—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পূর্ব রেলের ডানকুনি সাইডিংয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণে রেল কী ব্যবস্থা নিতে চলেছে, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে বলল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ। বিচারপতি অমিত স্থালেকর এবং বিচারপতি অরুণকুমার বর্মার ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছে। রেলের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর হলফনামা দেওয়া হলেও জাতীয় পরিবেশ আদালত সেই পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত রূপরেখা জানতে চেয়েছে।
প্রসঙ্গত, ডানকুনি-সহ কলকাতা লাগোয়া বিভিন্ন সাইডিংয়ে পণ্য ওঠানামার সময়ে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল বাম শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র শাখা সংগঠন ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স’। বিভিন্ন সাইডিংয়ে কয়লা, সিমেন্ট, পাথরকুচি, ইস্পাতের পাত ওঠানামা করার সময়ে বিপুল পরিমাণ ধুলো ওড়ে বলে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। ওই রকম দূষিত পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে পণ্য ওঠানামার সঙ্গে যুক্ত ঠিকা শ্রমিক ছাড়াও ট্রাকচালক এবং অন্য পরিবহণকর্মীরা গুরুতর অসুস্থতার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বার বার। যার পরিপ্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার চিঠি দিয়েও তাঁদের তরফে সাড়া না পাওয়ায় এ নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে অভিযোগ জানায় ওই বাম সংগঠন। সেই অভিযোগ পেয়ে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর ওই সাইডিং পরিদর্শন করে বিস্তারিত রিপোর্ট দেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিদর্শক। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, প্রায় ৫০০ মিটার দীর্ঘ এবং এক কিলোমিটার প্রশস্ত ওই সাইডিংয়ে ছ’টি লোডিং-আনলোডিং লাইন এবং চারটি হোয়ার্ফ বা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। ওই সাইডিংয়ে কয়লা, সিমেন্ট, আলকাতরা, ইস্পাতের পাত, নুন, চিনি-সহ নানা পণ্য ওঠানামা করলেও সেখানে ছড়িয়ে পড়া ধুলো থেকে যে দূষণ ছড়াচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই।
এর পরে রেলের আধিকারিকদের পর পর দু’টি শুনানিতে ডেকে পাঠিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেয় পর্ষদ। ওই সমস্ত নির্দেশের মধ্যে ছিল, জল ছেটানোর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক স্প্রিঙ্কলারের ব্যবস্থা করা, ধোঁয়াশা দূর করার জন্য বিশেষ কামানের (ক্যানন ) ব্যবহার, সব সময়ে বাতাসের গুণমান পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট যন্ত্র এবং বোর্ড বসানো, ধুলো আটকাতে কাজের জায়গা পর্দা দিয়ে ঘেরার ব্যবস্থা করা ছাড়াও উপযুক্ত সংখ্যায় গাছ লাগিয়ে সবুজ বলয় তৈরি করতে হবে। রেলের পক্ষ থেকে ওই সব নির্দেশ মানার আশ্বাস দেওয়ার পরে এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু আদতে কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ বাম শ্রমিক সংগঠনের। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিশেষ সচিব গত এপ্রিল মাসে রেলের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়ে হাওড়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে চিঠি দেন। পরে বাম সংগঠনের পক্ষ থেকেও রেলের কাছে নোটিস পাঠানো হয় বলে খবর।
এ নিয়ে রেলের পক্ষ থেকে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বামপন্থী সর্বভারতীয় পরিবহণ সংগঠনের সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ডানকুনি ছাড়াও নিউ আলিপুর, চিৎপুর-সহ একাধিক সাইডিংয়ে দূষণ নিয়ে আমাদের অভিযোগ আছে। রেল এ নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ না করলে আমরা আইনের সাহায্য নেব।’’
রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ডানকুনির দূষণের সমস্যা মেটাতে নির্দিষ্ট বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। যার বরাত চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা আদালতকে জানাবে তারা। এই প্রসঙ্গে এক পদস্থ রেলকর্তা বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট বিধি মেনে কাজ করার বিষয়ে রেল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy