Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Unnatural Death

ঘরেই পড়ে বৃদ্ধের দেহ, সাহায্যে এলেন না কেউ

মৃতের নাম শঙ্কর চক্রবর্তী (৮০)। তিনি বেহালার শিশিরবাগানে একটি তেতলা বাড়ির দোতলায় সপরিবার ভাড়া থাকতেন। তাঁর এক ছেলে ও স্ত্রী রয়েছেন।

An image of death

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৩৫
Share: Save:

মৃত্যুর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে এক বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বাড়ির শৌচাগারে পড়ে গেলেও পরিবারের কেউই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীরাও সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। এক চিকিৎসক এসে দেখার পরে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেও তা করা হয়নি। এর পরে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে বেহালা থানার পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে মৃতদেহ। শনিবারের এই ঘটনায় দেহটির ময়না তদন্ত করা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট আসার পরে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে পুলিশের দাবি।

মৃতের নাম শঙ্কর চক্রবর্তী (৮০)। তিনি বেহালার শিশিরবাগানে একটি তেতলা বাড়ির দোতলায় সপরিবার ভাড়া থাকতেন। তাঁর এক ছেলে ও স্ত্রী রয়েছেন। সেখানে পৌঁছে বার বার ডাকলেও কেউ দরজা খোলেননি। বাড়ির একতলার বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় জানান, শঙ্করের পরিবার কারও সঙ্গেই মেলামেশা করে না। শঙ্করকেও বিশেষ দেখা যেত না। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর কাছে এসেছিলেন শঙ্করের স্ত্রী মালবিকা। তিনি নারায়ণের হাতে নিজের মোবাইল ধরিয়ে এক আত্মীয়ের নম্বরে ফোন করতে বলেন। কিন্তু কেন ফোন করতে বলা হচ্ছে, তা জানাননি। নারায়ণ জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে ওই ভাবে কাউকে ফোন করা সম্ভব নয়। এর পরে সন্ধ্যায় শঙ্করের এক আত্মীয়কে ডাক্তার নিয়ে ওই বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়।

নারায়ণের কথায়, ‘‘তখনই কানে আসে, শঙ্করবাবুর নাকি মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কেউ কিছু করছেন না দেখে আমিও আর কথায় যাইনি।’’ ওই বাড়ির মালিক, ৮৯ বছরের প্রফুল্ল দাস বললেন, ‘‘শঙ্করবাবুর স্ত্রী আমার কাছে এসেছিলেন। শুনেছি, চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। আমি একা থাকি। ওঁর পরিবারের লোক যখন চাইছেন না, তখন আমি এই বয়সে আর কী-ই বা করতে পারি! এর পরে সারা রাত বাড়িতেই মৃতদেহ পড়ে ছিল।’’

শনিবার সকালে প্রফুল্লই পুলিশে ফোন করেন। ৩০ মিনিটের মধ্যেই পুলিশ এসে দেহটি বার করে নিয়ে গিয়েছে বলে তাঁর দাবি। কিন্তু শঙ্করের স্ত্রী ও ছেলে তাঁর দেহ আগেই হাসপাতালে নিয়ে গেলেন না কেন? শঙ্করের পরিবারের কারও সঙ্গেই কথা বলা যায়নি। প্রফুল্লের দাবি, ‘‘ওই পরিবারের মানসিক সমস্যা রয়েছে। ৩৭ বছর ধরে এখানে ঘর ভাড়া নিয়ে আছেন। কথাবার্তা থেকে চালচলন, সবেতেই অসঙ্গতি দেখা যায়।’’

কিন্তু এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, যদি সমস্যা থেকেও থাকে, প্রতিবেশীরা এতটা নির্দয় হবেন কেন? কেন সাহায্যে কেউ এগিয়ে যাবেন না? এলাকার বয়স্কদের পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের কাছেই বা তথ্য থাকবে না কেন? উত্তর মিলছে না কোনও মহল থেকেই। মনোরোগ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ দেব বললেন, ‘‘ঝক্কি পোহাতে হতে পারে ভেবেই অনেকে এগিয়ে যান না। অথচ, অন্য সময়ে এই লোকেদেরই উৎসাহ থাকে দেখার মতো। এই পরিস্থিতি বদলের জন্যই সচেতনতা প্রয়োজন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dead police investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy