দিল্লি বা পুণের মতোই শহরের উপকণ্ঠে বিভিন্ন রিসর্টে ব্যবস্থা করা হচ্ছে রেভ পার্টির। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পার্টি ড্রাগ বেচার পাশাপাশি, এসকর্ট সার্ভিসও চালাত আদিত্য শিখওয়াল। আদিত্যকে জেরা করে কলকাতার বিভিন্ন নাইট ক্লাবে চলা পার্টি ড্রাগের কারবারের হদিশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। শনিবার রাতে বেঙ্গল ক্লাবের কাছে রাসেল স্ট্রিটে কলকাতা পুলিশের মাদক বিরোধী শাখার গোয়েন্দারা পাকড়াও করেন আদিত্যকে। ৩৯ বছরের আদিত্যর কাছ থেকে সাতটা আলাদা আলাদা ছোট পাউচে এমডিএমএ ট্যাবলেট পাওয়া যায়। ওই ট্যাবলেট সাধারণত পার্টি ড্রাগ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
প্রাথমিক জেরার পর গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দু’টি নাইট ক্লাবে ওই ট্যাবলেট ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল আদিত্যর। বেশ কয়েক বছর ধরে পার্টি ড্রাগ কলকাতার ক্রেতাদের পৌঁছে দেওয়ার ব্যবসা করছে হুগলির উত্তরপাড়ার ওই বাসিন্দা। জেরায় গোয়েন্দাদের সে জানিয়েছে, মাদক কলকাতার বিভিন্ন নাইট ক্লাবে পৌঁছনোর পাশাপাশি এসকর্ট সার্ভিসের সঙ্গেও তার যোগ আছে।
শহরের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলের নাইট ক্লাবে আসা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে এসকর্টদের যোগাযোগ করিয়ে দিত সে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা এবং ওই পরিষেবা যে নেবে তার পরিচয় গোপন রাখতে এসকর্টদের নামেই ঘর বুক করা হত বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে। দেশি-বিদেশি এসকর্টের মাধ্যমেই ওই মাদক পাঠানো হত ক্রেতাদের কাছে।
আরও পড়ুন: ১৫০ বছরের জিপিও ছিল প্রাচীন ব্রিটিশ দুর্গ, ‘অন্ধকূপ হত্যা’ও হয় এখানেই!
রবিবার আদিত্যকে আদালতে তোলা হলে এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। সোমবার ফের আদালতে পেশ করা হলে তাকে ৫ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গোয়েন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আদিত্যর বাবার বড়বাজারের হাঁসপুকুরিয়াতে হার্ডওয়্যারের দোকান ছিল। বাবার মৃত্যুর পর সে পুরোপুরি মাদক পাচার এবং এসকর্ট সার্ভিসে যোগ দেয়।
আরও পড়ুন: অনলাইনে স্মার্ট কার্ডে টাকা ভরার সুযোগ মেট্রোয়
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, বাজেয়াপ্ত ওই এমডিএমএ ট্যাবলেট সে দিল্লি থেকে নিয়ে এসেছিল। এসকর্ট সার্ভিসে যুক্ত তরুণীদের সাহায্যেই দিল্লি থেকে সে ওই মাদক আনায়। জেরায় আদিত্য একটি নাইট ক্লাবের কথা বলেছে, যেখানে ক্রেতাকে ওই পার্টি ড্রাগ পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। দেড় বছর আগে ওই নাইট ক্লাবেরই এক ডিস্ক জকিকে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেছিল পার্টি ড্রাগ পাচারের জন্য।
ধৃতকে জেরা করে তদন্তকারীদের অনুমান, নাইট ক্লাবের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট পার্টিতেও এ ভাবে পার্টি ড্রাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ওই প্রাইভেট পার্টিগুলোতে যোগ দিচ্ছে এসকর্টরা। সূত্রের খবর, দিল্লি বা পুণের মতোই শহরের উপকণ্ঠে বিভিন্ন রিসর্টে ব্যবস্থা করা হচ্ছে এ ধরনের রেভ পার্টির। থাকছে মাদক এবং এসকর্ট পরিষেবা। তদন্তকারীদের ইঙ্গিত, আদিত্যকে ধরে শহরের এ রকম বেশ কিছু ডেরার হদিশ মিলবে যেখানে রেভ পার্টি চলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy