আরজি কর হাসপাতালের ফুসফুস এবং বক্ষরোগ বিভাগের প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরি। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর হাসপাতালের তাঁরই বিভাগের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। শুক্রবার ভোরে সেই ঘটনার খবর পেয়ে তিনি তড়িঘড়ি এসে পৌঁছনও ঘটনাস্থলে। তার পরে কী হয়েছিল, বুধবার তা সবিস্তার জানালেন আরজি করের ফুসফুস এবং বক্ষরোগ বিভাগের প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরী। তবে তিনি বলেছেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহের দিকে তাকাতে পারেননি তিনি।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনার পর প্রায় এক সপ্তাহ ঘুরতে চলল। গত কয়েক দিনে সেই ঘটনা সম্পর্কে নানা রকম বক্তব্য এবং অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। অরুণাভকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন পড়ুয়ারা। বুধবার প্রথম প্রকাশ্যে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন নিহত মহিলা চিকিৎসকের বিভাগীয় প্রধান। সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ওই ঘরে এক জনের উপর অত্যাচার করা হল। তাঁর চিৎকার কেউ শুনতে পেল না। উত্তরে অরুণাভ বলেন, ‘‘ওই ঘরে এসি চলে। এসি চললে ভিতরের আওয়াজ বাইরে আসে না। তবে আমি জানি না, সেই সময় সেখানে এসি চালানো ছিল কি না।’’
অরুণাভ জানিয়েছেন, ঘটনার পরে তাঁকে ফোন করে ওই বিষয়ে জানান ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কর্মী। খবর পেয়েই তিনি ফোন করেন আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং তৎকালীন সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠকে। তাঁরা জানান, খবরটি ইতিমধ্যেই তাঁরা পেয়েছেন। তাঁরাও আসছেন ঘটনাস্থলে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে অরুণাভরা কী দেখেছিলেন? জানতে চাওয়া হলে অরুণাভ বলেন, ‘‘আমি সে ভাবে দেখিনি। যে বর্ণনা আমি শুনেছিলাম, তা শোনার পরে কাছেও যাইনি। আমি দূর থেকে দেখেছিলাম মেয়েটি পড়ে রয়েছে। তার পোশাক-আশাক অবিন্যস্ত। সে রক্তাক্ত ছিল কি না, তা-ও বুঝতে পারিনি।’’
নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাড়িতে সে দিনই ফোন করে খবর দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল ওই চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। যদিও অরুণাভের দাবি, তিনি জানেন না, কে ওই কথা বলেছেন। তিনি অন্তত কাউকে এমন কিছু বলার নির্দেশ দেননি। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে অরুণাভ বলেছেন, ‘‘মেয়েটির বাড়িতে খবর দেওয়ার জন্য ফোন নম্বর খোঁজা শুরু হয়। প্রথমে ওর আধার কার্ড খোঁজা হয়। তাতে ওর নিজেরই মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। পরে কলেজের এক পড়ুয়া বাড়ির নম্বর দেয়। আমি এক মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে নম্বরটি দিয়ে বলেছিলাম বাড়িতে খবর দিতে। কিন্তু আত্মহত্যার কথা বলতে বলিনি।’’
এর পরে পুলিশ আসে। খবর পেয়ে হাজির হন নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা-ও। অভিযোগ ছিল, তাঁদের দীর্ঘ ক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়েছিল অরুণাভের ঘরেই। ঘটনাস্থলে যেতে দেওয়া হয়নি। সেখানে কাজ করছিল পুলিশ। বুধবার সেই অভিযোগের ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হয় অরুণাভকে। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘মেয়েটির মা-বাবা যখন আসেন, তখন পুলিশ চলে এসেছিল। তারা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছিল বলেই তাঁদের আমার ঘরে বসতে দেওয়া হয়েছিল। ইচ্ছা করে বসিয়ে রাখা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy