অ্যাম্বুল্যান্সের ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে। নিজস্ব চিত্র
২০১৭ সালের পরে আর কাগজপত্র নবীকরণ করা হয়নি অ্যাম্বুল্যান্সটির। এমনকি, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদও ফুরিয়ে গিয়েছিল। ওই লাইসেন্স নিয়েই শেষ এক মাস পনেরো দিন অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাচ্ছিল ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডের ঘটনায় ধৃত শেখ আব্দুর রহমান।
এই বিষয়ে স্বাভাবিক ভাবেই যে প্রশ্নটি উঠে আসছে তা হল, মেয়াদ উত্তীর্ণ কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া অ্যাম্বুল্যান্সটি চলছিল কী ভাবে? পুলিশকর্তাদের একাংশের দাবি, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স বলেই অনেক ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হয় না।’’
প্রায় আট বছর আগে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের পরিষেবা দিতে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি কিনেছিল মহেশতলার চটা কালিকাপুর গ্রামের একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শেষ তিন বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি। বিমা, সিএফ (সার্টিফিকেট অব ফিটনেস), রেজিস্ট্রেশন— সবই ছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ। রোড ট্যাক্সও ঠিক মতো দেওয়া ছিল না।
ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামেরই বাসিন্দা বেকার যুবক আব্দুরকে অ্যাম্বুল্যান্সটি দেওয়া হয়েছিল শর্তসাপেক্ষে। প্রতিষ্ঠানের এক সদস্যের কথায়, ‘‘আব্দুরকে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়নি। ওই যুবক নিজেই গাড়িটি চলানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। তখন ওঁকে বলা হয়, গাড়িটি পুরো সারানোর পরে প্রথমে প্রতিষ্ঠানে এসে জমা দিতে। তার পরে ঠিক করা হবে, তিনি কী ভাবে এবং কোথায় অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাবেন। ওঁকে মেরামতির বিলও দিতে বলা হয়েছিল।’’
কিন্তু আব্দুর তেমন করেননি বলেই অভিযোগ ওই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের। যদিও যুবকের সেজ দাদা শেখ আব্দুল খালিদের পাল্টা দাবি, ‘‘গাড়িটার সবই বেহাল হয়ে গিয়েছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের তরফেই ভাইকে অ্যাম্বুল্যান্সটি দিয়ে চালাতে বলা হয়। আমরা গরিব, তাই অল্প অল্প করে ভাই গাড়িটা সারাচ্ছিল।’’ জানা গিয়েছে, আব্দুরেরা চার ভাই। বড় দাদার কাপড়ের দোকান রয়েছে। তিনি ছাড়া বাকি সকলেই অ্যাম্বুল্যান্স চালান। খালিদের অ্যাম্বুল্যান্সটি মাঝেমধ্যে চালাত আব্দুর।
মঙ্গলবার ট্যাংরায় প্রৌঢ়কে পিষে দেওয়ার পরে মল্লিকবাজারে আর একটি গাড়িকে ধাক্কা মেরেছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি। সেই ঘটনায় গাড়িটি ও চালক আব্দুরকে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার এ কথা জানিয়ে খালিদ দাবি করেন, ‘‘মল্লিকবাজারে একটি গাড়িকে ধাক্কা মারার অভিযোগে ভাইকে আটক করে পার্ক স্ট্রিট থানা। গাড়িটিকেও হেফাজতে নেয়। রাত আড়াইটে নাগাদ আমি মহেশতলা থেকে বাইক চালিয়ে পার্ক স্ট্রিট থানায় এসে ভাই-সহ অ্যাম্বুল্যান্সটি ছাড়িয়ে নিয়ে যাই।’’
তবে ওই রাতে পরিবারের কেউ জানতে পারেননি, ট্যাংরায় এক প্রৌঢ়কে পিষে দিয়েছেন আব্দুর। বুধবার পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেফতার করার পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। খালিদ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে ভাই বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীকে আনতে যাচ্ছিল। সেই সময়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ঠিকই। কিন্তু কোনও মহিলার হাত ধরে টানার মতো কাজ ও করতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy