প্রতীকী ছবি
কলকাতা-সহ বাংলায় মরণোত্তর দেহ ও অঙ্গদান আন্দোলনের পুরোধা ব্রজ রায়ের দেখানো পথেই আরও দুই করোনা রোগীর দেহ চিকিৎসা-গবেষণার কাজে উৎসর্গ করা হল সোমবার। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরে গত শুক্রবার ব্রজবাবুর দেহের ‘প্যাথলজিক্যাল অটোপসি’ করা হয়। এ দিন সেই তালিকায় যুক্ত হল বেলেঘাটার বাসিন্দা ৯৩ বছরের জ্যোৎস্না বসু ও প্রবীণ চক্ষু চিকিৎসক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর (৭০) নাম।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি নিয়ে এ দিন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই দুই প্রবীণ-প্রবীণার মৃতদেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি করা হয়েছে। ব্রজবাবুরও অটোপসি হয়েছিল ওই হাসপাতালে। এই প্রক্রিয়ার জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক মেডিসিনের শিক্ষক চিকিৎসক সোমনাথ দাসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে রয়েছেন আরজি করের মাইক্রোবায়েলজ়ির শিক্ষক চিকিৎসক মানস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্যাথোলজ়ির বিভাগীয় প্রধান তুষারকান্তি দাস। স্বাস্থ্য শিবিরের খবর, আগে বিদেশে করোনায় মৃতের প্যাথোলজ়িক্যাল অটোপসি হলেও দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সম্ভবত এই প্রথম এই কাজ শুরু হল ব্রজবাবুকে দিয়ে। মাত্র চার দিনের মধ্যে তিন জন রোগীর অটোপসি হয়েছে। যা চিকিৎসা গবেষণার কাজে লাগবে।
প্যাথলজিক্যাল অটোপসি কী? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওই তিন জনেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। করোনা হলে কী ধরনের শারীরবৃত্তীয় গন্ডগোল হচ্ছে, সেগুলি পরীক্ষার মাধ্যমে ধাপে ধাপে বার করা হয়। করোনা হওয়ার পরে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রতিটি স্তরে কী ধরনের পরিবর্তন বা ক্ষতি হচ্ছে এবং যার পরিণামে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে, তা খুঁজে বার করাই হল প্যাথ-ফিজিয়োওলজ়ি। সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘এগুলো বুঝতে পারলে পরবর্তী সময়ে করোনা চিকিৎসার সুবিধা হতে পারে। ওই তিন রোগীরই প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। প্রতিটি নমুনার কয়েকটি স্লাইড তৈরি করা হচ্ছে। হিস্টো-প্যাথলজ়ি করার পরেই পুরো বিষয়টি বোঝা যাবে।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রিপোর্ট আসতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। তার পরে কমিটি সবিস্তার রিপোর্ট জমা দেবে স্বাস্থ্য দফতরে।
জ্যোৎস্নাদেবীর নাতনি, পেশায় চিকিৎসক তিস্তা বসু জানান, গত ১০ মে তাঁর দিদিমার করোনা ধরা পড়ে। ১৪ তারিখে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি মারা যান ১৬ মে। তিস্তা বলেন, ‘‘দিদিমা দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু করোনায় মারা গেলেয় তো দেহ দান করা যাবে না। তবে ব্রজবাবুর ঘটনা থেকে আমরা প্যাথোলজিক্যাল অটোপসির বিষয়টি জানতে পারি, তাতে রাজিও হই।" অন্য দিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪ মে থেকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন চক্ষু চিকিৎসক বিশ্বজিৎবাবু। তাঁর পারিবারিক বন্ধু দেব মহাপাত্র জানান, বিশ্বজিৎবাবুর ইচ্ছা ছিল, মৃত্যুর পরে তাঁর দেহ যেন দান করা হয়। সেই অনুযায়ী ১৬ মে তাঁর মৃত্যুর পরে দেহ দানের বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি অটোপসির বিষয়টি জানান। তাতে রাজি হয়ে যান ওই চিকিৎসকের আত্মীয়স্বজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy