কলকাতায় দোকানের নাম বাংলায় লেখা হোক, চায় পুরসভা। ফাইল ছবি।
ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তার পরেই কলকাতা পুরসভার অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে যে শহরের বিভিন্ন দোকান এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার কী ভাবে বাড়ানো যায়?
এই ভাবনা ইন্ধন পেয়েছে বাংলা ধ্রুপদী ভাষায় স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়ায়। তিনি বলেন, ‘‘আগে বড় করে বাংলায় সাইন বোর্ড লিখুন। তারপর যাঁর যে ভাষা পছন্দ, সেটা হিন্দি, উর্দু কিংবা ইংরেজিতে লিখতে পারেন। তবে, বাংলা ভাষাকে আগে গুরুত্ব দিন।’’ কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, মেয়র থাকাকালীন আগেও ফিরহাদ কলকাতা শহরের দোকান তথা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে বাংলা ভাষায় নাম লেখার কথা বলেছিলেন। সে যাত্রায় তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ বাংলা বোঝেন। মাতৃভাষা বাংলা। তাই বাংলায় লিখলে সকলের বুঝতে সুবিধা হবে এবং এ জন্য সকলে গর্ব অনুভব করতে পারবেন।’’ কিন্তু সে বার মেয়রের এই প্রয়াস সফল না হলেও, বাংলা ধ্রুপদী ভাষাক মর্যাদা পাওয়ার পরেই এই ভাবনা ইন্ধন পেতে শুরু করেছে পুরসভার অন্দরে। যদিও বামফ্রন্ট জমানাতেও এই ধরনের উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। যেই কারণে কলকাতা শহরের একাংশে বাংলায় দোকান এবং অফিসের নাম লেখা শুরু হয়েছিল। পরে যদিও, সেই উদ্যোগ খুব বেশি গতি পায়নি বলেই জানা যায়।
বাম জমানায় অবশ্য এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল শিল্পী সাহিত্যিক বিদ্বজ্জনেদের হাত ধরে। সেই উদ্যোগে বড় ভুমিকা নিয়েছিলেন সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। শহর কলকাতাকে বাংলা ভাষায় সড়গড় করে তুলতে তাঁকে সহায়তা করেছিলেন ভাষাবিদ পবিত্র সরকার। অতীতের স্মৃতিচারণা করে পবিত্র বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট জমানায় ৯০-এর দশকে সুনীল-সহ আমরা অনেকেই শহরে বাংলা ভাষার ব্যবহার শুরু করার আন্দোলন চালিয়েছিলাম। সত্যিই যদি আবার সে রকম কোনও উদ্যোগ শুরু হয়, তাতে আমি খুশিই হব। দেরিতে হলেও বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেয়েছে। তাই আমাদের উচিত বাংলা ভাষা নিয়ে আরও বেশি কাজ করা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি যদি বাংলা ভাষার প্রসারের ক্ষেত্রে কাজ করে তবেই এই ধরনের উদ্যোগ সফল হতে পারে। যে সময় আমরা এই আন্দোলন শুরু করেছিলাম, সেই সময়ের সরকার আমাদের সাহায্য করেছিল। তবে সুনীল চলে যাওয়ার পর সেই আন্দোলন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল। আবার যদি অন্য কারও হাত ধরে সেই উদ্যোগ সফল হয়, তা আমার ভালই লাগবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy