Advertisement
E-Paper

কলকাতার একটি রুটেই চলবে ট্রাম, তা-ও জয় রাইড হিসাবে, হাই কোর্টকে জানাবে পরিবহণ দফতর

এই মুহূর্তে মাত্র তিনটি রুটে যাত্রীরা ট্রাম পরিষেবা পান। টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-ধর্মতলা এবং ধর্মতলা-শ্যামবাজার। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুরের মধ্যে যে লাইনটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে, সেই লাইনটিকেই ফের চালু করতে চাইছে পরিবহণ দফতর।

Trams will run on only one route in Kolkata, Transport Department will convey High court

সঙ্কটে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পরিবহণ পরিষেবা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৯
Share
Save

কলকাতায় মাত্র একটি রুটিই চলবে ট্রাম পরিষেবা। কলকাতা হাই কোর্টকে তাদের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানাতে চলেছে পরিবহণ দফতর। শহরে ট্রাম পরিষেবা চালু রাখার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলা করেছে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছিল আদালত। হাই কোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই একটি রুটের কথা জানাতে চলেছে পরিবহণ দফতর। এই মুহূর্তে মাত্র তিনটি রুটে যাত্রীরা ট্রাম পরিষেবা পান। টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-ধর্মতলা এবং ধর্মতলা-শ্যামবাজার। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুরের মধ্যে যে লাইনটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে, সেই লাইনটিকেই ফের চালু করতে চাইছে পরিবহণ দফতর। সূত্রের খবর, ওই লাইনটিকে সঙ্কুচিত করে, জয় রাইড হিসাবে কলকাতায় ট্রাম চালাতে চায় পরিবহণ দফতর।

কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, শহরের জনসংখ্যার তুলনায় রাস্তা অনেক কম। প্রতি দিন যান নিয়ন্ত্রণ করতে কালঘাম ছুটে যায় কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের। তাই ট্রাম তুলে দিয়ে শহরকে আরও গতিশীল করে তোলার দাবি দীর্ঘ দিনের। কলকাতা প্রশাসনের এই দাবি মেনে এত দিনে সেটাই হতে চলেছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুরের মধ্যে চলাচলকারী ট্রাম পরিষেবাটি দীর্ঘ কাল ধরে বন্ধ। আমফান ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ওই রুটে ট্রাম চলাচল করার জন্য তৈরি পরিকাঠামো পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল। সেই থেকে ওই রুটটি পুরোপুরি বন্ধ। কলকাতা শহরে অন্য রুটগুলি থেকে ট্রাম তুলে দিয়ে আপাতত এই একটি রুটের উপরেই মনোনিবেশ করতে চায় পরিবহণ দফতর। ট্রামের মতো পরিবেশবান্ধব ও দূষণহীন যান শহর থেকে তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সাগ্নিক গুপ্ত বলেন, "পৃথিবীর ৪৩০টি দেশে নতুন করে ট্রাম পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। কারণ, এত কম খরচে পরিবেশবান্ধব ও দূষণহীন যান মেলা সম্ভব নয়। অথচ আমাদের রাজ্য সরকার ট্রাম পরিষেবাটাই তুলে দিতে চাইছে। বলা হচ্ছে, মন্থর গতির ট্রাম শহরের ট্র্যাফিক জ্যামের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটি ট্রামের দু’টি কামরা ১২০ জন মানুষকে পরিবহণ পরিষেবা দিতে পারে। অথচ সেই ট্রাম তুলে দিয়ে কুড়িটি অটো রাস্তায় নামিয়ে ১২০ জন মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। একটি ট্রাম রাস্তায় বেশি যানজট করে, না কি কুড়িটি অটো যানজট করে? এমন প্রশ্ন প্রশাসন না বুঝুক, কলকাতার বাসিন্দারা নিশ্চয়ই জানেন।" উল্লেখ্য, পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ট্রাম তুলে দিয়ে পরিবেশ বান্ধব ই-বাস চালানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফে। কিন্তু এমন সিদ্ধান্তের পর ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রশ্ন, যেখানে নামমাত্র খরচে ট্রাম পরিষেবা বহাল রেখে পরিবেশ রক্ষা করার সুযোগ রয়েছে। সেখানে কেন কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ই-বাস এনে সরকারি খরচ বাড়ানো হচ্ছে?

উল্লেখ্য, কোথাও উড়ালপুল নির্মাণ, কোথাও বা মেট্রো রেল তৈরির নামে শহরের একঝাঁক ট্রাম রুট উঠে গিয়েছে বছর ২০ আগেই। আপাতত কলকাতার ট্রাম-প্রেমীরা শহরে ট্রাম পরিষেবা বহাল রাখতে তাকিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের সিদ্ধান্তের দিকে। ২০২৩-এ ১৫০ বছর পূর্ণ করেছে, আর ঠিক তার পরের বছরেই অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগতে শুরু করেছে কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী পরিবহণ পরিষেবা।

Tram Kolkata West Bengal Transport Department Calcutta High Court

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}