ফাইল চিত্র।
বৌবাজারে মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ঘটনায় ঘরছাড়ারা নিজের বাড়িতে ফিরতে পারেননি প্রায় তিন বছর পরেও। কবে ফিরতে পারবেন, সেই প্রশ্নের উত্তরও অজানা। ওই এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। তার পরেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে ঘরছাড়াদের শীঘ্রই ঘরে ফেরাতে
কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসব।’’
২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোপথের বি বা দী বাগ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়ে বৌবাজার এলাকার দুর্গা পিতুরি লেন এবং সেকরাপাড়া লেনের প্রায় ৪৬টি বাড়ি তীব্র ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘর হারায় প্রায় ৮৪টি পরিবার। তাঁরা এখন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করছেন। তাঁদের বেশির ভাগেরই ওই এলাকায় ব্যবসা ছিল। কিন্তু বাড়ি ভেঙে পড়ায় পেশাও পরিবর্তন করতে হয়েছে অনেককে। কবে ফের পুরনো পাড়ায়, চেনা গলিতে ফিরতে পারবেন— এই সব প্রশ্নের উত্তর না
মেলায় উদ্বেগের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
এমনই এক জন বাসিন্দা, প্রশান্তকুমার শীলের দুর্গা পিতুরি লেনে প্রিন্টিং প্রেসের ব্যবসা ছিল। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বেলেঘাটায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। প্রশান্তবাবুর কথায়, ‘‘মেট্রো মাসে মাসে ভাড়া মেটালেও সব সময়ে মনে হয়, কবে নিজের বাড়িতে যেতে পারব।’’ সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ঘটনা তাঁর যৌথ পরিবারের ১৪ জনকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বর্তমানে প্রশান্তবাবু একটি দোকানে সেলসম্যানের কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন স্বপ্ন দেখি, বাড়ি ফিরে পেয়ে ফের ব্যবসাটা শুরু করব।’’
একই অবস্থা জয়ন্ত শীল, অশোক সেন বা সৌমিক নন্দীদের। অশোকবাবু বর্তমানে নিউ গড়িয়ায় থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয় কাউন্সিলর ঘরছাড়াদের নিয়ে মাসকয়েক আগে একটি বৈঠক করেছিলেন। কেএমআরসিএল-এর প্রতিনিধিরাও ছিলেন সেখানে। বলা হয়েছে, মেট্রোর কাজ শেষ হতে কিছু বাকি রয়েছে। তার পরে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে।’’
৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে-র অভিযোগ, ‘‘২০১৯ সালে দুর্ঘটনার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সামনে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও কেএমআরসিএল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, এক বছরের মধ্যে গৃহহীনেরা বাসস্থান ফিরে পাবেন।’’ কেএমআরসিএল-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর নরেশচন্দ্র কারমালি বলেন, ‘‘মেট্রোর কাজ শেষ হতে কিছু দেরি আছে। তার পরেই ঘরছাড়াদের বাড়ি তৈরির কাজে হাত দেব।’’ তবে কাজ শেষ হতে কমপক্ষে দু’বছর লাগবে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy