের একপাশে ব্যান্ডেজ। দুষ্কৃতীদের দিক থেকে পাল্টা আঘাত আসার আশঙ্কাতেও ভুগছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy