ফাইল চিত্র।
দিনকয়েক আগে ডালহৌসির অফিসপাড়ায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তেতলায় আগুন লেগেছিল। আগুনের কারণে নীচে নামতে না পেরে সোজা পাঁচতলার ছাদে উঠে গিয়েছিলেন ওই ব্যাঙ্কের লিফটম্যান। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে ছাদ থেকে তাঁকে উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
সেই ঘটনার পরে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিল দমকল। দফতরের সমন্বয়ের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে দমকল কেন মই ব্যবহার করেনি, উঠেছিল সেই প্রশ্নও।
শুধু ওই একটি ঘটনাই নয়। অতীতেও শহর, শহরতলি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আগুন নেভাতে গিয়ে সমন্বয়ের অভাবের কারণে একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে দমকল বাহিনীকে। আর এই সমস্যার মূল কারণ হিসেবে দফতরে লোকবলের অভাবকেই দায়ী করছেন দমকলকর্মীদের একটা সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ।
দমকল সূত্রের খবর, রাজ্যে ১৪৪টি দমকল কেন্দ্রে মোট ৯,৪১৫ জন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে রয়েছেন মাত্র ৩,৭১৪ জন। বিভিন্ন বিভাগে ৫,৭০১টি পদে নিয়োগ হয়নি এখনও। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের ২৩টি জেলার প্রতিটিতে এক জন করে ডিভিশনাল অফিসার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ওই পদে রয়েছেন মাত্র আট জন। ফলে এক-এক জন ডিভিশনাল আধিকারিককে একাধিক জেলার দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। যেমন, মালদহের ডিভিশনাল আধিকারিকের কাঁধেই রয়েছে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের দায়িত্ব। কিন্তু এ ভাবে একাধিক দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এঁদের মধ্যে ছ’জনের আগামী ছ’মাসের মধ্যে অবসর
নেওয়ার কথা।
বেহালার ফায়ার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, যেখানে দমকলকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেখানে প্রায় তিন বছর ধরে সিআই (চিফ ইনস্ট্রাক্টর) পদে কোনও নিয়োগ করা হয়নি। বর্তমানে সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কলকাতার ডিভিশনাল অফিসার (দক্ষিণ)। দমকল সূত্রের খবর, সদর দফতরে ডিভিশনাল অফিসারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলাতে গিয়ে ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে বেশির ভাগ দিনই যেতে পারেন না ওই আধিকারিক।
দমকলে ফায়ার অপারেটরের সংখ্যাও কম রয়েছে। সেখানেও ৪০৬৩টি পদ খালি। স্টেশন অফিসারের পদ খালি ৯০টি। ডেপুটি ডিরেক্টরের ৬টি পদের মধ্যে তিনটিতে নিয়োগ হয়নি। সাব-অফিসার নেই ৩৩৫ জন। আগুন লাগলে দমকলের গাড়িকে যিনি নেতৃত্ব দেবেন, সেই লিডার পদ খালি ৩৮০টি। ৫০৪টি ফায়ার ইঞ্জিন অপারেটর তথা ড্রাইভার বা এফইওডি পদে লোক নেই। আবার মোবিলাইজ়িং ও অ্যাসিস্ট্যান্ট মোবিলাইজ়িং অফিসার নেই যথাক্রমে ২১ এবং ৫৪ জন।
লোকবলের অভাবে কতটা সমস্যায় ভুগছেন কর্মীরা? দমকলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘করোনার মরসুমে এখন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বাড়ি, রাস্তা জীবাণুমুক্ত করতে হচ্ছে দমকলকর্মীদের। ফলে বিভিন্ন দমকলকেন্দ্রে পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় আগুন নেভানোর মতো জরুরি পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’’
এ প্রসঙ্গে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘‘পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শীঘ্রই কর্মী নিয়োগ হবে।’’ আবার দমকলের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘সাত জন আধিকারিককে পদোন্নতি দিয়ে ডিভিশনাল অফিসার পদে শীঘ্রই নিয়োগ করা হবে।’’ দফতর সূত্রের খবর, ফায়ার অপারেটরের দায়িত্ব সামলাতে রাজ্য জুড়ে প্রায় তিন হাজার এএফপি (অক্সিলিয়ারি ফায়ার পার্সন) পদে গত কয়েক বছরে নিয়োগ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy