পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের সামনে রাখা লোহার ঠেকনা। নিজস্ব চিত্র।
যাত্রী নিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কবে শিয়ালদহে পৌঁছবে, তা নির্ভর করছে রেল বোর্ডের সম্মতির উপরে। তবে, এখনই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য গঙ্গার নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ-পথে হাওড়া ময়দানে মেট্রো নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বৌবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের নির্মাণকাজ মিটলে পাশের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে বসানো ঠেকনা খোলা সম্ভব হবে। তার পরেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সেন্ট্রাল পার্ক ডিপো থেকে পরীক্ষামূলক দৌড়ের জন্য রেক নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।
বৌবাজারে ধস নেমে বিপত্তির জেরে মেট্রোর সার্বিক নির্মাণকাজ অন্তত দু’বছর পিছিয়ে গিয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্ব প্রান্তের অংশ, অর্থাৎ হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত পথে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ প্রায় সাড়ে তিন বছর আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। অতিমারি-পর্বে বহু ঝড়ঝাপটা সামলেও হাওড়া ময়দান, হাওড়া এবং বি বা দী বাগ স্টেশনের কাজ প্রায় শেষের পথে। হাওড়া থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত অংশে জোড়া সুড়ঙ্গে লাইন পাতার কাজও আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগের কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে। ফলে, পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি হিসেবে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড— এই অংশে মহড়া শুরু করার তোড়জোড় করবেন বলে ভেবেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তার জন্য শিয়ালদহ থেকে ব্যাটারিচালিত লোকোমোটিভ বা রেল-কাম-রোড ভেহিক্ল দিয়ে গঙ্গার অপর প্রান্তে ট্রেন নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। ছ’কামরার রেকের সামনে এবং পিছনে ওই ব্যাটারিচালিত লোকোমোটিভ জুড়ে পুশ-পুল পদ্ধতিতে ট্রেন হাওড়া নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বৌবাজারে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের নির্মাণ না মেটা পর্যন্ত ট্রেন নিয়ে যাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
বছর তিনেক আগে, ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই বৌবাজারে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খননের সময়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘চণ্ডী’। সুড়ঙ্গে জল, কাদা, মাটির ধস ঠেকাতে চণ্ডীর পিছন দিকে ১২৫ মিটার দূরত্বে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়। ওই অংশ তখনকার মতো জল দিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে মাটির স্থায়িত্ব বাড়াতে উপর থেকে পাম্প করে ঢোকানো হয় সিমেন্ট এবং জলের মিশ্রণ। সেই মিশ্রণ চুঁইয়ে চুঁইয়ে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়ে। ফলে, জমাট কংক্রিটের মধ্যে আটকে যায় চণ্ডী। পরে শিয়ালদহের দিক থেকে চণ্ডী-র অসমাপ্ত কাজ শেষ করে ‘উর্বী’। দু’টি টিবিএম-কে মাটি থেকে তোলার জন্য বৌবাজারে ৪০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার চওড়া একটি চৌবাচ্চা বা রিট্রিভাল শ্যাফট তৈরি করা হয়। সেখান দিয়ে উর্বী এবং চণ্ডী-কে কেটে বার করার কাজ মিটে গিয়েছে। তবে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের মুখ পরিষ্কার করার পাশাপাশি আলগা হয়ে যাওয়া সুড়ঙ্গের দেওয়াল নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে। এই সব কাজের জেরে যাতে পাশের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের ক্ষতি না হয়, তার জন্য সেটির ভিতরে ইস্পাতের খাঁচা তৈরি করে প্রায় ৬০ মিটার পরিসর জুড়ে ঠেকনা বসানো হয়েছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, কয়েক মাসের মধ্যে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ তৈরি হয়ে গেলে ওই ঠেকনা খুলে ফেলা হবে। তার পরেই নদীর নীচ দিয়ে মহড়া-দৌড়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে রেক। এই প্রসঙ্গে মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কিছুটা সময় লাগছে। শিয়ালদহে পরিষেবা শুরু এবং বৌবাজারের কাজ মিটলে আমরা মহড়া শুরু করার প্রস্তুতি নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy