মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের অদূরে বিক্ষোভ সমাবেশে টেট চাকরিপ্রার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ পৌঁছে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায়। বুধবার দুপুরে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের অদূরে বিক্ষোভ শুরু করেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে পরীক্ষা দিয়েও ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পাননি তাঁরা। কত শূন্যপদ রয়েছে তা প্রকাশ করে দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের অদূরে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ পরিকল্পিতই ছিল। বুধবার সকাল থেকে কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের বাইরে ভিড় জমান বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু সেখানে পুলিশ মোতায়েন থাকায় স্টেশনের অন্য গেট দিয়ে বেরিয়ে কালীঘাট মন্দিরের কাছে পৌঁছন তাঁরা। তার পর হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তাতেই বসে পড়েন।
শুধু কালীঘাট নয়, মেট্রো স্টেশন থেকে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যান। এক দল যায় হাজরা মোড়ের দিকে। অন্য একটি দল ভবানীপুর থানার দিকেও যায়। কিন্তু সব জায়গা থেকেই পুলিশ তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেয়। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, সাদা খাতা জমা দিয়েও অনেকে চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা এত বছর আগে পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পাননি! তাঁদের দাবি, ‘আট বছর ফিরিয়ে দিতে হবে, চাকরি দিতে হবে।’ ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীদের আরও প্রশ্ন, কোন অধিকারে তাঁদের আট বছর নষ্ট করা হয়েছে? কেনই বা তাঁদের তাড়াতাড়ি চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে না? বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরাতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয়। এক চাকরিপ্রার্থী জানান, তাঁদের আটক করে টেনে-হিঁচড়ে প্রিজ়ন ভ্যানে উঠিয়েছে পুলিশ। এমনকি, রাস্তায় বাস বা ট্যাক্সি যা ফাঁকা পাওয়া গিয়েছে, সে সব গাড়িতে জোর করে বিক্ষোভকারীদের তুলে দিয়েছে পুলিশ। ধস্তাধস্তির সময় বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ অভিযোগ, পুলিশের জোর জবরদস্তিতে চোট পান বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন। পুলিশ তাঁদের সরাতে এলে বিক্ষোভকারীরা জানান, চাকরি না দিলে ওই ভাবেই রাস্তায় বসে থাকবেন তাঁরা। পুলিশ অবশ্য সে কথা মানেনি। তারা বিক্ষোভকারীদের এলাকা থেকে হটিয়ে দেয়।
বিক্ষোভস্থলের অদূরেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি। সেখানে কড়া নিরাপত্তা রয়েছে। সেই নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে কী করে বিক্ষোভকারীরা ওই এলাকায় এসে পৌঁছলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিক্ষোভকারীদের পাল্টা অভিযোগ, মহিলা মুখ্যমন্ত্রীই মহিলা পুলিশ দিয়ে তাঁদের জোর করে সরাচ্ছেন!
প্রসঙ্গত, ময়দানে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন টেট চাকরিপ্রার্থীরা। টানা ১৪৭ দিন ধরে ওই বিক্ষোভ চালাচ্ছেন তাঁরা। বুধবার সেখানে বসে চপ ভেজেছেন আন্দোলনকারীরা। ঝালমুড়িও বিক্রি করেছেন।
বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও সল্টলেকের করুণাময়ীতে আন্দোলনরত টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের তুলে দিয়েছিল পুলিশ। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাঁদের জোর করে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র ছেড়ে দিয়েছিল। টেট দুর্নীতি নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ অনেক দিন ধরেই জারি রয়েছে। গত বুধবারেও এক্সাইড মোড়ে বিক্ষোভরত এক চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর হাতে কামড়ে দিয়েছিলেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। পুলিশের পাল্টা দাবি, অভিযুক্ত মহিলা পুলিশকর্মীর হাতেও কামড়ানো হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy