Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Murder

চড়ের বদলা নিতেই ‘সুপারি কিলার’ লাগিয়ে খুন হাওড়ায়

গত শুক্রবার হাওড়ার ঘুসুড়িতে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছিল শীতলার স্নানযাত্রা উপলক্ষে। সে দিন দুপুরেই গুলি করে খুন করা হয় স্থানীয় দুষ্কৃতী বিশালকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২১ ০৭:০৫
Share: Save:

এলাকা দখল নিয়ে দু’পক্ষের লড়াই। আর তার জেরেই গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রীতিমতো ‘সুপারি কিলার’ লাগিয়ে খুন করা হয়েছিল বিশাল মাহাতোকে।

গত শুক্রবার হাওড়ার ঘুসুড়িতে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছিল শীতলার স্নানযাত্রা উপলক্ষে। সে দিন দুপুরেই গুলি করে খুন করা হয় স্থানীয় দুষ্কৃতী বিশালকে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে রবিবার রাতে ছয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে মালিপাঁচঘরা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম: খুরশিদ আনসারি ওরফে পিন্টু, আনোয়ারুল হক ওরফে দুলারা, নেহাল আনসারি ওরফে মনু, শাহিদ আনসারি, রোহিত জয়সওয়াল এবং বিক্রম গুপ্ত। সোমবার তাদের হাওড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক সবাইকে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা সকলেই জেরার মুখে খুনের কথা কবুল করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশালের বাবা বিজয় মাহাতোও ২০১২ সালে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়। বিজয় ছিল ওই এলাকার কুখ্যাত এবং প্রভাবশা‌লী দুষ্কৃতী। তার সঙ্গে অপরাধ জগতের নানা ধরনের লোকজনের ওঠাবসা ছিল। বিশালও তার বাবার পথ ধরেছিল। যদিও তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিক্রম গুপ্ত নামে ওই এলাকার আর এক উঠতি দুষ্কৃতী। সে-ও একটি নিজস্ব দল তৈরি করে। তা নিয়েই বিশাল ও বিক্রমের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই বেধে যায়।

পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের মধ্যে সাম্প্রতিক গোলমালটি শুরু হয় মাস দেড়েক আগে। বিক্রম এক দিন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিশালের বাড়ির সামনে এসে তার বাবা বিজয়ের নাম ধরে গালিগালাজ করে। ঘুসুড়িতে সোনার দোকান এবং স্থানীয় বজরংবলী বাজারে লোহার ব্যবসা রয়েছে বিক্রমের। বিশাল তার বাবার নামে গালিগালাজ করা হয়েছে শুনে সরাসরি চড়াও হয় বিক্রমের ঘুসুড়ির দোকানে। সেখানে দু’জনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলার সময়েই বিশাল বিক্রমকে চড় মারে বলে জেনেছে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকেই বিক্রম প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ছক কষতে শুরু করে দেয়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিশাল ও বিক্রমের মধ্যে শত্রুতা থাকলেও দুই বাড়ির মধ্যে আগে থেকেই যাওয়া-আসা ছিল। কারণ, দু’জনের দুই বোন ছিলেন পরস্পরের পুরনো বন্ধু। সেই কারণে বিশাল ও বিক্রমের মধ্যে গোলমাল হলেই বোনেরা দু’পক্ষকে বুঝিয়ে অশান্তি মেটানোর চেষ্টা করতেন।

পুলিশের দাবি, এ বার অবশ্য বোনেদের চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। কারণ, বিক্রম তত দিনে বিশালকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছিল এলাকারই আর এক দুষ্কৃতী রোহিত জয়সওয়ালের সঙ্গে। রোহিতই বিক্রমকে মনু আনসারি নামে এক ভাড়াটে খুনির কাছে নিয়ে যায়। বিশালকে খুন করতে মনুর সঙ্গে বিক্রমের প্রায় দু’লক্ষ টাকার চুক্তি হয় বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ।

গত শুক্রবার ঘুসুড়ি-সহ উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় অধিকাংশ পুলিশকর্মীই ব্যস্ত ছিলেন শীতলার স্নানযাত্রার ভিড় নিয়ন্ত্রণের কাজে। আর খুনের পরিকল্পনায় সেই সুযোগকেই কাজে লাগানো হয়। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ-সহ নানা সূত্র ধরে অভিযুক্তদের ধরা হয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা জানতে তদন্ত চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy