Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
TMC

TMC: নির্দলের দাপটে দুই ওয়ার্ডে প্রচারে নিষ্প্রভ তৃণমূল

বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে তৃণমূল এগিয়ে ছিল।

বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে তৃণমূল এগিয়ে ছিল। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:০৬
Share: Save:

পুরভোটের ফলাফল কী হবে, তা জানতে এখনও দিনকয়েকের অপেক্ষা। তবে দক্ষিণ দমদমের দু’টি ওয়ার্ডে প্রচারের নিরিখে শাসকদলই ছিল কিছুটা নিষ্প্রভ।

এ বারের পুর নির্বাচনে উলট-পুরাণের এমনই ছবি দেখা গিয়েছে ৯ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। বাসিন্দাদের মতে, যা অভূতপূর্ব। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী রীতা রায়চৌধুরী ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ রায়চৌধুরীর (ট্যাবলা) স্ত্রী এবং এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। আবার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় (ফুচু) দমদমের পরিচিত তৃণমূল নেতা তথা বিদায়ী পুর বোর্ডের চেয়ারম্যান পরিষদ সদস্য। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, এই নির্দল প্রার্থীদেরই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বারে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন টুম্পা দাস ঘোষ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে অজয় মুখোপাধ্যায়। এলাকাবাসীর বক্তব্য, এই দুই তৃণমূল প্রার্থীরই প্রচারের জৌলুস তুলনায় অনেকটা নিষ্প্রভ ছিল। এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে দেওয়াল লিখনে প্রার্থীদের নামটুকু পর্যন্ত দেখা যায়নি। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, ‘‘যা নির্দল, তা-ই তৃণমূল। গোটা বিষয়টাই লোক-দেখানো।’’

৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী টুম্পার প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট জিৎ চক্রবর্তীর দাবি, তাঁরা প্রচার করেছেন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অজয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ভোটের ফলাফলেই সব প্রমাণ হয়ে যাবে। আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে বেশি জোর দিয়েছিলাম।’’ সিপিএম নেতা পলাশ দাসের বক্তব্য, ‘‘পুরোটাই লোক-দেখানো। আশীর্বাদের হাত বা পরোক্ষ মদত না থাকলে এমনটা হয় না। আসল কথা হল, ক্ষমতা ধরে রাখা।’’

বিরোধীদের একাংশের মতে, দেবাশিসবাবুর বাড়ি দমদমের একটি ‘দর্শনীয়’ স্থান। সেই বাড়ির বৈভব নিয়ে অনেক প্রচারও রয়েছে। আবার পুরসভার পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবেও দেবাশিসবাবুর নাম নিয়ে জল্পনা চলছিল। নির্বাচনের আগেই দল তাঁকে বহিষ্কার করে। সুরজিৎবাবুর স্ত্রীর নাম প্রথমে তালিকায় থাকলেও পরে বাদ যায়। সুরজিৎ নিজে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। আবার তাঁরই পুরনো ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী তাঁর স্ত্রী। কারণটা সহজেই অনুমেয়। বিজেপি নেতা অরিজিৎ বক্সীর কথায়, ‘‘এ সব যে লোক-দেখানো, সকলেই জানেন। যে ভাবে হোক, ক্ষমতায় থাকতে হবে। আসলে পুরোটাই তৃণমূলের পারিবারিক বিষয়।’’ যদিও অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ‘‘দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে বিরোধীদের লাভ হবে না।’’ যদিও তাঁরা কেউই ওই দু’টি ওয়ার্ড নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নির্দল প্রার্থী দেবাশিসবাবুর অনুগামীদের একাংশের বক্তব্য, কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগে থেকেই দেবাশিসবাবু এক জন সফল ব্যবসায়ী। তাঁর বিষয়-আশয় থাকতেই পারে। তা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভুল প্রচার ছড়ানো হচ্ছে।

রীতা প্রার্থী না হওয়ায় স্থানীয় মহলেও ক্ষোভ রয়েছে। তাঁর অনুগামীদের প্রশ্ন, আগে বলা হয়েছিল, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে টিকিট পাবেন না। কিন্তু পরে দেখা যায়, সেই নিয়ম সর্বত্র মানা হয়নি। তা হলে দক্ষিণ দমদমে ব্যতিক্রম হল কেন? ওই দুই ‘বহিষ্কৃত’ নেতা-নেত্রীর নেতৃত্বে দুই ওয়ার্ডে গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে ছিল বলে দাবি। সুরজিৎ ও তাঁর স্ত্রী অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, তাঁরা যা বলার নির্বাচনের পরে বলবেন। দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করতে চাননি। যদিও তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, দলের প্রতীকই শেষ কথা। প্রার্থীকে জেতানোই একমাত্র কর্তব্য।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট জায়গার কথা বলতে পারব না। কিন্তু যেখানে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদিত তালিকার বাইরে নির্দল কেউ প্রার্থী হয়েছেন অথবা সেই নির্দলকে দলের কেউ সমর্থন করেছেন, সেখানে বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বের নজরে রয়েছে। দল প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Dum Dum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy