Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Transgender

পায়ের নীচে জমি খুঁজতে এ বার একজোট রূপান্তরকামীরা

রূপান্তরকামী নারী দেবদত্তা বিশ্বাসের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন সফল হয়নি এমএ পাশ করার পরেও। নিজের পায়ে দাঁড়াতে নানা অসহনীয় অভিজ্ঞতা অতিক্রম করেই লড়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে।

An image of Transgender

—প্রতীকী চিত্র।

ঋজু বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২০
Share: Save:

দেশের মধ্যেই এ যেন অন্য এক দেশের গল্প। বঞ্চনা আর বৈষম্যের বাধার দেওয়ালে ঠোক্কর খেয়ে নতুন আশার পথ খোঁজার চেষ্টা। কলকাতা বা আশপাশের এমনই এক ঝাঁক রূপান্তরকামী তরুণ, তরুণীর জীবনেও এ এক উলটপুরাণ। পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, রূপান্তরকামী পুরুষ পীযূষ দত্ত জীবনের কাছে কম কোণঠাসা হননি। কোভিডের পরে নিজের ওয়েব ডেভেলপিং অফিস খোলার চেষ্টাও প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ে।
সেই পীযূষ আবার নতুন করে নিজের অফিস সাজানোর চেষ্টায় ব্যস্ত হয়েছেন।

রূপান্তরকামী নারী দেবদত্তা বিশ্বাসের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন সফল হয়নি এমএ পাশ করার পরেও। নিজের পায়ে দাঁড়াতে নানা অসহনীয় অভিজ্ঞতা অতিক্রম করেই লড়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে। সেই দেবদত্তাও এখন নিজের নতুন শাড়ি বিপণিটিকে দাঁড় করাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। আজ, মঙ্গলবার জার্মান কনসুলেটের বাগানে ‘ট্রান্সমার্ক’ বলে একটি মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরবেন এমন অনেকেই। ‘প্রান্তকথা’ বলে একটি সংস্থার উদ্যোগে রাজ্যের
শতাধিক রূপান্তরকামী ছেলে, মেয়ের স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে নানা অনুদানের সাহায্যে তাঁদের নিজের পায়ে দাঁড় করানোর চেষ্টাও চলছে। নানা প্রতিকূলতা ঠেলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানো কয়েক জনকে সাহায্য করতেই এই প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের ক্ষমতায়নে মঞ্চ গড়ে তোলা হয়েছে।

অতীতে নানা ভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও রূপান্তরকামীরা অনেকে আদিম পেশায় বা হিজড়েদের দলে ভিক্ষা ও নাচের কাজে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, এমন নমুনা আজও দুর্লভ নয়। রূপান্তরকামীদের জন্য এ রাজ্যের পুলিশ বিভাগে কিছু পদ রাখার চেষ্টার মতো উদ্যোগ দেখা দিলেও তা এখনও যথেষ্ট নয়। ট্রান্সমার্কের উদ্যোগটির নেপথ্যে থাকা বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায় বলছেন, “আজও রূপান্তরকামীদের অনেক প্রতিভাই সমাজের মানসিক জড়তার জন্য মাঠে মারা যায়। সবলা মেলায় মেয়েদের ক্ষমতায়নের চেষ্টার মতো
রূপান্তরকামীদেরও একটি মঞ্চ দেওয়ার চেষ্টা করছি। শহরের আরও অনেকে ওঁদের কাজ বা সৃজনশীলতা দেখলে হয়তো ওঁদের জন্য নতুন সুযোগের দরজা খুলবে।”

রূপান্তরকামী নারী কুসুম সামন্তের টিভি ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ ধাক্কা খেয়েছে। তিনি এখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলায় একটি উপহার বিপণি খুলে নতুন লড়াই লড়ছেন। কুসুম বললেন, “নিজের দোকানের কথা বলব বলেই ট্রান্সমার্কে যাব। সেই সঙ্গে অন্য রূপান্তরকামী ভাই, বোনেদের কাজ দেখব, কিছু শেখারও চেষ্টা করব।” দক্ষিণ কলকাতায় বাহারি গয়না বিপণি খোলা রূপান্তরকামী পুরুষ আকাশ দে বা বাড়িতে মুখরোচক খাবারের হেঁশেল খোলা সময় কর্মকারও তাঁদের সৃজনশীলতার সম্ভার নিয়ে হাজির হচ্ছেন। অনেক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাই ইদানীং রূপান্তরকামীদের সহায়তার শরিক। আশা, তাদেরও নজর টানবে এ হেন উদ্যোগ।

অন্য বিষয়গুলি:

Transgender Transgender Rights Empowerment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE