মাকে ফাঁসানোর জন্য ফোন ক্লোন করে ভুয়ো স্ক্রিনশট বানিয়েছিল হরিদেবপুরের নাবালিকা! প্রতীকী ছবি।
নাবালিকা কন্যাই মায়ের মোবাইল ফোন ক্লোন করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল পুলিশকে! দিয়েছিল একাধিক ছবি এবং স্ক্রিনশটের ‘ডিজিটাল প্রমাণ’। যার অনেকগুলিই ছিল জাল। তদন্তে নেমে সেই ছবির মান যাচাই এবং উৎস সন্ধান করতে গিয়েই সত্যিটা ধরা পড়ে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশের দাবি, ইউটিউব দেখে ফোন ‘ক্লোন’ করা শিখেছিল ওই নাবালিকা। তার পর মায়ের ফোন ‘ক্লোন’ করে সে। মা সোনালি চন্দের সঙ্গে তাঁর বন্ধু প্রসূন মান্নার টেক্সট-কথোপকথনের ভুয়ো ‘স্ক্রিনশট’ও তৈরি করে। তার পর সেগুলি ‘প্রমাণ’ হিসাবে পুলিশকে দেখায়। ওই ভুয়ো স্ক্রিনশটে ‘ষড়যন্ত্র এবং খুনের চক্রান্তের’ প্রসঙ্গ ছিল। বস্তুত, সেগুলি দেখেই মঙ্গলবার ওই নাবালিকার মা এবং তাঁর ‘প্রেমিককে’ গ্রেফতার করা হয়েছিল।
পুলিশের কাছে ১৬ বছরের ওই কিশোরী লিখিত অভিযোগ করেছিল, তাকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন তারই মা সোনালি! সে জানায়, সোনালি ‘পরকীয়া’ সম্পর্কে জড়িত। ‘প্রেমিকের’ সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি কন্যাকে খুনের চক্রান্ত করেন। সোমবার বাড়িতে কন্যা থাকাকালীন আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
কিন্তু ওই কিশোরীর দেওয়া ‘ডিজিটাল প্রমাণগুলি’ খতিয়ে দেখতে গিয়েই তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ জাগে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। কিশোরীর দেওয়া ছবিগুলি ছিল কাঁচা হাতে ফটোশপ! তা ছাড়া, কথোপকথনের যে স্ক্রিনশটগুলি সে পুলিশকে দেখিয়েছিল, সেগুলি মঙ্গলবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই তার কাছে এসেছিল বলে পরীক্ষা করে দেখা যায়! তদন্তকারীদের মনে প্রশ্ন জাগে, অগ্নিকাণ্ডের কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানতে পেরেও ওই নাবালিকা তা কাউকে জানাল না?
খটকা ছিল, ছবি-সহ ‘ডিজিটাল প্রমাণের’ উৎস নিয়েও। এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই নাবালিকা পরস্পরবিরোধী কথা বলেছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কখনও সে দাবি করে, ব্লু-টুথ থেকে পেয়েছে। কখনও আবার বলে মায়ের ফোন থেকে ফরোয়ার্ড করেছে। কিন্তু ব্লু-টুথ এবং মেসেজের রেকর্ড পরীক্ষা করে কোনও প্রমাণ মেলেনি। এর পর পরীক্ষা করে জানা যায়, মায়ের ফোন মাস খানেক আগে ক্লোন করে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে ওই নাবালিকা। এর পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে বুধবার হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অন্তত এক সপ্তাহ আগে ওই ১৬ বছরের কিশোরী ‘নাটকীয় কাণ্ডের পরিকল্পনা কষেছিল। কিশোরীর বাবা এবং মা আলাদা থাকেন। মায়ের সঙ্গেই থাকে কন্যা। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক সমস্যার কারণে ওই নাবালিকা মানসিক অস্থিরতার শিকার হয়ে এমন করতে পারেন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
সোনালি এবং তাঁর বন্ধু, পেশায় রাজ্য পুলিশের কর্মচারী প্রসূনকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বুধবার তাঁদের অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের আবেদন আদালত মঞ্জুর করে। আদালত চত্বরে সোনালিকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কি মেয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে? গিল্টি ফিল (অপরাধবোধ) হচ্ছে? সোনালি বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না। আমার নিজের সে রকম মানসিক অবস্থা নেই। আমি নিজেই এটা নিয়ে ভাবতে পারছি না ও এরকম করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy