Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Crime

Cruelty: প্রোমোটারের দল পেরেক পুঁতেছিল ছেলের গায়ে, ভোলেনি পরিবার

২০০৪ সালের ওই ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা হাতুড়ি নিয়ে আক্রমণ চালায়। হাতুড়ি দিয়ে বাড়ির গেটের সব তালা ভেঙে ফেলা হয়।

অনিরুদ্ধ বাজোরিয়া।

অনিরুদ্ধ বাজোরিয়া।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২২ ০৬:২৫
Share: Save:

আঠারো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। পরিবারের মেজো ছেলে এখন বিদেশে। তা সত্ত্বেও আতঙ্কের স্মৃতি মাঝেমধ্যে ফিরে আসে। বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা সেই ছেলের হাতে ও পায়ে পেরেক পুঁতে দিয়েছিল। শরীরে দীর্ঘদিন সেই যন্ত্রণা নিয়েই কেটেছিল দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থী কিশোরের। প্রতিবেশীদের অনেকে ‘ক্রুশবিদ্ধ ব্যবসায়ী-পুত্র’র গল্প হিসেবেই সেই ঘটনার কথা মনে রেখেছেন।

সল্টলেকের বিএল ব্লকে বাড়ির দখল নিয়ে মারামারির খবর টেলিভিশনে দেখেছেন পেশায় আইনজীবী অনিরুদ্ধ বাজোরিয়া। যা দেখার পরে সিই ব্লকের বাসিন্দা ওই আইনজীবীর বার বার মনে পড়েছে যন্ত্রণায় কাতর দাদার সেই ছেলেবেলার মুখের ছবিটা। ফ্ল্যাটের মালিকানা সংক্রান্ত বিবাদ ঘিরে ২০০২ সাল থেকে প্রোমোটারের সঙ্গে তাঁদের গোলমাল চলছিল। অভিযোগ, ২০০৪ সালে দু’দফায় প্রোমোটারের লোকজন বাড়িতে চড়াও হয় দখল নেওয়ার জন্য। ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয় সে বছর দুর্গাপুজোর একটি দিনে।

কী হয়েছিল? বাজোরিয়া পরিবারের অভিযোগ, ওই প্রোমোটার বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাটটি তাদের এবং অন্য এক পক্ষের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। বিষয়টি তাদের প্রথমে জানা ছিল না। বিবাদ শুরু তা থেকেই। অনিরুদ্ধের কথায়, ‘‘বাড়ির একতলার ফ্ল্যাটেরও কোনও কাগজপত্র প্রোমোটার আমাদের দিচ্ছিল না। অন্য পক্ষকে টাকা দিয়ে আমরা দোতলার অংশের মালিকানা নিই। আইনজীবীর পরামর্শে আমরা নির্মীয়মাণ একতলাতেই মালপত্র ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। তার পরেই দুর্গাপুজোর সময়ে এক দিন ওরা ৫০-৬০ জন মিলে আমাদের উপরে হামলা চালায়। ওরা চেয়েছিল একতলাটা দখল করতে।’’

২০০৪ সালের ওই ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল। অনিরুদ্ধের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা হাতুড়ি নিয়ে আক্রমণ চালায়। হাতুড়ি দিয়ে বাড়ির গেটের সব তালা ভেঙে ফেলা হয়। তার পরে অনিরুদ্ধের বাবা অরুণ বাজোরিয়াকে সামনে পেয়ে তাঁর পায়ে ও মাথায় হাতুড়ির আঘাত করা হয়। গুরুতর জখম হন ওই ব্যবসায়ী। এর পরে ছোট অনিরুদ্ধকেও দুষ্কৃতীরা মারতে যাচ্ছে দেখে পাড়ার লোকজন কোনও ভাবে তাঁকে বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু ছাড় পাননি তাঁর দাদা আদিত্য।

ভাইয়ের কথায়, ‘‘আমি তখন অনেক ছোট। দাদা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেবে। দাদাকে ওরা ধরে ফেলে। তার পরে রাস্তার উপরে ফেলে হাতে ও পায়ে পেরেক পুঁতে দেয়। দাদা যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। পুলিশের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। সংবাদমাধ্যম পাশে এসে দাঁড়ায়।’’

পেরেকবিদ্ধ আদিত্যের ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দফতর থেকে যোগাযোগ করে তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। পরে আদালতে মামলা করে ফ্ল্যাটের মালিকানা তাঁরা পান বলে জানাচ্ছেন অনিরুদ্ধ। আদিত্য এখন বিদেশে। অনিরুদ্ধ বললেন, ‘‘বাবা এখনও সেই ঘটনার কথা উঠলে ভয় পেয়ে যান। বাবারও পা ঠিক হতে বেশ কিছু দিন সময় লেগেছিল। দাদা আজও সেই ঘটনা ভুলতে পারেননি। পরে আদালতে আমরা মামলা জিতি। ওই প্রোমোটারও গ্রেফতার হন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Boy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy