প্রতীকী ছবি।
রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের জন্য বেশ কয়েকটি বড় গাছ প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করেছিল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু খোদ স্বরাষ্ট্রসচিবের আপত্তিতে বন্ধ হয়ে গেল প্রতিস্থাপনের সেই প্রক্রিয়া!
পুরসভা সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার পণ্ডিতিয়া রোড চওড়া করতে ১১টি বড় গাছ প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেগুলির মধ্যে ছিল দু’টি বট, দু’টি অশ্বত্থ, একটি বকুল, দু’টি কদম, দু’টি দেবদারু ও দু’টি খিরিশ গাছ। সেই মতো পুরসভার তরফে বন দফতরের অনুমতিও নেওয়া হয়। কিন্তু পণ্ডিতিয়া রোডের যেখানে ওই গাছগুলি প্রতিস্থাপন করার কথা ছিল, তার কাছাকাছি একটি বড় আবাসনে থাকেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা। পুরসভা সূত্রের খবর, গত সোমবার পুরসভার রাস্তা এবং উদ্যান বিভাগের কর্মীরা গাছ প্রতিস্থাপন করতে গেলে বিষয়টি জানতে পারেন স্বরাষ্ট্রসচিব। একসঙ্গে এতগুলি বড় গাছ সরালে এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে, এই যুক্তি দেখিয়ে তিনি ফোন করেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে এবং গাছগুলি যাতে সরানো না হয়, সেই বিষয়ে তাঁকে অনুরোধ জানান। সেই মতো পুর কমিশনার বিষয়টি জানান বন দফতরে। এর পরেই গাছ প্রতিস্থাপনের কাজ বন্ধ রেখে ফিরে আসেন পুরকর্মীরা।
এ বিষয়ে মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই পরিবর্ত
হিসেবে রবীন্দ্র সরোবরে ৫৫টি গাছ রোপণ করেছি। পণ্ডিতিয়া রোড চওড়া করতে ওই ১১টি গাছও পরিকল্পিত উপায়ে তুলে অন্যত্র রোপণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তার জন্য অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল বন দফতরের। কিন্তু অতি সম্প্রতি দফতরের তরফে ওই গাছগুলি প্রতিস্থাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিস পাঠানো হয়েছে।’’
পরিবেশবিদেরা বলছেন, একটি এলাকা থেকে একসঙ্গে এতগুলি বড় গাছ সরালে তা পরিবেশের পক্ষে বড় ক্ষতি ডেকে আনবে। পরিবেশকর্মী বনানী কক্করের অভিযোগ, ‘‘আগেও পণ্ডিতিয়া রোডে একাধিক গাছ কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা হয়েছে। আমপানের তাণ্ডবে ওই এলাকায় বহু গাছ পড়েছিল। তার পরে গাছ লাগানো তো হয়ইনি, উল্টে এখন একসঙ্গে ১১টি গাছ সরালে স্থানীয় বাসিন্দারা অক্সিজেনটুকুও পাবেন না।’’ পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র পর্ষদের রিসার্চ অফিসার অনির্বাণ রায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘একটি এলাকা থেকে একসঙ্গে এতগুলো গাছ সরানো সেখানকার পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক।’’
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘কোনও গাছ প্রতিস্থাপন করা হলেও তাকে আগের চেহারায় ফেরানো মুশকিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিস্থাপিত গাছ বাঁচে না। স্বরাষ্ট্রসচিবের নজরে পড়ায় এতগুলি গাছ বাঁচানো গিয়েছে। আগামী দিনে ওই গাছগুলিকে বাঁচাতে আমাদের নজর থাকবে।’’ এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘‘গাছ সরানো কে আটকেছে, সেটা বড় কথা নয়। গাছগুলি যে কাটা হয়নি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy