প্রতীকী ছবি।
খুনের ধরন দেখেই চোখ কপালে উঠেছিল পুলিশের। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পরেও বিস্ময় কাটছে না তদন্তকারী অফিসারদের। ব্যারাকপুরের কলেজ ছাত্র আমন যাদবকে খুনের ঘটনায় পুলিশ পাকড়াও করেছে তারই তিন ‘ঘনিষ্ঠ’ বন্ধুকে। পুলিশ আরও বিস্মিত খুনের পরে তাঁদের চালচলন নিয়ে।
ধৃত তিন জনের মধ্যে এক জন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র, এক জন দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া, অন্য জন লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে আমনকে। ফোন করে ডেকে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে মাথায় আঘাত করে, গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয় আমনকে। জেরায় তিন জনেই দোষ স্বীকার করে নিয়েছে।
কিন্তু কেন এমন নৃশংস ভাবে অভিযুক্তেরা তাঁদের বন্ধুকে খুন করল, তার ঠিক জবাব এখনও পায়নি পুলিশ। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে।’’ ধৃতেরা জানিয়েছে, আমন তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত, গালাগালি দিত।
শুক্রবার থেকে নিখোঁজ থাকার পরে রবিবার ব্যারাকপুরের মণিরামপুরের একটি পুকুরে বস্তাবন্দি দেহ মেলে আমনের। তার হাত-পা বাঁধা ছিল দড়ি দিয়ে। আমনের দিদি পায়েল যাদবের অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ওই তিন বন্ধুই তাঁর ভাইকে ফোন করে ডেকেছিল।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে মণিরামপুরের একটি পরিত্যক্ত গ্যারাজে বসে রাত পর্যন্ত মদ খায় তারা। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ আমন মদের ঘোরে বেহুঁশ হয়ে পড়ে। তার পরেই তাঁকে
খুন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা প্রথমে গামছা দিয়ে আমনের গলায় ফাঁস দেয়। সে নেতিয়ে পড়তেই ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তাঁর মুখও থেঁতলে দেওয়া হয়। আগে থেকেই দড়ি এবং বস্তা এনে রেখেছিল তারা। কোনও ভাবে যাতে সে বাঁচতে না পারে, তার জন্য হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে বস্তায় পুরে পুকুরে ফেলে দেয় তারা। গভীর রাতে বস্তাবন্দি দেহ পুকুরে ফেলার পরে ফের গ্যারাজে ফিরে মদ খায় তিন বন্ধু। ভোরের দিকে আমনের বাইকটি তারা গঙ্গার ধারে রেখে আসে।
আমনের পরিবার থেকে নিখোঁজ ডায়েরি হওয়ার পরে তিন জনকেই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। তখন তাদের আচরণ এতটাই স্বাভাবিক ছিল যে, পুলিশের কোনও সন্দেহ হয়নি। যে ভাবে ঠান্ডা মাথায় পেশাদারদের মতো তারা বন্ধুকে খুন করেছে, তাতে বিস্মিত পোড়খাওয়া পুলিশ অফিসারেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy