মাসিক হিসাবে বা রাতে পুরসভার পার্কিং এলাকায় গাড়ি রাখার খরচও বেড়েছে অনেকটাই। প্রতীকী ছবি।
কলকাতা পুরসভা এলাকায় বর্ধিত হারে পার্কিং-ফি আদায় শুরু হল শনিবার থেকে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দু’চাকা হোক বা চার চাকা, সমস্তক্ষেত্রেই আগের চেয়ে পার্কিংয়ের খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ বা তিন গুণ। মাসিক হিসাবে বা রাতে পুরসভার পার্কিং এলাকায় গাড়ি রাখার খরচও বেড়েছে অনেকটাই। এতে পার্কিং-ফি আদায়ে দুর্নীতি রোখার পাশাপাশি পুর কোষাগারে আয়ের টাকা ঢুকবে বলেও মনে করা হচ্ছে। আগে যা পেতে বহু ক্ষেত্রে বঞ্চিত হত পুরসভা। যদিও এ দিন শহরের নানা জায়গায় ঘুরে দেখা গেল, নতুন পার্কিং-ফি কাঠামো চালু হওয়ার প্রথম দিনেও দুর্নীতির অন্ত নেই। বহু জায়গায় এখনও পার্কিং বাবদ মূল্য হাঁকা হচ্ছে যেমন খুশি!
পুরসভা সূত্রের খবর, নয়া নিয়মে এখন থেকে চার চাকার পার্কিংয়ের জন্য এক ঘণ্টা পর্যন্ত দিতে হবে ২০ টাকা। এর পরে দুই, তিন, চার ও পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে দিতে হবে যথাক্রমে ৪০, ৮০, ১২০ ও ১৬০ টাকা। পাঁচ ঘণ্টার পর থেকে প্রতি ঘণ্টায় খরচ ১০০ টাকা করে। আগে প্রতি ঘণ্টায় ১০ টাকা করে, অর্থাৎ ন’ঘণ্টা পর্যন্ত দিতে হত ৯০ টাকা।
দু’চাকার ক্ষেত্রে নতুন হিসাবে এক ঘণ্টা সময় পর্যন্ত দিতে হবে ১০ টাকা। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ঘণ্টা পর্যন্ত দিতে হবে যথাক্রমে ২০, ৪০, ৬০ ও ৮০ টাকা। এর পরে প্রতি ঘণ্টায় যুক্ত হবে ৫০ টাকা করে। বাস, লরি-সহ পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রেও পার্কিং খরচ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন কাঠামোয় টাকার অঙ্ক প্রথমঘণ্টার জন্য ৪০ টাকা। দ্বিতীয়, তৃতীয় ঘণ্টা পর্যন্ত যথাক্রমে ৮০ ও ১৬০ টাকা। চার ও পাঁচ ঘণ্টা পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলে গুনতে হবে যথাক্রমে ২৪০ ও ৩২০ টাকা। পাঁচ ঘণ্টারও বেশি পার্কিং করলে দিতে হবে ঘণ্টাপিছু ২০০ টাকা।
পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, আগামী দিনে ই-পস যন্ত্রের মাধ্যমে এই টাকা আদায় করা হবে। এখনও পর্যন্ত যেখানে এই যন্ত্র পৌঁছয়নি, শুধুমাত্র সেখানেই নগদে পার্কিংয়ের খরচ দেওয়া যাবে। যেখানে যন্ত্র রয়েছে, সেখানে নগদে টাকা নিলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জরিমানা করা হবে। যিনি গাড়ি রাখছেন, জরিমানা দিতে হবে তাঁকেও।
তবে, এ দিন ক্যামাক স্ট্রিটে গিয়ে দেখা গেল, যন্ত্র নিয়ে এই নয়া নিয়ম মানার বালাই নেই অনেকেরই। যন্ত্র ব্যাগে রেখে নগদেই টাকা তুলে চলেছেন কয়েক জন আদায়কারী। সেখানে একটি শপিং মলের উল্টো দিকে গাড়ি দাঁড় করানোর সময়ে চালককে এক পার্কিং-ফি আদায়কারী বললেন, ‘‘আজ থেকেই ভাড়া বেড়েছে, জানেন তো? ঘণ্টায় এখন ৩০ টাকা।’’ চালক দ্রুত তাতেই রাজি। কিন্তু প্রথম ঘণ্টায় তো ২০ টাকা নেওয়ার কথা! পার্কিং আদায়কারীর উত্তর, ‘‘ওই টাকা নিলে আমাদের চলবে? তাই যাঁকে যেমন পারছি, বাড়িয়ে বলছি।’’
পার্ক স্ট্রিটে আবার ঘণ্টা তিনেক গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা এক পরিবারের থেকে নেওয়া হল ২৪০ টাকা! অথচ, নতুন হিসাবে তা হওয়ার কথা ৮০ টাকা। এত বেশি কেন? গাড়ির সওয়ারিদের প্রশ্নের উত্তরে পার্কিং খরচ আদায়কারী বললেন, ‘‘নতুন নিয়ম হয়েছে। এটাই দিতে হবে।’’
গাড়ির সওয়ারিরা ভাড়ার চার্ট দেখতে চাননি। চাইলে কী দেখানো হত, জানা নেই। এ বিষয়ে পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্কিং বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) দেবাশিস কুমার বললেন, ‘‘এই ধরনের দুর্নীতি রুখতেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হল। এর পরেও কিছু হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
ধর্মতলার কাছে আর এক পার্কিং আদায়কারী যদিও অকপটেবলছেন, ‘‘পরে কী হবে জানি না। তাই বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। এর পরে যতই নিয়ম হোক, দু’লাইনেগাড়ি রেখে রোজগার চালিয়ে যেতে হবে। কারণ, অনেকে দু’লাইনে গাড়ি রাখার অনুমতি দিয়েও প্রচুর আয় করেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy