ক্ষেপাণাস্ত্র হামলায় বিপর্যস্ত খেরসন। ছবি- টুইটার
রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনে দুই ভারতীয় কন্যাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন তাঁদের এক ইউক্রেনীয় বন্ধু। ক্ষেপাণাস্ত্র হামলায় বিপর্যস্ত খেরসনে ৫০ কিলোমিটার গাড়ি চড়ে গিয়ে ভারতীয় দুই বন্ধুকে উদ্ধার করে নিজের গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় দিলেন ইউক্রেনীয় এক কন্যা। সেখানেই গত এক সপ্তাহ ধরে রয়েছেন হরিয়ানার প্রীতি এবং গুলপ্রীত শাহ (নাম পরিবর্তিত)।
ওই দুই ভারতীয় কন্যা খেরসন স্টেট মেরিটাইম অ্যাকাডেমিতে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ২০২১-এর সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা রয়েছেন ইউক্রেনে। খেরসনে রুশ সেনা আগ্রাসনের সঙ্গে সঙ্গে দু’জনেই একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাইরে গোলাগুলির মধ্যে কোনও ভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছিলেন না। তাঁদের অবস্থার কথা শুনে ওই ইউক্রেনীয় বন্ধু এগিয়ে আসেন। নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গ্রাম থেকে আসেন খেরসন শহরে। সেখান থেকে নিজের বাড়ি নিয়ে যান দুই ভারতীয় বন্ধুকে।
ফোনে তাঁদের অবস্থার কথা শুনে ওই বন্ধু আমাদের গ্রামের বাড়িতে থাকার প্রস্তাব দেয় বলে জানান গুলপ্রীত। তাঁর কথায়, ‘‘মূল রাস্তার পাশেই আমরা থাকতাম। বোমার আওয়াজ শুনছিলাম। ওখানকার পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছিল। আমাদের কথা জানতে পেরে এক দিন সন্ধ্যায় ও আমাদের নিতে আসে। চার দিকে যখন গোলাগুলি চলছে সেই সময় ও আমাদের না নিয়ে গেলে কী যে হত, ভাবতেই পারছি না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বন্ধু বলছেন, ‘‘মানবিকতার খাতিরে বন্ধুদের নিয়ে এসেছি। আমাদের বাড়িতে থাকতে বলেছি।’’ গুরপ্রীতরা ছাড়াও তাঁদের ইউক্রেনীয় ওই বন্ধুর বাড়িতে রয়েছেন ৫ সদস্য। তার মধ্যে রয়েছেন ওই তরুণীর ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দিদিমা। গুলপ্রীতের কথায়, ‘‘এই গ্রামও কত দিন নিরাপদ জানি না। তাই এঁরাও এখান থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’
ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে রুশ সেনা অভিযান শুরু হয় ইউক্রেনে। গত সাত-আট দিন ধরে গুলপ্রীতরা ওই বন্ধুর বাড়িতে রয়েছেন। বন্ধ ঘরে দিন-রাত কাটানো গুলপ্রীত চাইছেন দ্রুত দেশে ফিরতে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে রাশিয়ান সেনা টহল দিচ্ছে। সুমির মতোই খেরসন থেকেও নাগরিকদের বার করা কষ্টসাধ্য। আমাদের বাইরে যেতেও বারণ করা হয়েছে। আমরা দেশে ফেরার জন্য রোজ দূতাবাসে যোগাযোগ করছি। বাড়িতেও কথা বলে জানিয়েছি যে, এই গ্রামে আমরা আশ্রয় নিয়েছি।’’
ওই গ্রামের অবস্থা কেমন জানতে চাইলে গুলপ্রীত বলেন, ‘‘বাইরে বেরোচ্ছি না। জানলা খোলার অনুমতি নেই। সব জানলা বন্ধ করেই রাখছি। বিকেল ৫টার পর আলোও বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। শত্রুপক্ষের নজর এড়াতেই এই পন্থা। শহরের থেকে গ্রামের দিকটা বেশি নিরাপদ বলেই এই বন্ধুর সঙ্গে গ্রামে চলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেও ওঁরা আমাদের খাবার ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের জন্য রুটি, শাক-সব্জিও কিনে এনেছেন। এখানে আমরা আমাদের মতো রান্নাও করে খাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy