Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Crime

শিশুকে ফেরত দিতে চার লক্ষ টাকা দাবি, আটক দুই 

সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণী তরুণী আদতে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বিয়ের পরে তিনি জানতে পারেন, স্বামীর সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক রয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪২
Share: Save:

নিজের কাজের সুবিধার জন্য তিন বছরের মেয়েকে বান্ধবীর কাছে রেখেছিলেন মা। প্রতি মাসে মেয়ের দেখভালের জন্য টাকাও দিতেন বলে দাবি তরুণীর। অভিযোগ, লকডাউনের আগে মেয়েকে নিজের কাছে আনতে চাইলে রাজি হননি সেই বান্ধবী। বান্ধবী এবং স্থানীয় একটি ক্লাবের ছেলেরা বাচ্চা বিক্রি করে দেওয়ার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। শেষমেশ শনিবার লালবাজার উইমেন্স গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানান ওই তরুণী। এর পরে রবিবার সন্ধ্যায় তরুণীর ভাড়া বাড়িতে ওই ক্লাবের ছেলেরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তরুণী ফের উইমেন্স গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানালে পুলিশ দুই যুবককে আটক করেছে। তাদের জেরা করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণী তরুণী আদতে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বিয়ের পরে তিনি জানতে পারেন, স্বামীর সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। তার উপরে স্বামী কোনও কাজ করতেন না। ফলে ওই তরুণী স্বামীকে ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরে আসেন। ২০১৯ সালে কলকাতায় কাজ করতে চলে আসেন তিনি। এর পরে তাঁর পরিচিত এক তরুণীর সঙ্গে তিনি শোভাবাজার এলাকায় যান। সেখানে তিনি পরিচারিকার কাজ করতেন। অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, শোভাবাজারে তিনি ওই বান্ধবীর কাছেই থাকতেন। পরে ওই তরুণী বুঝতে পারেন, এলাকাটি যৌনপল্লি। এক সময়ে অভিযোগকারিণীও যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। নিজে একটি ঘরও ভাড়া নেন।

ওই তরুণী জানিয়েছেন, প্রথম দিকে আয়ার কাছে মেয়েকে রাখতেন তিনি। কিন্তু তাঁর বান্ধবী জানান, যৌনপল্লিতে শিশুকে রাখা ঠিক হবে না। শিশুটিকে নবদ্বীপে নিজের গ্রামের বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন অভিযুক্ত। ওই তরুণী রাজি হয়ে যান। আট মাস আগে তিনি নবদ্বীপে মেয়েকে রেখে আসেন। মেয়ের জন্য প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকাও বান্ধবীর হাতে তুলে দিতেন বলে দাবি তরুণীর। গত মার্চ মাসে তরুণী মেয়েকে ফের নিজের কাছে রাখতে চান। কিন্তু অভিযোগ, মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়া তো দূর, উল্টে বান্ধবী এবং তাঁর সঙ্গীরা নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকে।

তরুণীর অভিযোগ, “প্রথমে বলেছিল ৪ লক্ষ টাকা দিলে তবে মেয়েকে ফেরত দেবে। রাজি না হওয়ায় বাচ্চা বিক্রির মামলায় ফাঁসিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।” তরুণীর আরও অভিযোগ, তিনি পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা বললে স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরাও তাঁকে হুমকি দেয়। এর পরেই শনিবার ওই তরুণী রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং লালবাজারের উইমেন্স গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানান। অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিশুটি তাঁর কাছেই রয়েছে। তবে উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া তাকে মায়ের হাতে তুলে দেবেন না তিনি।

স্থানীয় বিধায়ক এবং রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। চাইল্ড লাইন এবং শিশু সুরক্ষা কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে দ্রুত মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Money Women Grievance Cell
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE