Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Road accidents

পথ দুর্ঘটনার তদন্তে এ বার পুলিশের সঙ্গে পরিবহণ, স্বাস্থ্য এবং পূর্ত দফতর

রাজ্যের ২০টি পুলিশ জেলায় এই কাজের প্রশিক্ষণপর্ব শেষ হয়েছে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাসের মধ্যে কলকাতাতেও শুরু হতে চলেছে এই ব্যবস্থা।

A Photograph of representing accident

পথ দুর্ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি এ বার ঘটনাস্থল পরীক্ষা করতে যাবেন পরিবহণ, স্বাস্থ্য এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:২১
Share: Save:

পথ দুর্ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি এ বার ঘটনাস্থল পরীক্ষা করতে যাবেন পরিবহণ, স্বাস্থ্য এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও। দুর্ঘটনার সমস্ত দিক নিয়ে সব পক্ষ নিজের নিজের মতো করে রিপোর্ট দেবে। সে সব পর্যালোচনা করেই ঠিক করা হবে, আরও কী করলে ওই জায়গায় পথ দুর্ঘটনা কমতে পারে।

রাজ্যের ২০টি পুলিশ জেলায় এই কাজের প্রশিক্ষণপর্ব শেষ হয়েছে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাসের মধ্যে কলকাতাতেও শুরু হতে চলেছে এই ব্যবস্থা। গত বছর থেকেই বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাহায্যে ‘দি ইন্টিগ্রেটেড রোড অ্যাক্সিডেন্ট ডেটাবেস’ (আইআরএডি) প্রকল্প শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক। উদ্দেশ্য, দেশের যে কোনও প্রান্তের পথ দুর্ঘটনা সম্পর্কে তথ্যভান্ডার তৈরি করা এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে পথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দেশের নানা রাজ্য ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। এ বার জুড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।

সূত্রের খবর, যে কোনও পথ দুর্ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন পুলিশকর্মীরা। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট তাঁরা পুলিশের খাতায় লিখে রাখেন। পরে আদালতে তা পেশ করা হয়। তদন্তকারীপুলিশ অফিসারকে (আইও) আইআরএডি অ্যাপ্লিকেশনেও দুর্ঘটনা সম্পর্কে নিজের একটি রিপোর্ট তুলে দিতে হবে। সেই সঙ্গেই দিতে হবে দুর্ঘটনার ছবি এবং ভিডিয়ো। এর পরেই ওই দুর্ঘটনার একটি ‘ইউনিক আইডি’ তৈরি হয়ে যাবে। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা পরিবহণ, স্বাস্থ্য এবং পূর্ত দফতরের নোডাল অফিসারদের কাছে তখন একটি বার্তা যাবে। ওই বার্তায় থাকবে তৈরি হওয়া আইডি। ওই সমস্ত দফতর থেকে এর পরে কর্মীরা গিয়ে দুর্ঘটনাস্থল ঘিরে তদন্ত শুরু করবেন।

পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরীক্ষা করার পরে ওই সমস্ত দফতর নিজের নিজের মতো করে রিপোর্ট তুলবে আইআরএডি অ্যাপ্লিকেশনে। সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা সম্পর্কে সমস্ত রিপোর্ট এর পরে পরীক্ষা করার জন্য যাবে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, মাদ্রাজ’ (আইআইটি-এম)-এ। সেখানে পর্যালোচনার পরেকিছু পরামর্শ আসবে।’’ ওই আধিকারিক জানাচ্ছেন, হতে পারে, রাস্তার খারাপ অবস্থার জন্যই হয়তো সেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তা হলে সে ক্ষেত্রে রাস্তার মানোন্নয়ন কী ভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শ পাঠানো হবে। পূর্ত দফতর সেই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য থাকবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকলে, সেই সম্পর্কে পরামর্শ আসবে। নতুন কোনও ট্র্যাফিক ব্যবস্থা চালু করতে হলেও তা জানানো হবে পরামর্শের মাধ্যমে।

এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘পথের খুঁত খুঁজে এতে খুব দ্রুত যেমন দুর্ঘটনার কারণ বুঝে ওষুধ দেওয়া যাবে, তেমনই দুর্ঘটনাগ্রস্তের ক্ষতিপূরণ পেতেও সুবিধা হবে। এই প্রকল্পের অ্যাপ্লিকেশনে লিগাল সার্ভিস অথরিটি এবং বিমার সঙ্গে যুক্তেরাও থাকবেন।’’ ওই পুলিশকর্তা আরও বলেন, ‘‘কোন জায়গায় কত দুর্ঘটনা হয় এবং কী কারণে হয়, সবটাই দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে দেখে পদক্ষেপ করা যাবে। এর ফলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমতে বাধ্য।’’

কিন্তু, দেশের বহু রাজ্যে এই প্রকল্প অনেক আগে শুরু হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এত দিন তা হয়নি কেন? কেনই বা রাজ্যের ২০টি পুলিশ জেলায় এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণপর্ব শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেলেও কলকাতায় হয়নি?

এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরোটাই অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’ যদিও কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্র্যাফিক (দক্ষিণ) তথা আইআরএডি প্রকল্পে পুলিশের নোডাল অফিসার ইয়েলওয়াড় শ্রীকান্ত জগন্নাথরাওয়ের আশ্বাস, ‘‘খুব দ্রুত, মাসখানেকের মধ্যেই কলকাতায় এই প্রকল্প শুরু হয়ে যাবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE