ফাইল চিত্র।
দমদমের পুর নির্বাচনে বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানোর অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে উঠেছিল, সেই শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরাই বিরোধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের পাল্টা অভিযোগ তুলে লেক টাউনে ‘প্রতিবাদ-মিছিল’ করলেন সোমবার বিকেলে। যা দেখে বিরোধীদের বক্তব্য, পুরোটাই হাস্যকর ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। তাঁদের প্রশ্ন, বিরোধী দলগুলি সন্ত্রাস করলে শাসকদল ভোটের দিন কিছু বলল না কেন? ভোট ‘শান্তিপূর্ণ’ হয়েছে বলে দাবি করা হল কোন যুক্তিতে?
অন্য দিকে, ভোট-পর্ব মেটার পরে রবিবার রাতে শাসকদলের কর্মীদের মধ্যেই গোলমাল বাধে দক্ষিণ দমদমের ছ’নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সুভাষনগরে। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী তথা ব্যবসায়ী নিন্টু সাহার বাড়িতে হামলা হয়। তাঁর স্ত্রী ছায়া দাসের অভিযোগ, দলেরই শ’খানেক সমর্থক ইট ছুড়ে জানলার কাচ ভাঙে। তাঁর শ্বশুরকেও মারধর করে। আঘাত লেগেছে একরত্তি সন্তানেরও। তাঁর স্বামীর অফিসেও ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ। ছায়ার বক্তব্য, তাঁর স্বামী তৃণমূল কর্মী হওয়া সত্ত্বেও কেন এই হামলা, তা তিনি জানেন না। তাঁর স্বামী ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী অভী দেবনাথের অভিযোগ, নিন্টুর সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের একাংশের বচসা হয়েছিল। মধ্যস্থতা করতে যাওয়ায় তৃণমূল প্রার্থীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট শৈলেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মারধর করা হয়। প্রতিবাদে স্থানীয়দের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু নিন্টুর বাড়ির ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নেই। তাঁর অভিযোগ, নিন্টু তৃণমূল কর্মী হলেও তিনি এক বিরোধী প্রার্থীকে সাহায্য করছিলেন বলে খবর আসছিল। ভোটের দিন উত্তর দমদমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্ত হন সিপিএম প্রার্থী শিবশঙ্কর ঘোষ-সহ একাধিক বাম নেতা-কর্মী। এ দিন শিবশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘বহিরাগতেরা হামলা চালিয়েছে। আমাদের আট-দশ জন কর্মী আহত।’’ বাসিন্দাদের কথায়, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য ওই ওয়ার্ডের সুনাম ছিল আগে।’’ এ দিন বাম প্রার্থীরা ব্যারাকপুরে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। নির্বাচন বাতিলেরও দাবি জানান।
এ দিকে, ভোটের দিন সাংবাদিক-নিগ্রহের ঘটনার সমালোচনা করে উত্তর দমদমের তৃণমূল নেতা তথা প্রার্থী বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।’’ এই ঘটনায় তিন জন গ্রেফতার হয়েছে। দমদম পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী অনিন্দিতা হালদারের অভিযোগ, ছাপ্পার প্রতিবাদ করায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছে তৃণমূল। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা তথা প্রার্থী বরুণ নট্ট বলেন, ‘‘দমদমে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ।’’ দক্ষিণ দমদমের তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ মিত্রেরও একই দাবি। যদিও এ দিনই তাঁদের দল ভোটে সন্ত্রাসের পাল্টা অভিযোগ তুলে মিছিল করেছে।
সিপিএম নেতা পলাশ দাস বলেন, ‘‘এর থেকে হাস্যকর অভিযোগ কিছু হয় না।’’ বিজেপি নেতা অরিজিৎ বক্সী বলেছেন, ‘‘অবাধে রিগিং হয়েছে।’’ কংগ্রেস নেতা তাপস মজুমদারের কথায়, ‘‘বিধানসভায় বিপুল ভোটে জিতেও ভোটারদের উপরে কোনও আস্থা নেই তৃণমূলের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy