জাদুকর পি সি (প্রদীপচন্দ্র) সরকার (জুনিয়র)।—ফাইল চিত্র।
পাঁচ দশক আগে এমনই মুক্তির ম্যাজিকে চমকে উঠেছিল তামাম দুনিয়া। জাদুকর পি সি (প্রদীপচন্দ্র) সরকার (জুনিয়র)-কে বাক্সবন্দি অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ৯০ সেকেন্ড পরে দর্শকেরা দেখলেন, জাদুকর বাক্স থেকে বেরিয়ে এসে জলে ভাসছেন।
সেই ঘটনার দীর্ঘ ৫০ বছর পরে, গত রবিবার গঙ্গায় অনেকটা একই ধরনের ম্যাজিক দেখাতে গিয়েছিলেন আর এক জাদুকর চঞ্চল লাহিড়ী। কিন্তু জল থেকে আর উঠে আসতে পারেননি। ডুবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। যে ঘটনা প্রসঙ্গে প্রদীপবাবু বলছেন, ‘‘ওঁর প্রস্তুতিতে সামান্য খামতি ছিল। তার দাম প্রাণ দিয়ে দিতে হল। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওঁকে চিনতাম না। তা না হলে ওই সামান্য ত্রুটি ধরিয়ে দিতাম।’’
কী সেই ত্রুটি? প্রদীপবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘ওঁর পায়ে ভারী মোজা ও তার উপরে মোটা পট্টি জড়ানো ছিল। ওই ভারী জিনিস পায়ে পরে সাঁতার কাটা যায় না। তাই বাঁধন খুলতে পারলেও সাঁতরাতে পারেননি।’’ তিনি আরও বলছেন, ম্যাজিক আসলে বিজ্ঞান। তাই জাদু দেখাতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রয়োজন। সেখানে সামান্য খামতিও বিপদ ডেকে আনতে পারে।
আরও পড়ুন: দু’পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার জাদুকরের দেহ
কথায় কথায় উঠে আসে ৫০ বছর আগের সেই বিখ্যাত ম্যাজিকের প্রস্তুতির কথা। জাদুকর জানাচ্ছেন, সেই ম্যাজিক দেখানোর আগে প্রায় এক বছর ধরে রবীন্দ্র সরোবরে জলের তলায় ডুব সাঁতার দিয়ে হ্যান্ডকাফ খোলার অনুশীলন করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে ছিল প্রাণায়াম। ‘‘ওই অল্প সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে সব কাজ নির্ভুল ভাবে করাটাই সাফল্যের চাবিকাঠি’’— বলছেন প্রদীপবাবু। ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গোপসাগরে ওই জাদু দেখানোর সময় সেই সব কৌশলই কাজে এসেছিল। আমেরিকায় দীর্ঘ দিন ধরে এই বন্ধনমুক্তির জাদু প্রচলিত ছিল। তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন জাদুকর হ্যারি হুডিনি। জাদুকর পি সি সরকার (সিনিয়র)ও এই ধরনের জাদু দেখিয়েছিলেন।
তাঁর ছেলে প্রদীপবাবু বলছেন, ‘‘সাংহাইয়ে ট্রেনলাইনে বাবাকে হ্যান্ডকাফ দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ট্রেন আসার ঠিক আগে বাবা বাঁধন খুলে উধাও।’’ অনেকেই বলছেন, প্রস্তুতি এবং আত্মবিশ্বাস— ম্যাজিকে দুটোই দরকার। তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কখনও কখনও বিপদ ডেকে আনে। যেমনটা হয়েছিল হুডিনির ক্ষেত্রে। এক ভক্তের ঘুসিতে মারাত্মক জখম হয়েছিলেন হুডিনি। অনেকেই বলেন, প্রস্তুত হওয়ার আগেই ঘুসি মারায় সম্মতি দিয়েছিলেন তিনি। আর তাতেই গুরুতর ভাবে জখম হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy