শুক্রবার থেকে ৩ দিনে সেখানো হবে কালীপুজোর খুঁটিনাটি নিয়ম।
দুর্গাপুজোর পরে কালীপুজোর প্রশিক্ষণ শিবির বসছে কলকাতায়। এ বার দুর্গাপুজোর পদ্ধতি শেখাতে শিবির হয়েছিল শোভাবাজার রাজবাড়ির ঠাকুরদালানে। আর কালীপুজোর প্রশিক্ষণ হবে জোড়াসাঁকোর দাঁ বাড়ির মণ্ডপে। আয়োজক একই সংস্থা— সর্বভারতীয় প্রাচ্য বিদ্যা অ্যাকাডেমি। প্রধান প্রশিক্ষক শোভাবাজার রাজবাড়ির সভাপণ্ডিত জয়ন্ত কুশারী। তিনি জানান, শুক্রবার থেকে ৩ দিনে সেখানো হবে কালীপুজোর খুঁটিনাটি নিয়ম।
পুজো কি সত্যিই এত নিয়ম মেনে করতে হয়? রামকৃষ্ণ তো সাধারণের মতো করেই মা কালীর আরাধনা করতেন! এমন প্রশ্নের জবাবে জয়ন্ত বলেন, ‘‘সাধারণ পূজারী আর সাধকের সঙ্গে মিল খোঁজা ঠিক হবে না। কারণ, অনেক সাধনার মধ্য দিয়ে রামকৃষ্ণ সাধক হয়ে উঠেছিলেন।’’ প্রথম জীবনে রামকৃষ্ণও পুজো পদ্ধতির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন জয়ন্ত। তিনি বলেন, ‘‘তিনি যখন গদাধর চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তখন দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পুজোর তালিম নিয়েছিলেন। ব্যাকরণ কৌমুদী থেকে পুরোহিতদর্পণ থেকেই পুজো শিখেছিলেন। দিনের পর দিন টোলে অধ্যয়ন করেছেন। তার পরে পুজো শুরু করেন।’’
৩ দিনের এই শিবিরে কী কী শেখানো হবে পুরোহিতদের? জয়ন্ত বলেন, ‘‘অন্য পুজোর তুলনায় কালীপুজোয় নিয়মের অনেক ফারাক। সেটা বোঝাতে সবার আগে কালীর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সঠিক উপচার ও পদ্ধতি না জানলে মায়ের পুজো করা ঠিক নয়। শক্তিপুজোয় ত্রুটি থাকলে বিপর্যয় আসতে পারে। সেই কারণেই এই প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আগে টোল, চতুষ্পাঠীতে শেখানো হত। কিন্তু এখন তো তার অস্বিত্ব নেই বললেই চলে। তাই এমন প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজন দরকার।’’ জয়ন্ত জানিয়েছেন, সঠিক মন্ত্রোচ্চারণ থেকে উপচার, ন্যাস, মুদ্রা ইত্যাদি শেখানো হবে পুরোহিতদের। বাহ্যিক উপচার, মানস উপচার, প্রাণ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি সবেতেই দুর্গা বা অন্য দেবদেবীর পুজোর সঙ্গে কোথায় ফারাক সেটাও শেখানো হবে।
শুধু পুরোহিতদেরই নয়, পুজো উদ্যোক্তাদেরও এমন প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন জয়ন্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শিবিরে যজমান মানে পুজো উদ্যোক্তা এবং পুরোহিতের আচরণ কেমন হওয়া উচিত সেটাও শেখানো হয়। তাই পূজারীদের সঙ্গে পুজো উদ্যোক্তাদেরও এই প্রশিক্ষণ শিবিরে ডাকা হয়েছে।’’ পুজোর জন্য কী কী সামগ্রী দরকার এমন কেমন ভাবে জোগাড় করতে হবে সেটাও শেখানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিছু দিন আগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কথায় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। মা কালী ‘হুইস্কি’ খান বলে মন্তব্য করেছিলেন মহুয়া। সেই প্রসঙ্গে জয়ন্ত বলেন, ‘‘আমরা পুজোর জোগাড়ে মদের কথা শেখাব না। কারণ, আমি মনে করি এটা রুচির বিষয়। কোনও সন্তান মদ্যপান করলে তা কি তিনি নিজের মাকে দেন? তবে মা কালীকেই বা দেবেন কেন?’’ কিন্তু শাস্ত্রে তো কালীপুজো মদ বা কারণ লাগে বলে অনেকে দাবি করেন। এই প্রসঙ্গে জয়ন্ত বলেন, ‘‘কালীপুজো হয় দক্ষিণাচার আর বামাচার পদ্ধতিতে। দক্ষিণাচারীরা সম্বিধা অর্থাৎ সিদ্ধি ব্যবহার করেন। আর বামাচারিরা আসব অর্থাৎ সুরা ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে তন্ত্রসার বলছে, সম্বিদাই বড়। সেটা দিলেই হয়। সুতরাং, মদ নয়, আমরা পুজোর উপচারে সিদ্ধি রাখার কথাই বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy