বিপজ্জনক: গলিতে ভেঙে পড়ে রয়েছে বাড়িটির কার্নিসের টুকরো। মঙ্গলবার, রবীন্দ্র সরণিতে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
এলাকায় একটি তদম্তের কাজে এসেছিলেন বড়বাজার থানার দুই সাব-ইনস্পেক্টর। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। কাজ শেষে ১৮৭ নম্বর রবীন্দ্র সরণির একটি তেতলা বাড়ির পিছনের গলি দিয়ে হেঁটে ফিরছিলেন তিন জন। তখনই ওই বাড়িটির কার্নিসের কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ে তাঁদের উপরে। মঙ্গলবার দুপুর ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, আহত দুই সাব-ইনস্পেক্টরের নাম পরিমল আদক ও বৈভব সরাফ। জখম সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম বাবুরাম দত্ত। এঁদের মধ্যে পরিমলের অবস্থা গুরুতর। তাঁর মাথাতেই ওই কংক্রিটের চাঙড় ভেঙে পড়ে। পরিমলকে মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং বৈভব ও বাবুরামকে এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় পড়ে রয়েছে চাপ চাপ রক্ত। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কংক্রিটের চাঙড় প্রথমে পরিমলের মাথায় পড়ায় তাঁকে বাঁচাতে যান সঙ্গী দু’জন। তাঁদের উপরেও পড়ে কংক্রিটের টুকরো। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই বসে পড়েন পরিমল। তাঁর হাতে থাকা বইপত্র ও ফাইল ছিটকে পড়ে রাস্তায়। বৈভবের মুখে এবং বাবুরামের কাঁধে আঘাত লেগেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, আহতদের প্রথমে বড়বাজারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরিমলকে মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে এবং অন্য দু’জনকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়।
রবীন্দ্র সরণির যে এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি যথেষ্ট জনববহুল। ফলে কার্নিস ভেঙে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা। যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, তার উল্টো দিকেই রয়েছে একটি ব্যাঙ্ক। এক দোকানদার লালু সাউ বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের কর্মীরা অনেক সময়েই ওখানে দাঁড়িয়ে কথা বলেন। ব্যাঙ্কে অনেক লোকজন যাতায়াত করেন। সুতরাং গলির ভিতর দিয়ে লোকের আনাগোনা লেগেই থাকে। যে ভাবে কংক্রিটের চাঙড় ভেঙে পড়েছে, তাতে আরও বেশি মানুষ আহত হতে পারতেন।’’
১৮৭ নম্বরের ওই বাড়িটি জুড়ে রয়েছে দোকান ও অফিস। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রবীন্দ্র সরণিতে এ রকম বহু বাড়িই রয়েছে, যা পুরসভা থেকে বিপজ্জনক ঘোষণা না করলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলির অবস্থা বেহাল। বাড়ির গা বেয়ে বেড়ে ওঠা বট-অশ্বত্থ আরও দুর্বল করে দিচ্ছে কাঠামো। বেশ কিছু বাড়ির নীচ দিয়ে যাওয়ার সময়ে চাঙড় খসে পড়ার আশঙ্কা তাড়া করে তাঁদের। বাসিন্দাদের কারও কারও মতে, দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ার জন্যই হয়তো এমন অঘটন ঘটল।
তা হলে কেন কলকাতা পুরসভার নজর নেই? এলাকাটি পুরসভার ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহেশ শর্মা বলেন, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডে এই ধরনের বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা তৈরি করে মেয়রকে দ্রুত জমা দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy