Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Tunnel Boring Machine

এক বছরেও সুড়ঙ্গে বন্দিদশা কাটল না টিবিএম ‘চণ্ডী’র

বৌবাজারের ওই অংশে কর্তব্যরত এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ অভিমুখে (পশ্চিম থেকে পূর্বে) দু’টি সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ করছিল টিবিএম চণ্ডী এবং ঊর্বি।

মেট্রোর কাজ চলছে বৌবাজারে। নিজস্ব চিত্র

মেট্রোর কাজ চলছে বৌবাজারে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫৭
Share: Save:

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বৌবাজার বিপর্যয়ের এক বছর পূর্ণ হবে আজ, সোমবার। একই সঙ্গে মেট্রো প্রকল্পে ব্যবহৃত টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) চণ্ডীরও ভূগর্ভে আটকে থাকার এক বছর পূর্ণ হবে এ দিন। তবে ওই যন্ত্রটিকে আর কাজে লাগানো যাবে না বলেই মেট্রো সূত্রের খবর। সেটির দাম আনুমানিক ১০ কোটি টাকা। ফলে বৌবাজার বিপর্যয়ে মেট্রোর ক্ষতির ধাক্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এই বিপুল ব্যয়ভার। কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, আরও কত দিন তাকে আটকে থাকতে হবে তা স্পষ্ট নয়। তবে তাকে বার করে আনার জন্য গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে গত মাস থেকেই।

গত বছরের ৩১ অগস্ট বৌবাজারে একের পর এক বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার ঘটনায় শোরগোল পড়ে। রাতারাতি বাস্তুহারা হয় বহু পরিবার। সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় সোনাপট্টির কারবার। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নির্মাণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। যদিও কাজ শেষ করার আগেই সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিল টিবিএম চণ্ডী। তার সেই অবস্থান বদলায়নি এত দিনেও।

বৌবাজারের ওই অংশে কর্তব্যরত এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ অভিমুখে (পশ্চিম থেকে পূর্বে) দু’টি সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ করছিল টিবিএম চণ্ডী এবং ঊর্বি। গত ৩১ অগস্ট বিপর্যয়ের পরে চণ্ডীকে এক জায়গায় থামিয়ে দিতে হয়। ওই ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘সেই সময়ে সুড়ঙ্গে জল ঢুকছিল। জলের সঙ্গে মাটিও ঢুকতে থাকায় বাড়িগুলির ভিত দুর্বল হতে শুরু করে। এর জেরেই বিপত্তি ঘটে। তবে গত এক বছরে মাটির ধস নামা বন্ধ করা গিয়েছে। সেই সঙ্গে চণ্ডী-র দু’দিকে দেওয়াল তুলে জল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। জলের চাপে যাতে বাইরে থেকে নতুন করে জল এবং মাটি ভিতরে না-ঢোকে, তা-ও নিশ্চিত করা গিয়েছে। সেই অবস্থায় চণ্ডীকে দাঁড় করিয়ে চলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বাকি কাজ।’’

কেএমআরসিএল সূত্রের দাবি, চণ্ডী আটকে গেলেও ঊর্বি তার কাজে অনেকটাই এগিয়েছে। পূর্ব অভিমুখে বৌবাজারের বিপজ্জনক এলাকা পেরিয়ে সে পৌঁছে গিয়েছে প্রায় শিয়ালদহের কাছাকাছি। শিয়ালদহ পর্যন্ত পৌঁছে ঊর্বি-র সুড়ঙ্গ বদল করার কথা। চণ্ডী যে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি, সেটিতে ঊর্বির যাওয়ার কথা শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই ৪০ মিটার লম্বা, প্রায় ২০ মিটার চওড়া এবং ২২ মিটার গভীর যে গর্ত খোঁড়া হয়ে গিয়েছে তা দিয়ে চণ্ডীকে বার করে আনার কথা। এর পরে সেখানকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হবে।

তপন সরকার নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘গত পুজোর আগেই পাড়া ছাড়তে হয়েছিল। এই পুজোতেও কোনও সুখবর পাব বলে মনে হচ্ছে না। টিবিএম চণ্ডীকে দ্রুত বার করে আনা হোক। আমাদেরও মতো আরও অনেকে দ্রুত নিজেদের পাড়ায় ফিরে আসুন। পাড়াছাড়া হওয়ার বর্ষপূর্তিতে এর বেশি কী চাইব?’’ কেএমআরসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী যদিও বলেন, ‘‘কত দিনে সব শেষ হবে, এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে বলতে পারি, দ্রুত কাজ চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই ভাল খবর পাওয়া যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Tunnel Boring Machine Bowbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE