আরম্ভ: অবশেষে টালা সেতুতে শুরু হল যান চলাচল। তবে সেতুতে এখনও বাস, লরির মতো ভারী গাড়ি ওঠা বন্ধ রয়েছে। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
উদ্বোধনের দু’দিনের মাথায়, শনিবার সকাল থেকে যান চলাচল শুরু হল টালা সেতু দিয়ে। উদ্বোধনের দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রথম কয়েক দিন দেখে নিয়ে টালা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু করা হবে। সেই মতোই এ দিন টালা সেতুর দু’টি ফ্ল্যাঙ্ক দিয়ে ছোট গাড়ি চালানো হয়েছে। আগামী ২৯ তারিখ থেকে টালা সেতু দিয়ে বাস এবং ৬ অক্টোবর থেকে মালবাহী গাড়ি চালানো হতে পারে বলে খবর। তবে এর মধ্যেই সেতুর অবশিষ্ট কাজ চালিয়ে যাওয়া হবে বলে সেটির নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে শ্যামবাজারের দিক থেকে প্রথম গাড়ি ছাড়া হয় টালা সেতুতে। এর কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই গাড়ি ছাড়া হয় পাইকপাড়ার দিক থেকে। বিকেলের পরে খুলে দেওয়া হয় টালা সেতু থেকে চিৎপুরের দিকে নামার ফ্ল্যাঙ্কটিও। তবে এর জন্য সেতু সংলগ্ন এলাকার যান চলাচলের কোনও দিক পরিবর্তন হয়নি বলেই ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার হলেও টালা সেতু খুলে যাওয়ার সুফল এ দিন থেকেই পাওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি। তারা জানাচ্ছে, দিনের ব্যস্ত সময়ে টালা সেতুর বিকল্প হিসাবে এত দিন ব্যবহার হওয়া রাস্তাগুলিতে যে গাড়ির চাপ দেখা যেত, তার অনেকটাই এ দিন কম ছিল। সোমবার থেকে স্পষ্ট হবে, টালা সেতু খুলে যাওয়ায় অন্য দিকে গাড়ির চাপ কতটা কমল।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরুর পর থেকে কলকাতামুখী গাড়ি বি টি রোড, রাজা মণীন্দ্র রোড এবং বেলগাছিয়া সেতু হয়ে শ্যামবাজারের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছিল। চিৎপুর লকগেট ব্যবহার করা হচ্ছিল নির্দিষ্ট সময় অন্তর দ্বিমুখী রাস্তা হিসাবে। বেলগাছিয়া সেতু, রাজা মণীন্দ্র রোডের পাশাপাশি কলকাতা থেকে বি টি রোডের দিকে গাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল প্রাণকৃষ্ণ মুখার্জি রোড বা কালীকুমার ব্যানার্জি লেন হয়ে কাশীপুর রোড ধরে।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বেলগাছিয়া সেতুতে গিয়ে দেখা গেল, গাড়ির চাপ যথেষ্ট কম। ছোট গাড়ি, বাস এবং মালবাহী গাড়ির জট শুক্রবারও ওই পথে দেখা গিয়েছিল। এ দিন তার কিছুই ছিল না। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন কলকাতা স্টেশন থেকেই গাড়ি বেরোচ্ছিল মাত্র কয়েক মিনিট সিগন্যালে অপেক্ষা করে। একই ভাবে ফাঁকা ছিল কাশীপুর রোড বা চিৎপুর সেতু। তবে টালা সেতুতে উঠতে না পারা কলকাতামুখী বাস চিৎপুর লকগেট দিয়ে এনে টালা সেতুর সামনের ব্যারাকপুর সেতু দিয়ে বার করে শ্যামবাজার পাঁচমাথা মোড়ের দিকে পাঠানো হচ্ছিল। স্থানীয় এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘গত আড়াই বছর ধরে যে যানজট দেখা অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। তার প্রায় কিছুই নেই।’’ যান নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বললেন, ‘‘চাপ অনেক কমেছে। এটা আরও বোঝা যাবে সোমবার।’’
ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, সেতু উদ্বোধনের পরে আগামী কয়েক দিন চাপ থাকবে ঘুরতে আসা গাড়ির। এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টের মন্তব্য, ‘‘এমন অনেকেই থাকবেন, যাঁরা সেতুর উপর দিয়েই যেতে হবে ভেবে বেড়াতে চলে আসবেন। কিছু দিন পরে এই চাপও কমে যাবে।’’
এক পুলিশকর্মীর আবার দাবি, চিৎপুর লকগেট দিয়ে আসা বাস ব্যারাকপুর সেতু দিয়ে বার করতে এখন ট্র্যাফিক পুলিশকে মোতায়েন থাকতে হচ্ছে টালা সেতুতে গাড়ি ওঠার মুখে। সোমবারেও এমন করতে হলে সেতুর মুখে যানজট হওয়ার আশঙ্কা হবে। শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তারাই বলছেন, ‘‘এরও সমাধান রয়েছে। এই রাস্তায় না এসে বাস রাজবল্লভপাড়া দিয়ে ঘুরিয়ে দিলেও হয়। তবে দিনকয়েকের মধ্যেই টালা সেতুতেও বাস উঠবে। তখন আরও অকেজো হয়ে পড়বে বিকল্প রাস্তা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy