হেলে গিয়ে বিপত্তি ঘটাচ্ছে এই গাছই। নিজস্ব চিত্র
ঝড়-বৃষ্টির মরসুম এলেই লম্বু গাছ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয় উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া ও হাওড়ার মতো বিভিন্ন জেলায়। ঝড় বা কালবৈশাখী তো বটেই, জোরে হাওয়া দিলেও হেলে পড়ে ওই গাছ।
হাওয়ায় প্রায় সাত-আট ফুট হেলে পড়ার পরে ফের সোজা হয়ে যেতে পারে লম্বু গাছ। কিন্তু সমস্যা হল, হেলে পড়ার সময়ে লম্বু গাছ প্রায়ই ছুঁয়ে দিচ্ছে শূন্যে ঝুলতে থাকা বিদ্যুতের তার। যার জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। কখনও কখনও পরিষেবা ফের চালু করতে অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, ওই গাছ সাত-আট ফুট পর্যন্ত হেলে পড়ে। আবার সোজা হয়ে যায়। হেলে পড়ার সময়ে কাছাকাছি বিদ্যুতের তার থাকলেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা। সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গাছ পড়ে থাকলে সমস্যার জায়গা চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু এই গাছের ক্ষেত্রে সমস্যা হল, এক বার হেলে পড়ার পরে আবার সোজা হয়ে যায়। তাই কোনও এলাকায় লাইন ‘ট্রিপ’ করার খবর পেয়ে বিদ্যুৎকর্মীরা ছুটে গেলেও জায়গাটি খুঁজে পেতে অনেক সময় লাগছে। কারণ, গাছ তত ক্ষণে আগের অবস্থানে ফিরে গিয়েছে।’’
গত শনি, রবি ও সোমবারের ঝড়বৃষ্টির জেরে অনেক জায়গায় লম্বু গাছের ছোঁয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর। কর্মীরা জানান, উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট, বনগাঁ-সহ নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলিতে লম্বু গাছের কারণে ঘনঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়। কারণ, নদীর ধারে অবস্থিত হওয়ায় ওই সমস্ত এলাকায় হাওয়ার গতি বেশি থাকে। তাতেই গাছ হেলে পড়ে। গ্রামীণ এলাকাতেই লম্বু গাছ নিয়ে সমস্যা বেশি হচ্ছে। বহু জায়গায় ওই গাছের জঙ্গল হয়ে গিয়েছে।
ব্যারাকপুরের নীলগঞ্জ রোড এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, লম্বু গাছের চারা চাষিরা বন দফতর থেকে পান। ওই গাছের কাঠ থেকে নানা রকম জিনিস তৈরি হয়। খুব দ্রুত গাছ বড় হয়ে যায়। সেই কারণে লম্বু গাছ লাগালে তা থেকে আয়েরও একটা উপায় হয়।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, গ্রামাঞ্চলে লম্বু গাছ নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গাছ কাটার জন্য আমরা কাউকে চাপ দিতে পারি না। গাছ কাটতে অনুরোধ করা হলে অনেকেই বলছেন, বিদ্যুৎ সংস্থার জায়গায় তাঁর গাছ নেই। তাই তাঁকে গাছ কাটতে বলার এক্তিয়ারও আমাদের নেই।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, বন দফতরের দেওয়া গাছের চারা জেলা প্রশাসনের হাত ঘুরেই চাষিদের কাছে পৌঁছয়। সমস্যার কথা শুনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ এ কে এম ফারহাদ বলেন, ‘‘বন দফতর আমাদের শাল, মেহগনি, ইউক্যালিপটাসের মতো গাছ দেয়। লম্বু খুব একটা দেয় না। ওই গাছ চাষিরাই নিজেরা বেশি কেনেন। কারণ, অল্প সময়ের মধ্যেই ওই গাছের কাঠ বিক্রির যোগ্য হয়ে যায়। তা-ও আমরা লম্বুর সমস্যা নিয়ে চাষিদের সচেতন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy