Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Jadavpur

Accident: প্রায় সব রকম মদই ছিল রাহুলের পেটে, ধাক্কা মেরেও বেপরোয়া ছিল গতি

দু’টি দোকান দুমড়ে, পাঁচ জনকে ঘায়েল করে, এক ব্যক্তিকে পিষে মেরে গ্রেফতার হন ওই চালক রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।

দুর্ঘটনা: যাদবপুরে এই জায়গাতেই ধাক্কা মারে গাড়িটি।

দুর্ঘটনা: যাদবপুরে এই জায়গাতেই ধাক্কা মারে গাড়িটি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৪৫
Share: Save:

যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত গাড়ির চালক ঘটনার রাতে চায়না টাউনের একটি রেস্তরাঁ থেকে ফিরছিলেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেখানে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের নেশার পানীয় দফায় দফায় মিশিয়ে পান করেছিলেন গাড়িচালক। তাতেই তাঁর এমন অবস্থা হয় যে, চোখে অন্ধকার দেখছিলেন। এর মধ্যেই জোরে গান বাজানোর পাশাপাশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। তদন্তকারীরা এক রকম নিশ্চিত, অনিয়ন্ত্রিত শরীরে গাড়ি চালাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। তার ফলেই দু’টি দোকান দুমড়ে, পাঁচ জনকে ঘায়েল করে, এক ব্যক্তিকে পিষে মেরে গ্রেফতার হন ওই চালক রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে দুর্ঘটনার কয়েক দিন পরেও রাহুলের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারেনি পুলিশ। প্রথমে বলা হচ্ছিল, রাহুলের লাইসেন্সটি বেঙ্গালুরুতে রয়েছে। তাঁর বাবা সেটি সঙ্গে করে নিয়ে আসছেন। কিন্তু ধৃতের বাবা শহরে এসে পৌঁছলেও পুলিশকর্মীরা লাইসেন্সটি মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত হাতে পাননি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, রাহুলের কি আদৌ গাড়ি চালানোর লাইসেন্স আছে? তদন্তকারী এক পুলিশকর্মী অবশ্য বলছেন, ‘‘লাইসেন্স থাকলেও ওই চালকের অপরাধ তাতে কিছুমাত্র কমবে না। তবে লাইসেন্স না পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু কড়া আইনের ধারা যুক্ত হবে।’’

গত শনিবার রাত ১০টা নাগাদ যাদবপুরের কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরির কাছে একটি বেপরোয়া সেডান গাড়ি পর পর দু’টি দোকানে ধাক্কা মারে। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বছর তেত্রিশের ওই যুবক। তদন্তে জানা যায়, রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোড ধরে গাড়িটি এত দ্রুত গতিতে আসছিল যে, প্রথমে সেটি রাস্তার ধারের একটি রোলের দোকানে সজোরে ধাক্কা মারে। এর পরে সেটি প্রায় ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে কয়েক জনকে ধাক্কা মেরে এক জনকে পিষে দিয়ে একটি চায়ের দোকানে ঢুকে যায়। জখম হন মোট পাঁচ জন। মৃত্যু হয় টমাস সোমি কর্মকার নামে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির।

গাড়িটির যান্ত্রিক পরীক্ষা করার পরে লালবাজারের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা দেখেছেন, সেটির সামনের অংশের মাঝখানে এবং দু’পাশে রক্তের দাগ রয়েছে। যা থেকে তাঁদের ধারণা, গাড়িটি এক বার ধাক্কা মারার পরে থেমে যায়নি। আরও কয়েক বার সেটি ধাক্কা মেরেছে। এক তদন্তকারীর কথায়,‘‘প্রাথমিক পরীক্ষায় যা পাওয়া গিয়েছে, তা থেকে বলা যায়, গাড়িটি অন্তত একশো কিলোমিটার গতিতে ছুটছিল। প্রথমে কিছুর সঙ্গে সংঘর্ষের পরে সেটির গতি কমে সত্তরে নেমে আসে। তবে গাড়িটি তখনই থেমে যায়নি। সেই অবস্থাতেই ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরতে ঘুরতে একাধিক জায়গায় ধাক্কা মেরেছে। নতুন করে গাড়িতে পিক-আপ না দিলে যা হওয়ার কথা নয়।’’ এতেই তদন্তকারীদের প্রশ্ন, তবে কি প্রথম বার ধাক্কা মারার পরে গাড়ি নিয়ে চালক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন?

ওই রাতে গাড়িতে থাকা অন্য দু’জনের বক্তব্যের সঙ্গে এখানেই পুলিশ ঘটনাটি মেলানোর চেষ্টা করছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁরা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করার পরে কার্যত হুঁশ ছিল না রাহুলের। তার পরেও তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে তাঁদের পৌঁছে দেওয়ার জেদ ধরেছিলেন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রথম বার ধাক্কা মেরে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছিলেন রাহুল। এমনটাই জেনেছেন তদন্তকারীরা। ফলে ব্রেকের বদলে নতুন করে গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন কি না, সেটা গাড়িতে থাকা দু’জনের কাছেও স্পষ্ট নয় বলেই দাবি। পুলিশের দাবি, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা তাঁদের জানিয়েছেন, গাড়িটিতে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। যা হওয়ার হয়েছে চালকের অসাবধানতায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Jadavpur Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy