Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Kunal Ghosh

Kunal Ghosh: শীর্ষনেতৃত্বের হস্তক্ষেপে কল্যাণ-কুণাল বিতর্কে ইতি? ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ্ড’ টুইটে তারই ইঙ্গিত

কুণাল-কল্যাণ বিতণ্ডা যখন চরমে, তখন শুক্রবার ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ্ড’!

শীর্ষনেতৃত্বের পরামর্শ মেনেই দু’পক্ষের মুখ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত।

শীর্ষনেতৃত্বের পরামর্শ মেনেই দু’পক্ষের মুখ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:২৮
Share: Save:

তাহলে কি মধুরেণ সমাপয়েৎ? শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইট করেছেন, অধ্যায় সমাপ্ত (‘চ্যাপ্টার ক্লোজ্ড’)। সঙ্গে একটি হাস্যের ইমোজি। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, তাঁর সঙ্গে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলতি বাগ্‌যুদ্ধে ইতি পড়ল। জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু কোনও পক্ষই এর বেশি কিছু প্রকাশ্যে বলতে চাইছেন না।

তবে তৃণমূলের নেতারা একান্তে জানাচ্ছেন, কুণাল-কল্যাণ বাগ্‌যুদ্ধ যে পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তাতে সামগ্রিক ভাবে দলের ভামূর্তির ক্ষতি হচ্ছিল। পরিস্থিতি দেখে হস্তক্ষেপ করেন শীর্ষনেতৃত্ব। সেই পরামর্শ মেনেই দু’পক্ষ মুখ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠিক হয়েছে, কারও কিছু বলার থাকলে দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে হবে। কিন্তু প্রকাশ্যে মুখ খুলে বিবৃতি দেওয়া চলবে না।

সাম্প্রতিক করোনা আবহে দু’মাস রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কর্মসূচি বন্ধ রাখার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যক্তিগত’ মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার মধ্যে তুমুল বিতণ্ডা শুরু হয়েছিল। প্রথমে বুধবার কল্যাণ অভিষেকের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তারঁ বক্তব্যের সারমর্ম ছিল— দলের একজন পদাধিকারী কী করে সর্বসমক্ষে ‘ব্যক্তিগত’ মন্তব্য করতে পারেন! কল্যাণ আরও বলেছিলেন, তাঁরও এমন অনেক ‘ব্যক্তিগত’ মতামত রয়েছে। তা হলে তিনিও সেগুলি প্রকাশ্যে বলতে শুরু করবেন!

কল্যাণের সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার কুণাল বলেছিলেন, ‘‘দলের সর্বাধিনায়িকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই রয়েছেন অভিষেক। অভিষেকের মতো নেতা কিছু বললে দলের সাধারণ সৈনিক হিসেবে তা আমাদের চুপ করে শোনা উচিত। কোনও মন্তব্য করার আগে সব দিক ভেবে দেখা উচিত।’’ পত্রপাঠ কুণালকে জবাব দিয়েছিলেন কল্যাণ। বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে নেতা বলে মানি না। যে যার পদে আছে, সেই পদকে সম্মান করি। কিন্তু নেতা বলে মানি না। অভিষেক যদি ত্রিপুরা আর গোয়া জিতিয়ে দেখাতে পারেন, তাহলে ওঁকে নেতা বলে মেনে নেব।’’ একই সঙ্গে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিলেন দলের মুখপাত্র কুণালের দিকেও।

প্রসঙ্গত, কল্যাণের ঘনিষ্ঠ শিবির মনে করে, রাজ্য সরকার যখন গঙ্গাসাগর মেলা বা পুরসভার ভোট করানোর জন্য আদালতে গিয়ে তাদের বক্তব্য জানাচ্ছে, তখন শাসকদলেরই এক শীর্ষ পদাধিকারী (অভিষেক) সেই পদক্ষেপের পরিপন্থী কোনও অভিমত প্রকাশ্যে জানালে (তা যতই ‘ব্যক্তিগত’ বলে আখ্যা দেওয়া হোক) সেটি প্রকারান্তরে রাজ্য সরকারকেই (তথা মুখ্যমন্ত্রীকে) চ্যালেঞ্জ করা। সেই কারণেই কল্যাণ প্রকাশ্যে অভিষেকের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছিলেন।

তার পরেই ময়দানে নামেন কুণাল এবং দু’পক্ষের বিতণ্ডা চরমে ওঠে। সূত্রের খবর, কুণাল-কল্যাণের তোপ এবং পাল্টা তোপের বিষয়টি সম্পর্কে মমতাকে অবহিত করা হয়। দু’পক্ষের বিরোধ মেটাতে অবশ্য তার আগেই আসরে নেমেছিলেন এক প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ এবং এক মন্ত্রী। তাঁরা উভয়পক্ষের সঙ্গেই ফোনে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন। যদিও কল্যাণ তাতে খুব একটা রাজি ছিলেন না। কুণালের বক্তব্যের একটি অংশ নিয়ে তাঁর প্রভূত আপত্তি ছিল।

তার মধ্যেই দলনেত্রী বিষয়টি দেখার ভার দেন দলের মহাসচিব তথা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। গোলমাল মেটাতে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেন দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান তথা বর্ষীয়ান নেতা পার্থ। তার পরেই দু’পক্ষ রণে ভঙ্গ দিয়েছে বলে খবর। ঠিক হয়েছে, সিনিয়র নেতাদের কারও কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলে তা জানাতে হবে দলনেত্রীকেই। তিনিই বিষয়টি বিহিত করবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy