প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমে বিধাননগরে আচমকাই চরমে উঠেছে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল। দু’পক্ষের তরফেই পুলিশের কাছে পাঁচটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে খবর। এই ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ বারাসত সংসদীয় জেলার নেতৃত্ব। আগামী বৃহস্পতিবার জেলার বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে এ নিয়ে বিধাননগরের নেতাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে চান বলে জানা গিয়েছে।
বারাসত সংসদীয় জেলার মধ্যে বিধাননগর, রাজারহাট-গোপালপুর এবং রাজারহাট-নিউ টাউন-সহ সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। আবার বিধাননগর পুরসভাও তৈরি হয়েছিল ওই তিন বিধানসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড নিয়েই। পুজোর মধ্যে বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রে, সল্টলেকের সিই ব্লকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির সঙ্গে ব্লকের যুগ্ম সম্পাদক উদয়ন সরকারের ছবি ছেঁড়া হয়।
নিজেকে পুরনো তৃণমূলী বলে দাবি করা উদয়নবাবু স্থানীয় ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর সুপ্রিয় চক্রবর্তী ও বিধাননগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুজিত বসুর ছেলে সমুদ্র বসুর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। আবার উদয়নবাবু তৃণমূলের কেউ নন বলে দাবি করে কোঅর্ডিনেটর সুপ্রিয়বাবু এবং বিধাননগরের টাউন তৃণমূলের সভাপতি তুলসী সিংহরায় পুলিশে পাল্টা অভিযোগ করেন। সিই ব্লক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুধীর সাহাও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় মহলের খবর, উদয়নবাবু সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরা সব্যসাচী দত্তের শিবিরের লোক বলেই পরিচিত। অন্য দিকে, সুপ্রিয়বাবু কিংবা তুলসীর মতো স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা মন্ত্রী সুজিতবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই সকলে জানেন। বিধাননগরের রাজনীতিতে সুজিত বসু ও সব্যসাচী দত্তের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সর্বজনবিদিত।
তুলসী বলেন, ‘‘এর পরে তো দুষ্কৃতীরাও নেত্রীর ছবির সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে হোর্ডিং ঝোলাবে। দু’-এক জায়গায় এমনটা হয়েছেও। জেলা নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছি, হোর্ডিংয়ে উচ্চতর নেতৃত্বের সঙ্গে কারা ছবি দিতে পারবেন, তার একটা গাইডলাইন তৈরি করে পাঠাতে।’’
এক দিকে সল্টলেকে যখন এই ছবি, তখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সলতে পাকাচ্ছে বিধাননগর পুর এলাকার রাজারহাটের দিকেও। রাজারহাট-গোপালপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কোঅর্ডিনেটর রতন মৃধা। ওই ওয়ার্ডের পূর্বতন কাউন্সিলর শিবু ভান্ডারী সব্যসাচীবাবুর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে রতনকে সেখানকার কোঅর্ডিনেটর করা হয়। সূত্রের খবর, রতনের নামে পুলিশের খাতায় অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করে গত অগস্ট মাসে বিধাননগর পুরসভায় স্মারকলিপি জমা দিয়ে তাঁকে অপসারণের দাবি তোলে স্থানীয় কয়েকটি ক্লাব। রতন আবার নিউ টাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় এবং রাজারহাটের যুব নেতা দেবরাজ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বলেই খবর।
রতনের দাবি, ‘‘এটা চক্রান্ত। কারা করাচ্ছে, তা জানি। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই সমস্ত সই জাল। ক্লাবগুলিও এ সব নিয়ে ক্ষুব্ধ। তারাও প্রতিবাদ করবে।’’
আবার মাস দেড়েক আগে বিধাননগরের একাধিক নেতা-নেত্রীর নামে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বেনামে একটি অভিযোগপত্র জেলা নেতৃত্ব-সহ তৃণমূলের উপর মহলের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও খবর।
বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় সোমবার অবশ্য দাবি করেন, তাঁদের দলে কোনও রকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তিনি বলেন, ‘‘সবাই নেত্রীকে দেখেই দল করেন। বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে সবাইকেই ডাকা হয়েছে। সেখানে সংগঠনের বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy