পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম গৌরী সেন (৩৩)। প্রতীকী ছবি।
বিকেলে শাশুড়ির সঙ্গে বসেই মোবাইলে লুডো খেলছিলেন পুত্রবধূ। হঠাৎই ‘মাথা ধরেছে’ বলে দোতলার ঘরে চলে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরেও ঘর থেকে না বেরোনোয় ডাকাডাকি শুরু করেন বৃদ্ধা শাশুড়ি। পরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ওই গৃহবধূকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন প্রতিবেশীরা। পুলিশ এসে দেহ নামিয়ে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে পর্ণশ্রী থানা এলাকার বেচারাম চ্যাটার্জি রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম গৌরী সেন (৩৩)। বিয়ের এক মাসের মধ্যেই এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সূত্রের খবর, একটি বেসরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা গৌরীর সঙ্গে গত ১৭ জানুয়ারি বিয়ে হয় বেহালার বাসিন্দা প্রদীপ্ত সেনের। প্রদীপ্ত পেশায় আলিপুর আদালতের আইনজীবী। এ দিন সকালে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য রিকশায় করে বেরিয়েছিলেন গৌরী। বিকেলে বাড়ি ফেরেন। পরে ঘর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও গোটা ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। পর্ণশ্রী থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
মৃতার শাশুড়ি প্রতিভা সেন পুলিশকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ বাড়ি ফিরে গৌরী জানান, তাঁর মাথা ধরেছে। এর পরে চা খেয়ে শাশুড়ির সঙ্গে তিনি মোবাইলে লুডো খেলতে বসেন। পাঁচটা নাগাদ হঠাৎই দোতলার ঘরে চলে যান। কিন্তু অনেক ক্ষণ পরেও ঘর থেকে না বেরোনোয় দরজায় ধাক্কা মেরে ডাকাডাকি শুরু করেন শাশুড়ি। কিন্তু গৌরীর সাড়া মেলেনি। তার পরেই বৃদ্ধা শাশুড়ির চিৎকারে আশপাশের লোকজন চলে আসেন।
প্রতিবেশী এক মহিলা বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় হঠাৎ চিৎকার শুনে আমরা বাড়ির বাইরে আসি। এর পরে সকলে মিলে দরজা খোলার চেষ্টা করি। দরজায় ধাক্কা মারার সময়ে কাচ ভেঙে গেলে দেখা যায়, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে গৌরীর দেহ।’’ তবে আর এক প্রতিবেশী শঙ্কর দেবনাথ বলেন, ‘‘শুনেছি, লুডো খেলার সময়ে একটা ফোন আসে। তার পরেই উপরের ঘরে চলে যান গৌরী। কে ফোন করেছিল, তা জানতে পারলেই এই মৃত্যুর রহস্য কাটতে পারে।’’ যদিও গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি প্রদীপ্ত। তবে প্রতিভা বলেন, ‘‘আমরা কেউ কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। কী ভাবে, কোথা থেকে কী হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না।’’
ঘটনার পর থেকে কার্যত অন্ধকারে গৌরীর পরিজনেরাও। জানা গিয়েছে, ব্যবসার সূত্রে ওই তরুণীর বাবা-মা রাজ্যের বাইরে ছিলেন। ভাই ব্যবসার কাজেই হুগলিতে গিয়েছিলেন। এ দিন মর্গে দাঁড়িয়ে গৌরীর ভাই করণ আশ বলেন, ‘‘রাতে সিঙ্গুরে থাকার সময়ে ফোনে খবর পাই, দিদি আত্মহত্যা করেছে। কী ভাবে কী হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ বুধবার মৃতদেহের ময়না তদন্ত করা হয়। তার পরেই দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy