Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Corona

শংসাপত্রের গেরোয় বিপাকে পোর্ট ব্লেয়ারগামী উড়ানযাত্রীরা

আন্দামান-নিকোবরে যেতে হলে কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র সঙ্গে রাখার নিয়ম গত কয়েক মাস ধরে চালু করেছে সেখানকার প্রশাসন।

হাতে লেখা এই শংসাপত্র নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

হাতে লেখা এই শংসাপত্র নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:৫৮
Share: Save:

গন্তব্য ছিল পোর্ট ব্লেয়ার। কিন্তু কোভিড নেগেটিভ-এর ঠিক শংসাপত্র সঙ্গে না থাকার অভিযোগে বিমানে ওঠার আগেই আটকে দেওয়া হল ৩৬ জন যাত্রীকে। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে পোর্ট ব্লেয়ারগামী ওই যাত্রীদের।


আন্দামান-নিকোবরে যেতে হলে কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র সঙ্গে রাখার নিয়ম গত কয়েক মাস ধরে চালু করেছে সেখানকার প্রশাসন। সেই মতো ঠিক শংসাপত্র সঙ্গে না-থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার পোর্ট ব্লেয়ারগামী গো এয়ার সংস্থার বিমানে উঠতে দেওয়া হল না ওই যাত্রীদের। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এর প্রতিবাদে দুপুর ২টো থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে বিক্ষোভ দেখান ওই যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, আরটি-পিসিআর নেগেটিভ শংসাপত্র সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও তাঁদের যেতে দেওয়া হয়নি।


তবে গো এয়ার সংস্থার তরফে দাবি, ওই যাত্রীদের অনেকের শংসাপত্র হাতে লেখা ছিল। আবার অনেকে উড়ান ছাড়ার আধ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছিলেন। সেই কারণে তাঁদের নিয়ে যাওয়া যায়নি।


যদিও যাত্রীদের পাল্টা অভিযোগ, ৩৬ জনের মধ্যে প্রথম এক-দু’জনের শংসাপত্র দেখেই তা খারিজ করে দেন উড়ান সংস্থার আধিকারিকেরা। তার পরে বাকিদের বলা হয় যে, তাঁরাও যেতে পারবেন না। এর পরে অন্য যাত্রীদের নিয়ে উড়ান পোর্ট ব্লেয়ার চলে গেলে আটকে থাকা যাত্রীরা আজ, শনিবারের উড়ানে পোর্ট ব্লেয়ারে যেতে চান। তাঁদের বলা হয়, সেই উড়ানে কোনও আসন খালি নেই। এর পরে ওই যাত্রীরা টিকিটের টাকা ফেরত চাইলে তা-ও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।


কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য শুক্রবার জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে দেশের অন্য যে কোনও শহরে গেলে কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র লাগছে না। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে পোর্ট ব্লেয়ার প্রশাসন এই নতুন নিয়ম চালু করার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, কলকাতা থেকে পোর্ট ব্লেয়ারগামী এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো সংস্থার বিমানের যাত্রীদেরও সঙ্গে রাখতে হচ্ছে আরটি-পিসিআর নেগেটিভ শংসাপত্র। সে ক্ষেত্রেও শংসাপত্রে গলদ থাকলে সেই সব যাত্রীকে বিমানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে সেই সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু গো এয়ার সংস্থার বিমানযাত্রীদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলে অভিযোগ বিমানবন্দরের আধিকারিকদের একাংশের।


পোর্ট ব্লেয়ারগামী যাত্রীদের একটি বড় সংখ্যক হলেন শ্রমিক, যাঁরা সেখানে কাজের খোঁজে যান। কিন্তু নয়া নিয়মের গেরোয় তাঁদের অনেকেরই সেই যাত্রায় বাধা পড়ছে। যেমন, নদিয়ার বসরখোলার বাসিন্দা সফিকুল মল্লিক গো এয়ারের উড়ানেই পোর্ট ব্লেয়ারে যেতে সম্প্রতি কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছেছিলেন। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘আমি এন আর এস হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করিয়েছিলাম। সেখান থেকে পরের দিন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। সেই সার্টিফিকেট নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছলে আমাকে বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি।’’ এর পরে অবশ্য আর পোর্ট ব্লেয়ার যাওয়ার চেষ্টা করেননি পেশায় মার্বেল মিস্ত্রি সফিকুল।


নিজের এলাকাতেই রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন তিনি। গো এয়ার উড়ান সস্থার এক কর্তা জানিয়েছেন, আরটি-পিসিআর নেগেটিভ শংসাপত্র ছাড়া কোনও যাত্রীকে পোর্ট ব্লেয়ার নিয়ে গেলে জরিমানা করছে প্রশাসন। সেখানকার বিমানবন্দরেও কোভিড পরীক্ষা করানোর সুযোগ নেই। তাই শংসাপত্র ছাড়া কোনও যাত্রী পোর্ট ব্লেয়ার যেতে চাইলে তাঁকে বিমানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। ওই কর্তার কথায়, ‘‘বহু শ্রমিক যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের ভুল বোঝাচ্ছেন ট্র্যাভেল এজেন্টরাও। ওই শ্রমিকেরা হাতে লেখা শংসাপত্র নিয়ে আসছেন। সেটা আমরা কী ভাবে গ্রহণ করব?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Port Blair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy