Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

গাঁধীকে নিয়ে স্কুলের নাটকে সম্প্রীতির বার্তা

উত্তর কলকাতার বলরাম ঘোষ স্ট্রিটে কলকাতা অনাথ আশ্রম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মঞ্চস্থ করেছে গাঁধীর জীবনাদর্শের উপরে রচিত নাটক ‘ছোটা গাঁধী’।

গাঁধীরূপী সুমিত। নিজস্ব চিত্র

গাঁধীরূপী সুমিত। নিজস্ব চিত্র

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

‘ছোটা গাঁধী’! এই নামেই এখন জনপ্রিয় নবম শ্রেণির ছাত্র সুমিত সরকার। স্কুলের নাটকে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ভূমিকায় অভিনয় করে সে ছড়িয়ে দিচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা।

উত্তর কলকাতার বলরাম ঘোষ স্ট্রিটে কলকাতা অনাথ আশ্রম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মঞ্চস্থ করেছে গাঁধীর জীবনাদর্শের উপরে রচিত নাটক ‘ছোটা গাঁধী’। সুমিত জানায়, ওই নাটকে অভিনয় করতে গিয়েই গাঁধীজির জীবনদর্শনের প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধা জন্মেছে। সুমিতের কথায়, ‘‘গাঁধীজি যা বলে গিয়েছেন, তা আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক।’’ তাই শুধু নাটকেই নয়, ক্লাসের বন্ধুদের বা পাড়ার প্রতিবেশী-পরিজনদের মধ্যেও সুমিত ছড়িয়ে দিচ্ছে গাঁধীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা।

সুমিত জানাচ্ছে, ‘ছোটা গাঁধী’ নাটকের একেবারে শেষে একটা সংলাপ আছে। ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে সেই সংলাপ মুখস্থ বলে ফেলে সুমিত— ‘‘কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, আগরা থেকে অসম, এত বড় আমাদের দেশ। সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে। তবেই তো দেশের উন্নতি হবে।’’ সুমিত জানায়, এই সংলাপ বললেই দর্শকেরা হাততালিতে ভরিয়ে দিচ্ছেন প্রেক্ষাগৃহ।

রাজ্যের সরকারি, সরকার-পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি পালন করছে গাঁধীজির ১৫০তম জন্মবর্ষ। সেই উপলক্ষে গোটা বছর ধরেই চলবে গাঁধীজির জীবনদর্শনের উপরে ভিত্তি করে তৈরি নানা ধরনের অনুষ্ঠান। তারই অঙ্গ হিসেবে উত্তর কলকাতার কলকাতা অনাথ আশ্রম প্রাথমিক বিদ্যালয় ‘ছোটা গাঁধী’ নামের নাটকটি করছে। সেটি লিখেছেন ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক উৎপল মুখোপাধ্যায়। উৎপলবাবুর কথায়, ‘‘গাঁধী তো সব সময়ে দেশের ঐক্যের কথা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলতেন। তাই আমি নাটক লিখতে গিয়ে গাঁধীর মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নানা সংলাপ বসিয়েছি। এমন সংলাপ, যা আজকের দিনে সমাজকে একটা বার্তা দেয়। ছোটদের সম্প্রীতির কথা শেখায়।’’

উৎপলবাবু জানালেন, সুমিত ওই স্কুল সংলগ্ন অনাথ আশ্রমে থাকে। সেটি চালায় রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণ দফতর। উৎপলবাবু বলেন, ‘‘সুমিত প্রাথমিকে আমাদের স্কুলেই পড়ত। ওকে দেখেই আমাদের মনে হয়েছিল, গাঁধীর ভূমিকায় খুব ভাল মানাবে। তাই ওকেই আমরা গাঁধীর ভূমিকায় নিয়েছি। নাটকের বাকি অভিনেতারা সবাই অবশ্য আমাদের স্কুলেরই।’’

গাঁধীর ভূমিকায় অভিনয় করতে গিয়ে নেড়া হতে হয়েছে সুমিতকে। সে বলে, ‘‘প্রথমে আপত্তি করেছিলাম। কিন্তু পরে নেড়া হয়ে গাঁধীর ভূমিকায় অভিনয় করে সব দ্বিধা কেটে যায়। আমাকে এখন সবাই ‘ছোটা গাঁধী’ বলতে শুরু করেছে। এটাই খুব বড় প্রাপ্তি।’’

দিন তিনেক আগে শ্যামপুকুর থানার কাছে সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ে তাঁদের ‘ছোটা গাঁধী’ অভিনীত হয়েছে বলে জানালেন উৎপলবাবু। তিনি জানান, নাটকটির সম্প্রীতির বার্তা এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে, অন্য কয়েকটি স্কুলও তা মঞ্চস্থ করতে চায়। পাইকপাড়ার রাজা মণীন্দ্র মেমোরিয়াল প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কাকলি দাস বলেন, ‘‘২১ মিনিটের ছোট্ট নাটক ‘ছোটা গাঁধী’। অভিনয় করেছে খুদেরা। কিন্তু এই নাটকের বার্তা খুবই ভাল ও প্রাসঙ্গিক। তাই আমরা সেটি আমাদের স্কুলেও মঞ্চস্থ করতে চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mahatma Gandhi School Drama Harmony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy