প্রতীকী চিত্র।
আইএস জঙ্গি পরিচয় দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হল দক্ষিণ হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদারকে। ঘটনার পরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বিধায়কের বাড়ির সামনে। হুমকি ফোন আসার কথা স্বীকার করলেও ব্রজমোহনবাবু আইএস-এর বিষয়টি মিথ্যে বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
‘‘দশ লক্ষ টাকা দে, না হলে গোটা পরিবারকে খুন করে দেব।’’— ভাঙা হিন্দিতে এই কথা বলে গত মঙ্গলবার, ভাইফোঁটার দিন সকালে হুমকি ফোন আসে ৭৯ বছরের জাতীয় শিক্ষক পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান ওই বিধায়কের কাছে।
পুলিশ জানায়, গত ২৯ অক্টোবর ব্রজমোহনবাবুর মোবাইলে প্রথম ফোনটি আসে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে। প্রথম ফোনের দু’মিনিটের ভিতরেই একই কথা বলে আরও দু’বার ফোন করা হয়। ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে ব্রজমোহনবাবুকে সপরিবার খুনের হুমকি দেওয়া হয়।
ব্রজমোহনবাবু বৃহস্পতিবার তাঁর প্রিয়নাথ ঘোষ লেনের বাড়িতে বসে বলেন, ‘‘ফোনটা ১০ বেজে ৫ মিনিট থেকে ২ মিনিট অন্তর তিন বার এসেছিল। প্রথম বার কী বলছে বুঝতে না পেরে আমি আমার নিরাপত্তারক্ষীকে ফোনটা দিয়ে দিই। তাঁর কাছেই শুনি ফোনের অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে আইএস জঙ্গি বলে পরিচয় দেয় এক ব্যক্তি।’’
বর্ষীয়ান বিধায়ক জানান, ফোন আসার পরে তিনি কোনও গুরুত্ব দেননি। তবে ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের কাছে জানিয়েছিলেন। ব্রজমোহনবাবু বলেন, ‘‘আমি ভয় পাইনি। যারা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে ফোন করে তারা সাধারণত ভুয়ো হয়। দলমত নির্বিশেষে সবাই জানে আমি অহিংস রাজনীতি করি। কারও সঙ্গে আমার কোনও বৈরিতা নেই। তবে যে-ই ফোনটা করুন তাঁর ভাষাজ্ঞান নেই। তাঁকে ভাষা ব্যবহার শিখতে হবে।’’
হুমকি ফোনের বিষয়টি নিয়ে চ্যাটার্জিহাট থানার পাশাপাশি হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারাও তদন্ত শুরু করেছেন। পুলিশের ধারণা, দু’-এক দিনের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যাবে। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের আধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে নিজের আইডি পাল্টে দেওয়া হয়েছে। কারণ যে ব্যক্তির ফোন থেকে ওই ফোনটি এসেছিল আসলে তিনি ফোনটি করেননি। শুধু তাঁর নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। সে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।’’
হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি (সদর) তথা মন্ত্রী অরূপ রায় ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে কড়া ব্যবস্থা নিতে পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছেন। অরূপবাবু বলেন, ‘‘খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। পুলিশ তদন্ত করছে। যে-ই করে থাকুক পুলিশ তাকে ধরে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy