আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
চার দিন পরে অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় নিজের অফিসে ঢুকলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন অধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সকাল থেকে বাধাদান চললেও সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্তারা এলে নিজেদের অবস্থান থেকে সরেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অনুরাগীরা। এর পরেই কার্যালয়ে গিয়ে বসেন মানস।
শুক্রবার ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, সাংসদ-চিকিৎসক শান্তনু সেন এবং অন্য আধিকারিকেরা মানসকে তাঁর কার্যালয়ে ঢোকানোর চেষ্টা করলেও সন্দীপপন্থীরা বাধা দেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামলাতে আসেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায়। পরে শান্তনু দাবি করেন, শনিবার মানসকে অফিসে ঢুকতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন সন্দীপ-অনুরাগী ছাত্র ও জুনিয়র চিকিৎসকেরা। যদিও সন্দীপপন্থীদের দাবি, এমন কথা তাঁরা দেননি।
এ দিন সকালে মানস হাসপাতালে এলে বাধার মুখে পড়েন। অগত্যা সুপার, অতিরিক্ত সুপারের ঘরে বসেন তিনি। বিকেলে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন পড়ুয়া-চিকিৎসকদের দু’পক্ষ। দীর্ঘক্ষণ দু’পক্ষের বাগ্যুদ্ধ চলে। সন্ধ্যায় মানসকে নিয়ে সেখানে আসেন শান্তনু। মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায় ও সহ-সভাপতি সুশান্ত রায়ও যান সেখানে। শান্তনু জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য করা আইনত অপরাধ। মুখ্যমন্ত্রী এলে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠেরা তাঁদের বক্তব্য জানাবেন, তার আগে মানসকে কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হোক। সূত্রের খবর, এ দিন সন্দীপপন্থীদের ডাকেই হাসপাতালে এসে সুদীপ্ত ও সুশান্তও তাঁদের বোঝান। এর পরেই অবস্থান ওঠে। বিক্ষোভকারীদের তরফে অভিষেক সেন বলেন, ‘‘রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ও সহ-সভাপতি আশ্বাস দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের কথা তুলে ধরবেন, যাতে সন্দীপ স্যরকে তাঁর মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাই আপাতত বিক্ষোভ থেকে সরলাম।’’
এ দিন দুপুরে হাসপাতালে এসে শান্তনু একটি বার্তায় জানান, আগে আর জি করের একটি ঘটনায় আদালতের রায়ে বলা রয়েছে, কোনও ছাত্র এমন কিছু করবেন না যাতে হাসপাতালের শান্তি বিঘ্নিত হয়। তাই সন্দীপপন্থীদের এ হেন কাজে আদালতের অবমাননা হচ্ছে। এর পরেই বিক্ষোভকারীরা পিছু হটেন বলে দাবি মানসপন্থীদের। সুদীপ্ত ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ লবির নেতা বলে পরিচিত সুশান্তকে ডেকে আনা হলেও তাঁরা সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলে বিতর্ক বাড়াননি। যদিও আন্দোলনে নেতারা তাঁদের পাশেই রয়েছেন বলে দাবি সন্দীপপন্থীদের। শান্তনু বলেন, ‘‘পুরনো অধ্যক্ষের প্রতি অতিরিক্ত ভালবাসা থাকতেই পারে। কিন্তু সরকারি নির্দেশে নিযুক্ত অধ্যক্ষকে কাজ করতে না দেওয়া সরকারপন্থী বা তৃণমূলপন্থী মনোভাব হতে পারে না। শেষ পর্যন্ত অধ্যক্ষকে ঢুকতে দেওয়ার জন্য সমস্ত পড়ুয়াকে ধন্যবাদ জানাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy