ভারতে প্রায় সাত হাজার বিরল রোগের সন্ধান মিলেছে। প্রতীকী ছবি।
শিশুর জন্মের পরেই চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তার যকৃৎ খারাপ। ধাপে ধাপে চিকিৎসায় ভবানীপুরের বাসিন্দা বানিন্দর সিংহ জানতে পারেন, নিম্যান-পিক টাইপ সি বিরল রোগে আক্রান্ত তাঁদের সন্তান মেহেরাজ। জন্মের পরে প্রথম আট মাস মেহেরাজকে অক্সিজেন দিয়ে রাখতে হয়। অস্ত্রোপচারের পরে বছর দুই ঠিক থাকলেও ফের তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সাড়ে চার বছরের মেহেরাজ আপাতত শয্যাশায়ী। আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বানিন্দরের কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে কোনও ফোন এলেই মনে হয় খারাপ খবর শুনব। এ ভাবেই ভয় নিয়ে বেঁচে আছি।’’
বিরল রোগ নিয়ে সমাজের সচেতনতা ঠিক কোন পর্যায়ে? ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা পাওয়ার জটিলতার আদৌ কি সরলীকরণ হয়েছে? কেন্দ্র ও রাজ্যের অনড় অবস্থানে কোনও পরিবর্তন কি এসেছে?— ২৮ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার ‘ওয়ার্ল্ড রেয়ার ডিজিজ় ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই প্রশ্ন উঠে এল।
‘অর্গানাইজ়েশন ফর রেয়ার ডিজিজ়েস, ইন্ডিয়া (ওআরডিআই)’-এর উদ্যোগে এই সব রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ৫ মার্চ কলকাতায় ‘রেস ফর ৭’ ম্যারাথনের আয়োজন হয়েছে। বিরল রোগে আক্রান্ত এবং তাদের অভিভাবক ও সাধারণ মানুষও যোগ দেবেন সেই ম্যারাথনে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিরল রোগে আক্রান্ত ও তাঁদের অভিভাবকেরা। অভিভাবকদের তরফে মৌমিতা ঘোষ, বানিন্দর সিংহ, শিবশঙ্কর চৌধুরী, বীথিকা ঘোষের কথায় শোনা গেল রোগ এবং তার চিকিৎসা নিয়ে অসহায়তার প্রসঙ্গ। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন কেউ কেউ। স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (এসএমএ) আক্রান্ত দেবস্মিতার মা মৌমিতা ঘোষ বললেন, ‘‘লড়াইটা অনেক দিন ধরে চলছে। বিরল রোগের চিকিৎসায় রাজ্য এবং কেন্দ্র, উভয় সরকারকে এগিয়ে আসতেই হবে। বিরল রোগের চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে যেতে গবেষণায় খরচ করতে হবে। তবেই চিকিৎসার খরচ সাধ্যের মধ্যে আসতে পারে। প্রশাসনিক স্তরে সদিচ্ছা থাকলেই সে সব সম্ভব।’’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মলিকিউলার জেনেটিক্স বিজ্ঞানী তথা ওআরডিআই-এর রাজ্য কোঅর্ডিনেটর দীপাঞ্জনা দত্ত বলেন, ‘‘ভারতে প্রায় সাত হাজার বিরল রোগের সন্ধান মিলেছে। যার ৭০ শতাংশের প্রকাশ ঘটে শিশু বয়সে। রোগী ও চিকিৎসকের সচেতনতার অভাবেই মূলত জিনঘটিত বিরল রোগ চিহ্নিত করা যায় না। যে সব বিরল রোগের চিকিৎসা রয়েছে, সেগুলো অত্যধিক ব্যয়বহুল। তাই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সরল করতে সরকারের সদর্থক ভূমিকা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy