ইতিহাস: আলিপুর বোমা মামলার স্মৃতিফলক বসানোর কাজ চলছে। বুধবার, মুরারিপুকুরের রবীন্দ্র উদ্যানে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত ১৪ জন বিপ্লবীর স্মরণে নতুন ফলক বসছে অরবিন্দ ঘোষের স্মৃতি-বিজড়িত, মুরারিপুকুরের রবীন্দ্র উদ্যান এবং অরবিন্দ ঘাটে। আজকের প্রজন্মের কাছে বিস্মৃতপ্রায় সেই বিপ্লবীরা। পুরসভার সহযোগিতায় তাই তাঁদের স্মরণ করতে উদ্যোগী হয়েছে ‘অরবিন্দ পাঠমন্দির’। সেই কাজই চলছে জোরকদমে। আগামী কাল, শুক্রবার সেই ফলকের উন্মোচন হবে।
ঘিঞ্জি মুরারিপুকুর অঞ্চলে বিপ্লবী বারীন ঘোষ সরণির উপরেই রয়েছে মুরারিপুকুর রবীন্দ্র উদ্যান ও তার ভিতরের অরবিন্দ ঘাট। অরবিন্দ পাঠমন্দির সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখন যেখানে রবীন্দ্র উদ্যান এবং অরবিন্দ ঘাট রয়েছে, এক সময়ে সেখানেই ছিল অরবিন্দের পৈতৃক বাগানবাড়ি। ১৯০৮ সালের ২ মে সেই বাগানবাড়ি থেকেই আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত ১৪ জন বিপ্লবী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
অরবিন্দ পাঠমন্দিরের সচিব শঙ্কর মিত্র জানাচ্ছেন, স্বাধীনতার আগে জলা-জঙ্গলে ঘেরা মানিকতলা এলাকার মুরারিপুকুর ছিল বিপ্লবীদের আস্তানা। মুরারিপুকুরের বাগানবাড়িটি বিপ্লবীদের অনুশীলন কেন্দ্র নামেও পরিচিত ছিল। আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত ১৪ জন বিপ্লবী যে দিন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন, সে দিনই অন্য জায়গা থেকে ধরা পড়েন অরবিন্দও।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘অরবিন্দের স্মৃতিধন্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গার মধ্যে এই বাগানবাড়িটির গুরুত্ব অপরিসীম। অরবিন্দের বাবা কে ডি ঘোষের এই বাড়ি থেকেই বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, শিশিরকুমার ঘোষ, বিভূতিভূষণ সরকার, নলিনীকান্ত গুপ্ত, বিজয়কুমার নাগ, উল্লাসকর দত্ত, ইন্দুভূষণ রায়, পরেশচন্দ্র মল্লিক, শচীন্দ্রকুমার সেন, কুঞ্জলাল সাহা, পূর্ণচন্দ্র সেন, নরেন্দ্রনাথ বক্সী, হেমেন্দ্রকুমার ঘোষ এবং উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’’
কিন্তু পাল্টে যাওয়া আজকের মুরারিপুকুরের কত জন মনে রেখেছেন এই গৌরবের ইতিহাস? সেই সময়ের স্মৃতিচিহ্নই বা কতটুকু আছে এখন?
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর দাবি, অরবিন্দের বাগানবাড়ি, বিপ্লবীদের আস্তানা তো অনেক বছর আগেই দখল হয়ে বাড়ি উঠে গিয়েছে। তৎকালীন মুরারিপুকুরে জঙ্গল-ঘেরা একটি মাঠ ছিল। সেই মাঠটি পরিচিত ছিল বিপ্লবীদের বোমার মাঠ নামে। সেটাই এখন শুধু রয়েছে। এখনও এলাকাবাসীর কাছে ওই মাঠ বোমার মাঠ নামেই পরিচিত। কিন্তু কেন ওই মাঠকে বোমার মাঠ
বলা হয়, তা হয়তো জানেন না অনেকেই।
রবীন্দ্র উদ্যানে ফলক স্থাপন করে সেই ইতিহাসকেই ফের মনে করাতে চায় অরবিন্দ পাঠমন্দির। শঙ্করবাবু জানান, ১৯৯০ সালের ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস এবং অরবিন্দের জন্মদিন
উপলক্ষে মুরারিপুকুরে একটি স্মারক স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু আজ সেই ফলকের অস্তিত্ব নেই। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘চলতি বছরের ১৫ অগস্ট অরবিন্দের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। এই জায়গার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে পুর প্রতিনিধির সাহায্যে তাই ফের ফলক বসাতে উদ্যোগী হয়েছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy