শৌভিক দেবনাথ
টিউশন পড়তে যাচ্ছে বলে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেল কেষ্টপুরের বাসিন্দা এক ছাত্র। ঘটনার পরে পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও তার খোঁজ না মেলায় বুধবার সকালে বাগুইআটি থানার সামনে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে তুলে অবস্থান বিক্ষোভ করেন পরিবারের লোকজন। পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলেও রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি ওই ছাত্রের। পুলিশের দাবি, কোনও মোবাইল গেমের পাল্লায় পড়ে সে বাড়ি ছেড়েছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ছাত্রের নাম শৌভিক দেবনাথ। বিধাননগরের একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে সে। শৌভিকের বাবা তরঙ্গ দেবনাথ বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। পরিচারিকার কাজ করেন মা সুমিত্রা দেবনাথ। লকডাউনের পর থেকে তিনি আয়া সেন্টারের সূত্রে মুম্বইয়ে কাজ করছেন। শৌভিকের এক দিদিও রয়েছেন। বছর চব্বিশের সেই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দেড় বছরের সন্তানকে নিয়ে তিনি মা-বাবার কাছেই থাকেন।
তরঙ্গবাবুর দাবি, তাঁর ছেলে বেলেঘাটা এবং করুণাময়ী— দুই জায়গায় টিউশন পড়তে যেত। গত শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ টিউশনে যাচ্ছে বলেই সে বেরোয়। বিকেল পেরিয়ে গেলেও ভাই না ফেরায় শিক্ষককে ফোন করেন শৌভিকের দিদি। শিক্ষক জানান, শৌভিক ওই দিন পড়তেই যায়নি। সন্ধ্যার পরে তরঙ্গবাবুকে ফোনে বিষয়টি জানান তাঁর মেয়ে। তরঙ্গবাবুর কথায়, ‘‘নানা জায়গায় খুঁজেও ছেলের খোঁজ পাইনি। শুনি, দিদির ব্যাগ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে বেরিয়েছে। স্কুলের ব্যাগে নিয়ে যাবে বলে ওর আধার কার্ড ও ব্যক্তিগত নথি থাকে যে ফাইলে, সেটাও চেয়ে নিয়েছিল। রাতে বাগুইআটি থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করি।’’
তরঙ্গবাবু বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী খবর পেয়ে মুম্বই থেকে দ্রুত ফিরতে চান। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে গিয়ে দেখি, অ্যাকাউন্ট ফাঁকা। পাসবই আপডেট করিয়ে দেখি, আমার আর ওর মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে দফায় দফায় একাধিক লোকের ই-ওয়ালেটে প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং ছেলেই করত। আমরা কিছুই বুঝি না। ও মোবাইলে গেমও খেলত। সেখানেই টাকা লাগিয়েছে কি না, জানি না! এমন গেমে নানা টাস্ক করতে দেয়। সেই টাস্কের জন্যই ও বাড়ি ছেড়েছে কি না, বুঝতে পারছি না।’’
বাগুইআটি থানা সূত্রের খবর, ওই ই-ওয়ালেটগুলির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, টাকা পাঠানো হয়েছে ১ থেকে ৬ জুলাইয়ের মধ্যে। কিন্তু কেন টাকা পাঠানো হচ্ছে, লেনদেনের সময়ে তার উল্লেখ নেই। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ওই কিশোরের বাড়ির আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। তবে ওই কিশোর মোবাইল না নিয়ে যাওয়ায় খোঁজ পাওয়া কঠিন হচ্ছে। পুলিশ তার স্কুলেও গিয়েছে কথা বলতে। এই ঘটনায় গেমের হাতছানির পাশাপাশি পাচার চক্রেরও যোগ থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy