—প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি বাসে টাঙাতে হবে সরকার অনুমোদিত ভাড়ার সুস্পষ্ট তালিকা। সঙ্গে রাখতে হবে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থাও। গত বছর বেসরকারি বাসের ভাড়া সংক্রান্ত একটি মামলায় হাই কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সম্প্রতি নতুন করে বাসমালিক সংগঠনগুলিকে এই নির্দেশ পাঠিয়েছে। সেই নির্দেশে বেসরকারি বাসে ভাড়ার তালিকা এমন ভাবে টাঙাতে বলা হয়েছে, যাতে তা সকলের চোখে পড়ে। কোথাও বেশি ভাড়া নেওয়া হলে যাত্রীরা যাতে অভিযোগ জানাতে পারেন, তার ব্যবস্থাও করার কথা বলা হয়েছে। নতুন করে জারি হওয়া এই নির্দেশে প্রমাদ গুনছে বাসমালিক সংগঠনগুলি। ভাড়া নিয়ে সরকার খুব বেশি কড়াকড়ি করলে রাস্তা থেকে বাস উধাও হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে তারা।
গত বছর জনৈক প্রত্যুষ পাটোয়ারির দায়ের করা একটি মামলার রায়ে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বেসরকারি বাসে বাড়তি ভাড়া নেওয়া আটকাতে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিল। যার মধ্যে বাসে ভাড়ার তালিকা টাঙানো ছাড়াও লিখিত অভিযোগ জানানোর জন্য আলাদা খাতা রাখার কথা বলা হয়েছিল। এ ছাড়া, পরিবহণ দফতরে অভিযোগ জানানোর জন্য নির্দিষ্ট হেল্পলাইন নম্বর চালু করার কথাও বলা হয়েছিল। কোনও জায়গা থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেলে দফতরের আধিকারিকেরা যাতে তা খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়েছিল। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, পুরনো নির্দেশের কথাই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, অতিমারি পরিস্থিতির পরে জ্বালানি-সহ নানা খাতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি বাসে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। সরকারি ভাবে ভাড়া না বাড়লেওযাত্রীদের বর্ধিত হারে ভাড়া দিতে হচ্ছে। ভাড়া নিয়ে এই লুকোচুরি খেলাসমর্থন করছে না বাসমালিক সংগঠনগুলিও।
সরকারি ওই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাসমালিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে বাসমালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছিল। ওই মামলায় রাজ্য তাদের অবস্থানের কথা না জানানোয় তাঁরা ফের আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি, বাসের ভাড়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নানা ধরনের খরচ বৃদ্ধির কারণে সারা দেশে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণের ভাড়া নির্ধারণের একটিই নীতি রয়েছে। সেই নীতি উপেক্ষা করার ফলে পরিষেবা ভেঙে পড়ছে। বাস শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ পরিষেবা।’’
এই প্রসঙ্গে ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘বাসের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে ২০২০-’২১ সালে পর পর দু’টি কমিটি তৈরি হলেও তাদের রিপোর্ট বাইরে আসেনি। ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরকারকে যথাযথ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ এক দিকে, ১৫ বছর বয়সের গেরোয় শহরে প্রায় দেড় হাজার বাস বাতিল হতে চলেছে। তার মধ্যে এই সরকারি নির্দেশ নিয়ে কড়াকড়ি বাড়লে বেসরকারি বাসের পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বাসমালিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy