দূষণ: সরস্বতী পুজোর পরে গঙ্গার ধারে জমা হয়েছে কাঠামো ও পুজোর নানা সামগ্রী। শনিবার, নিমতলা ঘাটে। ছবি: সুমন।
আবর্জনা পরিষ্কারের পরিষেবা বাবদ নির্দিষ্ট ফি না দিলে এ বার থেকে আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সের নবীকরণ করা হবে না। ১ এপ্রিল থেকে এই নিয়ম চালু হতে চলেছে শহরে। কলকাতা পুরসভা এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রধান কারণ, ধারাবাহিক অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে, শহরের বহু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, আবাসন (কমার্শিয়াল ইউনিট) আবর্জনা পরিষ্কারের ফি দিতে টালবাহানা করে। সেই কারণে ঠিক হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গেই আবর্জনা সাফাইয়ের ফি যোগ করে দেওয়া হবে। এত দিন যা আলাদা করে নেওয়া হত। এর ফলে লাইসেন্স নবীকরণ করাতে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই আবর্জনা পরিষ্কারের পরিষেবা ফি আদায় করতে পারবে পুরসভা।
পুর প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছে, শহরকে আবর্জনা ফেলার ‘সহবত শিক্ষা’ দেওয়ার যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত তারই একটি ধাপ। তবে, পুরকর্তাদেরএকাংশই জানাচ্ছেন, অতীতে এই প্রক্রিয়া শুরু হলেও তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়নি। কারণ, শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে, এ বার আর কোনও বিরোধিতাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ পুরসভা। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য লোডার, গাড়িছাড়াও লোকবল লাগে। তার জন্য পুরসভার নির্দিষ্ট খরচ হয়। এ বারসেই ফি-টুকু যদি না দেওয়া হয়, তা হলে তো মুশকিল। সেই কারণে ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গেই আবর্জনা সাফাই বাবদ ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, দৈনিক আবর্জনা সাফাইয়ের পরিষেবা দেওয়া হলেও শহরের অনেক জায়গাই আবর্জনাময় হয়ে থাকছে। এর মূল কারণ হল, ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় আবর্জনা ফেলা নিয়ে নাগরিকদের একাংশের গয়ংগচ্ছ মনোভাব। বহু নাগরিক পুরসভার আবর্জনাসংগ্রহের গাড়ি চলে যাওয়ার পরে নোংরা বাড়ির বাইরে জমিয়ে রাখেন। বা যেখানে বিন রয়েছে, সেই বিনে গিয়ে ফেলে দেন। এর ফলে সংশ্লিষ্ট বিনে আবর্জনার স্তূপ জমে। শুধু তা-ই নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমনও ঘটে যে, বিন থাকলেও তার মধ্যে নোংরা ফেলেন না নাগরিকদের একাংশ। বিনের আশপাশেই নোংরা ছুড়ে ফেলেন। অথচ অভিযোগ, তার পরে সেই ছবি তুলেই পুরসভার হোয়াটসঅ্যাপ বা নিজেদেরসোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তার দায় পুরসভার উপরে চাপান। এ বার সেই প্রবণতা আটকাতেও পদক্ষেপ করেছে পুরসভা।
পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, যে সমস্ত এলাকায় এমন ঘটনা ধারাবাহিক ভাবে ঘটছে, সেখানে ওই বিন না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। যাতে সেখানকার মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার মাধ্যমে বুঝতে পারেন যে, তাঁদের এই নিয়মটি মেনে চলতে হবে। তা ছাড়া, কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে নোংরা করেন বা যত্রতত্র ময়লা ফেলেন, সেই অভিযোগ দায়ের হলে সংশ্লিষ্টব্যক্তিকে প্রথমে নোটিস পাঠাবে পুরসভা। তার পরেও এই ঘটনা ঘটতে থাকলে তাঁকে পুর আদালতে ডেকে পাঠানো হবে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
এ বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ‘‘নোংরা ফেলার জায়গা থাকা সত্ত্বেও অনেকে সেখানে ফেলছেন না। এমনও হয় যে, দূর থেকে বা আবাসনের উপর থেকে বিনে নোংরা ছুড়ে ফেলছেন অনেকে। কিন্তু তা বিনের মধ্যে না পড়ে রাস্তায় পড়ে থাকছে। তাই যত পরিষ্কারই করা হোক না কেন, শহরের অনেক জায়গাতেই নোংরা জমে থাকছে। এই সমস্যার সমাধানেই আবর্জনা সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy