এ বারের মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বারের থেকে প্রায় চার লক্ষ কম ছিল। প্রতীকী চিত্র।
চলতি বছরের মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর পরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া। কিন্তু, কলকাতার স্কুলগুলিতে ভর্তির চিত্রটা অনেকটাই অন্য রকম। অন্য বছর একাদশে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর পর থেকেই স্কুলে স্কুলে লম্বা লাইন দেখা যেত। কিন্তু এ বার বেশির ভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষই জানাচ্ছেন, একাদশে তাঁদের যত আসন রয়েছে, তার সব পূরণ হবে কি না তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ী।
প্রসঙ্গত, এ বারের মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বারের থেকে প্রায় চার লক্ষ কম ছিল। তাদের মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে এক লক্ষের কিছু বেশি। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ মনে করছেন, সব মিলিয়ে একাদশে ভর্তির চাপ কমে গিয়েছে। আবার প্রধান শিক্ষকদের একাংশের মতে, সার্বিক ফল খারাপ হওয়ায় স্কুলগুলি বিজ্ঞান, কলা বা বাণিজ্য শাখায় ভর্তির যে যোগ্যতামান রাখছে, তা পূরণ করতে পারছে না অনেক পড়ুয়া। একই সঙ্গে যে প্রশ্নটা বড় হয়ে উঠছে তা হল, রাজ্য বোর্ড থেকে পড়াশোনা করে মাধ্যমিকে ভাল ফল করা পড়ুয়ারা অন্য বোর্ডের স্কুলগুলিতে চলে যাচ্ছে না তো?
মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানান, তাঁদের স্কুলে একাদশে কলা বিভাগে ৫০টি, বিজ্ঞানে ৪০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৭০টি আসন রয়েছে। রাজা বলেন, ‘‘ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত সপ্তাহ থেকেই। কিন্তু এখনও সব আসন পূরণ হল না। অন্য বার আমাদের স্কুলের ছাত্রেরা ভর্তি হওয়ার পরে বাইরের স্কুলের পড়ুয়ারা ভর্তি হতে আসত। এ বার সেই প্রবণতা খুব কম। বিশেষত, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখায় ছাত্র ভর্তির হার বেশ কম।’’
একই সুর শোনা গেল শিয়ালদহের টাকি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শম্পা চক্রবর্তীর গলাতেও। তিনি জানান, বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য মিলিয়ে ১৫০টি আসন আছে। এখনও সব ভর্তি হয়নি। ফলে, তিনটি বিভাগেই ভর্তির শর্তের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, তাঁদের বিজ্ঞান, কলা এবং বাণিজ্য শাখায় ৫০টি করে আসন রয়েছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র অর্ধেক আসন পূরণ হয়েছে।
একাদশে ভর্তির হার কম হওয়ার পিছনে শিক্ষকের ঘাটতির প্রসঙ্গও উঠে আসছে। যেমন, ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির মতে, ‘‘অনেক স্কুলেই বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নেই। ফলে, পড়ুয়ারা যে বিষয় নিয়ে ভর্তি হতে চায়, সেই বিষয় পাচ্ছে না। তারা বাধ্য হয়ে অন্য বোর্ডে চলে যাচ্ছে। কারণ, পড়ুয়ারা এই আশঙ্কা করছে, শিক্ষক না থাকলে যদি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ক্লাস না হয়, তার প্রভাব শেষ পর্যন্ত পড়বে পরীক্ষার ফলে। তাই অন্য বোর্ডে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।’’
এই দিকটির কথা বলছেন টাকি গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা শম্পাও। তিনি জানান, একাদশে তাঁদের স্কুলে মনস্তত্ত্ববিদ্যা (সাইকোলজি) রয়েছে। বিষয়টির চাহিদাও আছে। কিন্তু, ওই বিষয়ের শিক্ষিকা নেই। ফলে কেউ ভর্তি হতে চাইলেও তাকে ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না। যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘আগামী বছর থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এ বারের মতো এত কম হবে না। এ বারের পরিস্থিতি কিছুটা ব্যতিক্রমী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy