শিয়ালদহ উড়ালপুলের ক্ষতি যাতে না হয়, সে জন্য তার নীচে ঠেকনা দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
নির্বিঘ্নেই চলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ। রবিবার রাত পর্যন্ত বিদ্যাপতি সেতুর প্রায় মাঝমাঝি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) উর্বী। রাত পর্যন্ত সুড়ঙ্গে ২০টি কংক্রিট বলয় বসানো হয়ে গিয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। আরও পাঁচটির কাজ এখনও বাকি।
তবে এর আগে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের ক্ষেত্রে যে ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিদ্যাপতি সেতু বা শিয়ালদহ উড়ালপুল খুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল এ বার তা নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সময় নিয়েই কাজ সম্পূর্ণ করা হতে পারে।
মেট্রোর কাজের জন্য শুক্রবার রাত থেকেই বিদ্যাপতি সেতুর মাঝের অংশে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। দক্ষিণ দিকের বেলেঘাটা মেন রোডের সংযোগকারী অংশ খোলা থাকলেও উত্তর দিকে উড়ালপুলের বড় অংশই বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও খবর: টিকা নিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ৪৪৭ জনের, গুরুতর নয়, বলল কেন্দ্র
যান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এখনও সে ভাবে সমস্যায় পড়তে হয়নি বলেই জানাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিকের আধিকারিকেরা। তবে, সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে যানবাহনের চাপ বাড়বে। তখনই যান নিয়ন্ত্রণের আসল পরীক্ষা বলে মনে করছেন তাঁরা।
আরও খবর: জোট হলে কংগ্রেসের জেতা আসনে প্রার্থী দেবেন না আব্বাস, দাবি সোমেন পুত্রের
গত অক্টোবরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে কাজ সম্পূর্ণ করে টিবিএম উর্বী। তার পরে ওই যন্ত্রটিকে মাটি থেকে তুলে তার অভিমুখ পরিবর্তন করে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজে লাগানো হয়েছে। গত ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের সময়ে বৌবাজারে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে টিবিএম চণ্ডী। সেই সময়ে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। টিবিএম চণ্ডীকে উদ্ধারের আশা ছেড়ে তড়িঘড়ি নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ বার শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার অভিমুখে চণ্ডীর অসমাপ্ত কাজ করছে উর্বী। প্রায় ৮০০ মিটার সুড়ঙ্গ নির্মাণের ভার উর্বীর উপরে।
তবে, এই পর্বে অনেক বেশি সতর্কতার সঙ্গে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ করতে হচ্ছে। শিয়ালদহ স্টেশনে যেখানে টিবিএম সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু করেছে তার ৭০ মিটারের মধ্যেই বিদ্যাপতি সেতু। টিবিএমের মূল যন্ত্রের দৈর্ঘ্য ৮ মিটারের মতো। কিন্তু যাবতীয় ব্যবস্থা সমেত টিবিএম সুড়ঙ্গে স্থাপন করতে গেলে অন্তত ৮০ মিটার পরিসর প্রয়োজন হয়। শিয়ালদহে তা না থাকায় প্রারম্ভিক পর্বে খুবই সন্তর্পণে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ করতে হচ্ছে। পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের ক্ষেত্রে যে গতিতে সুড়ঙ্গ খনন করা হয়েছিল, এ বার তার অর্ধেকের কম গতিতে ওই কাজ করতে হচ্ছে। সুড়ঙ্গ খননের ফলে সেতুর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে কি না কিংবা কোথাও মাটি বসে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য একাধিক যন্ত্র বসানো হয়েছে। সেতুর নীচে ঠেকনা বসানো ছাড়াও কাছাকাছি সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সুড়ঙ্গ খননের কাজের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খুব সন্তর্পণে কাজ চললেও এখনও পর্যন্ত অস্বাভাবিক কিছু নজরে আসেনি। আশা করছি সব কিছু নির্বিঘ্নেই মিটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy