যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রক্রিয়া আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হতে পারে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজভবনে দেখা করে এমনটাই জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর কথায়, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনে প্রাক্তন বিচারপতিকে মাথায় রেখে নতুন তদন্ত কমিটিও গঠন করা যেতে পারে বলে রাজ্যপাল তাঁকে জানিয়েছেন।
এ দিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কর্তব্যরত পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ছাত্র জয়দীপ ঘোষকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে তাঁকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের কয়েক জন আবাসিক পড়ুয়াকে ফের যাদবপুর থানায় তলব করা হয়েছিল। তাঁদের কয়েক জন মৃত ছাত্রের সঙ্গে হস্টেলের একই তলায় থাকতেন। তাঁদের এ দিন লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতো অ্যান্টি র্যাগিং হেল্পলাইনও এ দিন চালু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফোন করলে পুলিশই তা প্রথমে ধরবে। তারপর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই অ্যান্টি র্যাগিং সংক্রান্ত হেল্পলাইন নিয়ে পোস্টারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ও শহরের বিভিন্ন জায়গায় পড়েছে।
এ দিন পুরুলিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে ইতিহাসবিদ সুগত বসু বলেন, ‘‘দেখতে হবে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এই ধরনের র্যাগিং বরদাস্ত করা না হয়। কড়া হাতে দমন করতে হবে। প্রথমত স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। রাজ্যপাল একে ওকে উপাচার্য করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ ভাবে সমস্যার সমাধান হয় না।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যপাল আমাকে বৃহস্পতিবার থেকেই সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছিলেন। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেয় কোটেশন নিয়ে কথা বলার কথা। তাই শুক্রবার থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, কাউকে শাস্তি দেওয়াটা যেন লক্ষ্য না হয়।’’
বুদ্ধদেব জানান, অ্যান্টি র্যাগিং নিয়ে ইউজিসির যাবতীয় নিয়ম প্রয়োগ করতে হবে বলে রাজ্যপাল তাঁকে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, রাজ্যপালের মতে, অ্যান্টি র্যাগিং নিয়ে এখন যে কমিটি রয়েছে, সেটা কোনও একটা কারণে কাজ করছে না। করলে এরকম ঘটনা ঘটত না। বুদ্ধদেব বলেন, ‘‘রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার সেটা নিন।’’ প্রয়োজনে নতুন তদন্ত কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিউ ব্লক হস্টেলের ১৬ জন আবাসিককে ওল্ড পিজি হস্টেলে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যে হস্টেল ছাড়তে ইচ্ছুক নন, ডিন অব স্টুডেন্টসকে গিয়ে তা জানান ওই আবাসিকেরা। তাঁরা দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া।
এ দিন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে জয়দীপকে তোলা হলে তাঁর আইনজীবীরা বলেন, ‘‘জয়দীপের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগ নেই। ঘটনার রাতে জয়দীপ হস্টেলে ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে কর্তব্যরত পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।’’ জয়দীপের জামিনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘ওই রাতে গুরুতর জখম অবস্থায় এক জন ছাত্র হস্টেলের ভিতরে পড়েছিলেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশকে বাধা দেন জয়দীপ। পুলিশ কোনও পুষ্প প্রদর্শনী বা দুর্গাপুজোর ভিড় সামলাতে যায়নি। গুরুতর জখম এক ছাত্রকে উদ্ধার করতে গিয়েছিল। শুধু হস্টেলে নয়, হাসপাতালেও ওই জখম ছাত্রের বয়ান নথিবদ্ধ করতে দেননি জয়দীপ।’’
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ১২ জন ও পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জয়দীপ গ্রেফতার হয়েছেন। পুলিশের দাবি, ওই ঘটনার সময় যে সব আবাসিকেরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই অভিযুক্ত। তাই যত বেশি সম্ভব নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ করা হচ্ছে। এ দিন উচ্চশিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এ বার জেলা ও কলকাতায় র্যাগিং প্রতিরোধ সেল গঠিত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy